স্টেশনে প্রেমিকার অপেক্ষায় ২০ বছর!

সত্যিকারের প্রেমে পড়ে চণ্ডিদাস নাকি শুকনো পুকুরেই ১২ বছর ধরে বড়শি পেতে অপেক্ষা করেছেন  রজকিনীর জন্যে। ইউসুফের প্রেমের অপেক্ষায় থেকে থেকে জুলেখা হয়ে গেছেন থুড়থুড়ে বুড়ি। লাইলির প্রেমের টানে পথে পথে ঘুরে কায়েছ হয়েছেন মজনু বদ্ধ উন্মাদ। এমন সব প্রেম কাহিনীকে হার মানানোর আরেক কাহিনীর জন্ম দিয়েছেন তাইওয়ানের অহ জি।

৪৭ বছরের অহ জি গত ২০ বছর ধরে একটি রেলস্টেশনে, অপেক্ষা করছেন তার প্রেমিকার জন্য। রেলস্টেশনেই প্রেমিকার সঙ্গে তার দেখা হওয়ার কথা ছিল। কোনো বাঁধাই হার মানাতে পারেনি এই প্রেমিককে। এত কষ্টের ভেতর দিয়েও টানা দুই দশক ধরে তাইওয়ানের তাইনান রেলস্টেশনে প্রেমিকার অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে থাকছেন অহ জি। তাকিয়ে থাকেন  যাত্রীদের দিকে আর ভাবেন এই  বুঝি এল তার ভালোবাসা। তার প্রেমিকার এতদিনে বিয়ে হয়ে গেছে বা তিনি কোথাকার বাসিন্দা, তাও পরিষ্কার বলছেন না জি। শুধু অপেক্ষাই করে যাচ্ছেন।

স্টেশনে আসা-যাওয়া করা লোকজন প্রতিদিন অহ জিকে দেখেন, ঠিক এক জায়গাতেই দাঁড়িয়ে আছেন জি। প্রথম কয়েক বছর জি অপেক্ষা করতেন রেলস্টেশনের প্রবেশমুখের সামনে একটি সিঁড়ির ওপর। ইদানীং তিনি দাঁড়ান বহির্গমন পথের সামনে। প্রতিটি ট্রেন থেকে নেমে আসা যাত্রীদের দিকে তাকিয়ে থাকেন জি। চলার পথে মানুষও তাকিয়ে দেখেন অসহায় দাঁড়িয়ে থাকা লোকটিকে। অনাহারে খোলা আকাশের নিচে অপেক্ষারত জিকে। এত বছরে সবারই পরিচিত মুখ প্রেমিক জি। কেউ একটু খাবার দিয়ে যান। কেউ একটি পোশাক। প্রথম দিকে মাঝে মধ্যে পরিবারের কেউ এসে তাকে বুঝিয়ে-সুজিয়ে ফিরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেছেন, তবে তাতে রাজি হননি জি। বছর তিনেক আগে সমাজকর্মীরা তাকে ধরে নিয়ে ভর্তি করিয়েছিলেন একটি হাসপাতালে। সেখান থেকে তিন দিনের মাথায় পালিয়ে ঠিক আগের জায়গাতেই অবস্থান নিয়েছেন তিনি। ইদানীং জির ব্যাপারটি নিয়ে জড়িত হয়ে পড়েছে তাইনান শহর সমাজকল্যাণ কর্তৃপক্ষ। শহরের মেয়রও তাকে একদিন চার্চের ভোজসভায় নিয়ে যান।

সেখানে তার পরিবারের লোকজনকেও দাওয়াত দেওয়া হয়; কিন্তু কিছুতেই বুঝতে চান না জি। তার এক কথা, প্রেমিকার জন্য অপেক্ষা করে যাবেন।

গাধার বুদ্ধি

লোভী পিঁপড়া

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *