ভয়ঙ্কর সেই রাত

[সংবিধিবদ্ধ সতর্কীকরণঃ দূর্বল হার্টের অধিকারীরা এই গল্প থেকে দূরে থাকুন।] এসএসসি পাশ করে সবে কলেজে ভর্তি হয়েছি তখন। অজপাড়াগাঁ থেকে হঠাৎ করে শহরে এসে ঠিক মানিয়ে নিতে পারছিলাম না। জীবনে শহর দর্শন বলতে আধা গ্রাম-আধা শহর নড়াইল পর্যন্তই ছিলো সেই সময়। বিলের মাছকে অ্যাকুরিয়ামে জোর করে ভরে দেওয়া আর কী। অর্ধ-বার্ষিকী পরীক্ষা দিয়ে ছুটিতে গ্রামে ফেরার প্রস্তুতিতে ব্যস্ত। আহ… বলে একটা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছিলাম, আজো মনে আছে। বর্ষাকাল বরাবরই আমার প্রিয়। শহুরে বর্ষা না, গ্রামের কাঁদামাটিতে মাখা বর্ষা। আমাদের গ্রামটা একেবারেই নির্জন, আরসব গ্রাম থেকে একটু বেশিই। জঙ্গলে ঢাকা বলেই হয়তো রাতের বেলায় ভূতুড়ে একটা আবহ তৈরী হয়, এখনো। উন্নয়নের ছোঁয়া তখনো লাগেনি। বাস থেকে নেমে নৌকা পার হতে হতেই প্লান করলাম ঘোষদের পুকুরে মধ্যরাতে অভিযান চালাবো। এইকয়দিনে শহুরে আবহাওয়া আমাকে বুঝিয়ে ছেড়েছে ভূতপ্রেত স্রেফ ভুয়া জিনিস, অবচেতন মনের কল্পনাপ্রসূত ভয়মাত্র। নৌকা পার হয়েই পেয়ে গেলাম সেলিমকে, আমার ন্যাংটাকালের বন্ধু, ভ্যান চালায়। ওর ভ্যানে চড়ে বসলাম আর প্লানটা ওকে জানালাম।

‘শহরে যায়ে খুব বাহাদুর হয়ে গিছিস তাই না? দিনির বেলায় কেউ যাতি সাহস পায় না, আর তুই যাবি মদ্দিরাত্তিরি ওই ঘোষগে পুহুরি? মনি কাহারে [আমার বাবা] কতি হবে মনে হচ্ছে?’ বলে উৎসাহে ভাটা ফেলানোর চেষ্টা করলো। আমি আর কথা বাড়ালাম না। মনে মনে বললাম,’শালা সামছুর ছাওয়াল, ভাব নিচ্ছি নাহি দেহাই দিবানি, ধোয্য দর।’ এখন একমাত্র ভরসা পিসাতো ভাই ঠাণ্ডু। ও অবশ্য ভয় পেলেও ‘না’ উচ্চারণ করবেনা এই বিশ্বাস আমার ছিলো। গুমোট গরম পড়ায় বিকাল বেলায় মোল্লাদের বটতলায় বসে পূবডাঙ্গার বিলের ঠাণ্ডা হাওয়া খেতেখেতে ওকে প্রস্তাব করলাম অভিযানের বিষয়টা। মুখচোখ বাঁকিয়ে কিছুক্ষণ কীযেন চিন্তা করে বললো,’ভাইডি, তুই কি সত্যি সত্যি যাবি নাহি?’ মেজাজ টং করে বললাম,’ তালি কি তোরে মিত্যে কচ্চি? তোর সাথে ইয়ার্কি অরতিছি নাহি? কী কী জুগাড় অরতি হবে, অর।’ ঘোষদের পুকুরের ইতিহাস অনেক পুরানো। এখানে রাতে আজবসব ঘটনা ঘটে, ছোটবেলা থেকে শুনে এসেছি আজগুবি সব গল্প। রাতে, এমনকি দুপুরের পরও কেউ ভুলেও ওইপথে পা মাড়ায় না। অনেকেই বলে রাতে নাকি প্রেত-পিশাচে পুকুর থেকে তাঁজা মাছ ধরে কড়মড়িয়ে খায়। থমথমে রাতের নির্জনতা মাড়িয়ে সেই আওয়াজ প্রায়ই নাকি শোনা যায়।

এই-সেই নানান ধরণের ভয়ঙ্কর গল্প। পিশাচ ছাড়া এইপুকুরের মাছ কারো কপালে জোটে নি। হোস্টেলের বন্ধুদের এইসব গল্প বললে ‘হাহা’ করে হেসে উড়িয়ে দেয়। একদিন কেমেস্ট্রি ক্লাসে এই আলাপ ফাঁদিয়ে বসলো হোস্টেলের এক বন্ধু। কী অপমানটাই-না করেছিলেন মনোয়ার স্যার। ‘এই বাবা, বিজ্ঞানের ছাত্র হয়েও এইসব গুবলেট বিশ্বাস করো? দিনভর মলিকুলার থিওরি পড়ো আর রাতে ভূতের স্বপ্ন দেখো? লজ্জা লজ্জা… শেম টু ইউ বাবা, শেম টু ইউ…। শোন, এইসব গুবলেট জিনিস বিশ্বাস করবে না আর। দেখছোনা সবাই কীভাবে হাসিঠাট্টা করছে? এই মডার্ণ যুগে এসেও… ওহ নোহ… শেম টু ইউ বাবা, শেম টু ইউ… বিশ্বাস নাহলে একদিন রাতে গিয়ে নিজেই দেখে এসো। শুধু একটা কথা মাথায় রাখবা, ভয় পেলে চলবে না। ভয় পেয়েছতো হেরে গেছো অলৌকিক বিশ্বাসের কাছে। ভাবতে লজ্জা লাগছে, শেম টু ইউ বাবা, শেম টু ইউ…।’ কয়েকরাত ধরে মনের সাথে প্রচণ্ড যুদ্ধ করলাম। একটা কিছু করতেই হবে। কলেজে হাসিঠাট্টার ‘টপ নিউজ’ হয়ে গেছি আমি। লজ্জায় মাথা হেইট করে চলা শুরু হলো। নিজেই নিজেকে গালি দেই,’শেম টু ইউ ম্যান, শেম টু ইউ…। একবার ভাবি, ‘ধুর সেধে বিপদে যাওয়ার কী দরকার?’ আরেকবার ভাবি,’আমি বিজ্ঞানের ছাত্র, এইসব গুবলেটই যদি হয়, তবে আমাকেই ভুল প্রমাণ করতে হবে।’ ঠাণ্ডু ভয় পেলেও সাহস দেখিয়েছিল বেশ।

আর নাদেখিয়ে উপায়ও নেই, আমার চেয়ে বয়সে ঢেড় বড় বলে কথা। আমতা আমতা করে কয়েকবার অবশ্য জিজ্ঞাসা করেছে,’সত্যি যাবি নাহি?’ আমি ওকে সাহস দিলাম, বিজ্ঞানের গল্প শুনিয়ে বোঝালাম এগুলো স্রেফ ভাঁওতাবাজি। বিশ্বাস বিশ্বাস ভাব দেখালেও মনে হয় বিশ্বাস করেনি। সন্ধ্যার পর থেকে টিপটিপ বৃষ্টি শুরু হয়েছে। সবাই খেয়েদেয়ে তাড়াতাড়ি শুয়ে পড়েছে। লম্বা শক্ত কঞ্চির আগায় ৪ ইঞ্চি সাইজের বঁড়শী লাগিয়ে, একবাটি ময়দার আধার বানিয়ে আর কিছু চার [ মাছকে আকৃষ্ট করার জন্য খৈল দিয়ে তৈরী সুগন্ধী টোপ] নিয়ে তিন ব্যাটারির টর্চলাইটটা জ্বালিয়ে দশটা / সাড়ে দশটার দিকে চুপিচুপি বাড়ি থেকে বের হলাম আমরা। তখনো বৃষ্টি পড়ছে টিপটিপ। চারিদিকে অন্ধকার দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। দুইজনে দুইটা মানকচুর পাতা ছিড়ে নিলাম বিকল্প ছাতা হিসেবে। রাস্তা বেশ পিচ্ছিল ছিলো, পা টিপেটিপে এগিয়ে গেলাম দুইজন। ঘুটঘুটে অন্ধকারে ভয় চেপে বসাটা খুব স্বাভাবিক। টিপটিপ বৃষ্টির শব্দ ছাড়া আর কিছুই শোনা যাচ্ছে না। কোথাও কোন জনমানুষের সাড়া নেই। মনের মধ্যে নানা ধরণের সংশয় কাজ করা শুরু করলো। বারবার মনে হচ্ছিলো ফিরে যাই।

নিজেদের পায়ের আওয়াজ তখন দানবীয় মনে হচ্ছিলো। হঠাৎ হঠাত হালকা বাতাসে গাছের পাতা থেকে ঝরে পড়া বৃষ্টির শব্দ শুনে বুকের ভেতরটায় হীমশীতল একটা অনুভূতি বয়ে যাচ্ছিলো, শিরা-উপশিরায় একধরণের অদ্ভুত ছটফটানি শুরু হয়েছে। ভয় কাটানোর জন্য জোরেজোরে কথা বলা শুরু করলাম। ‘আরে কলিম শালা পলায়ে বিয়ে অরলো ক্যা?’ ‘আর কোস না ওই ছেমড়িডাও এট্টা …’ স্কুল মাঠের পাশেই সেলিমদের বাড়ি। দুইঘর মানুষ থাকে ওরা এখানে। সন্ধ্যার পর এইদিকটা যমপুর হয়ে যায়। স্কুল ঘরের পেছনে তালপুকুর, শুনেছি এই পুকুরে জ্যোৎস্নারাতে জীন-পরীরা নাচের আসর বসায়। আবার অনেকে বলে, স্নানের সময় এই পুকুর দিয়ে জমিদারের ছোটমেয়েকে পাতালপুরের দস্যুরা ধরে নিয়ে গেছিলো। জমিদার স্বপ্নে দেখেন একশো একটা বাচ্চার তাজা রক্ত আর মাথার খুলি দিলেই মেয়েকে ফিরে পাবেন তিনি। একদিনের মাথায় ছোটছোট অবুঝ বাচ্চাদের গলাকেটে ফেলে দেওয়া হয় পুকুরে। সেই শিশুগুলোর কান্নার করুণ চিৎকার নাকি রাতে অনেকেই শুনেছেন। খানিকটা সামনে বেলতলার পুকুর, অমাবস্যা রাতে এখানে নরবলী দেওয়া হতো একসময়। বলী হওয়া মানুষগুলোর প্রেতাত্মারা সন্ধ্যা নামলেই জেগে ওঠে ভয়ঙ্করসব রূপ ধরে, দাপিয়ে বেড়ায় পুকুরের চতুর্পাশ।

মাঠের উত্তর দিকে কয়েকশো বছরের পুরনো বটগাছ, পূর্বদিকে জঙ্গলঘেরা গণকবর, দক্ষিণ-পূর্বে খোলা মাঠ, পশ্চিমপাশের জঙ্গলের ভেতরেই ঘোষদের পুকুর। এগুলো মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে, শরীরে কাঁটা দিচ্ছে। ভয় কাটানোর জন্য ডাক দিলাম,’ওই শালার ছেলিম, ছামছুর ছাওয়াল, ঘুমোয় গিছিস নাহি?’ আসলে এমন একটা যায়গায় এই ঘুটঘুটে ঘোর অন্ধকারে গলা শুকিয়ে আসাটাই স্বাভাবিক। কপাল বেয়ে ঠোঁটে নেমে আসা জলে গলা ভিজিয়ে নিচ্ছি মাঝেমাঝে। শিরদাঁড়া বেয়ে এই ঘাম গড়িয়ে পড়ছে। ঠাণ্ডু এবার বেঁকে বসলো। বয়সে বড় হওয়ায় নিজের অসহায় ভাবটা লুকিয়ে বললো,’ভাইডি, চল ফিরে যাই, পাগলামি ছাড়ে দে।’ এতোখানি পথ আসার পর মাঠটুকু পার হয়ে জঙ্গলে ঢুকে গেলেই কাঙ্ক্ষিত সেই পুকুর। কিন্তু সাহস ফুরিয়ে আসছে, পা চলছে না, হাত-পা সমানে কাঁপতে শুরু করেছে, হৃৎপিণ্ডের ‘লাব-ডাব’ আওয়াজ স্পষ্ট শুনতে পাচ্ছি, ক্রমশই আতঙ্ক বেড়ে চলেছে। সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য মাথা কাজ করছিলো না। কানে ভেসে আসছে,’শেম টু ইউ বাবা, শেম টু ইউ…।’ মাঠের মাঝে দুইজনে ঠাই দাঁড়িয়ে আছি। ভয় এতোটাই জেকে বসেছে যে সামনে পিছনে যাওয়ার সাহসটুকু, শরীরের শেষ শক্তিটুকুও হারিয়ে ফেলেছি। গলাদিয়ে আওয়াজ বের হচ্ছে না। চিৎকার করে কাঁদতে ইচ্ছে হচ্ছে।

নিজের হতবুদ্ধিতার জন্য নিজেকে অভিশাপ দিয়ে যাচ্ছি। কতক্ষণ ছিলাম জানি না। হঠাত চোখে ঝাঁঝালো আলো পড়লো। ভয়ঙ্কর আতঙ্কে বুকটা কেঁপে ওঠে। নিমেষেই আবার মিলিয়ে গেলো আলোটা। ‘কিডা রে? এই কারা তুরা?’ শুনে বুকের উপর থেকে পাথর নেমে যায়। সেলিমের গলার আওয়াজ। ফ্যাসফ্যাস আওয়াজে ঠাণ্ডু বলল,’আমরা।’ এই ভয়ঙ্কর সময়ে তৃতীয় একজন মানুষের উপস্থিতি সবকিছু পাল্টে দিলো। হঠাত করেই সাহস সহস্রগুণ বেড়ে গেলো। বুকে থুঃথুঃ দিলাম। কাদার মধ্য দিয়ে চপ’চপ’ আওয়াজ তুলে সেলিম এগিয়ে এলো। নিজেকে তখন খুব হালকা মনে হচ্ছিলো। ফুরফুরে একমুঠো আবেশী হাওয়া ছুঁয়ে গেলো সারা শরীরজুড়ে। ঠাণ্ডুর অনুভূতি কী ছিলো জানার প্রয়োজন মনে করিনি তখন। ‘কীরে বাহাদূরের দল, এইরাম যদি মতলব থাকপে তালি আমারে কোস নি কেন?’ আমি এবার আরো সাহস পেলাম। অবচেতন মনে একটা ভয় কাজ করছিলো, শুনেছি পিশাচরা বন্ধুর ছদ্মবেশে আসে। ওর পায়ের দিকে তাকিয়ে নিশ্চিত হলাম ও আমাদের সেলিম, হ্যাঁ আমাদের বন্ধু সেলিম।

ছোটবেলা থেকে শুনতে শুনতে পিশাচদের পা উল্টো থাকে,মাটির কিছুটা উপরে থাকে। তিনবারের বেশি কথা বলে না। ওর পা সোজা, মাটির সাথেই আছে। তাছাড়া কথা বলতে বলতে, কাদায় পায়ের চপ’চপ’ আওয়াজ করতে করতেইতো এলো। আর পিশাচদের আবার টর্চলাইট থাকে নাকি? ধুর, নিজেকে বোকা মনে হলো। ‘কীরে কথা কোস না ক্যা?’ আবার হাঁক ছাড়লো। ‘তো…তোরে ডাহিছি না? জো…জোরেইতো ডাকিলাম, শুনিস নি?’ ঠাণ্ডু উত্তর দিলো। এরপর আর সিদ্ধান্ত নিতে মস্তিষ্কযন্ত্র দেরী করলো না। মাছ ধরবোই আজ। তিনজনে জঙ্গলে ঢুকে গেলাম। এবার সত্যিই ভয়টা নেই হয়ে গেছে। সেলিমকে সাক্ষাৎ সাহসের দেবতা মনে হচ্ছিলো তখন। ওর সাহসী কালো চেহারাটা ঘুটঘুটে অন্ধকারেও দেখা যাচ্ছিলো। লিকলিকে দেহটাকেও তখন হারকিউলিসের পেশীবহুল লাগছিলো। কিন্তু তখনো কী বুঝেছিলাম কী বিপদের দিকে পা বাড়াচ্ছি আমরা… সেলিমের সাহসে আসলে আমরা আবেশিত ছিলাম তখন। চার ফেললাম, বঁড়শি ফেললাম, মাছ টোপ গিলছে আর আমরা মাছ তুলেই যাচ্ছি। তিন-চারটা বড় মাছ উঠলো কিছুক্ষণের মধ্যে। সেলিম বললো,’আজকে মাছ ওঠপে অনেক, মাছগুলো কনে থোব ক’দিনি?’ তাইতো, কী করা যায়? সেলিমই উপায় বলে দিলো,’তুরা ধর, আর আমি দোড় দিয়ে বাড়ি যায়ে ড্যাগের [বিশাল সাইজের মাটির কলসি]

মদ্দি জিয়োয় থুয়ে আসি। পানি দিয়ে থুলি জ্যান্ত থাকপেনে।’ আমি বললাম’ হয়, তালি তাই অর।’ আমরা একের পর এক মাছ ধরে যাচ্ছি, আর সেলিম দৌড়ে গিয়ে রেখে আসছে। এরকম কতবার যে হয়েছে তার হিসাব নেই। মাছ ধরার মহানন্দ পেয়ে বসেছে আমাদের। কিন্তু… শেষের দিকে অজানা কারণে অনেকক্ষণ পরপর ফিরছিলো ও। রাতও যে আরো গভীর হয়ে আসছে একটু একটু করে বুঝতে পারছিলাম। বৃষ্টির জোর বেড়ে গেছে। বলা যায় ঝুম বৃষ্টি নেমেছে। জঙ্গলের মাঝে পুকুরের জলে বৃষ্টির ঝুমঝুমানি শব্দ ছাপিয়ে কয়েকবার মৃদু ‘কড়কড়’ আওয়াজ শুনতে পেলাম। হ্যাঁ, ভুল নয়, দু’জনেই…। বিড়ালে মাছের কাঁটা চিবোলে যেমন শব্দ হয়, ঠিক তেমনটা। নিমেষেই মিশে গেলো সব আনন্দ, সবটুকু সাহস মিলিয়ে গেলো। ধপ করে নিভে গেলো মহানন্দের ক্ষণটুকু। মিইয়ে গেলো খুশির আবেশ। সেলিমও আর আসছে না। শব্দ বাড়ছেই… ঠাণ্ডু ফিসফিসিয়ে আমাকে বললো,’সব ফেলে থুয়ে দোড় মার।’ বলেই ও উদ্ভ্রান্তের মতো জঙ্গলের ঝোপঝাড় ভেঙে দৌড় দিলো, পিছেপিছে আমিও। মাঠের মধ্যে কয়েকবার পড়ে গিয়েও ফের উঠে দৌড়। ‘কড়কড়’ শব্দটা ক্রমশ ভয়ঙ্কর হতে লাগলো। একটা হিংস্র ভয়ঙ্কর কিছু ছুটে আসছে পিছুপিছু…দিকভ্রান্তের মতো দৌড়াচ্ছি… আরেকটু… আর খানিকটা গেলেই বাড়ি পৌঁছে যাবো… শব্দ বাড়ছেই, চারপাশটা আরো অন্ধকার হয়ে আসছে…অন্ধকার থেকে গভীর অন্ধকার… [সমাপ্ত]

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো পড়তে পারেন...

গরিবের কথা

কোন এক গ্রামে একজন গরিব ছিল। তার কোন আত্মীয় স্বজন ছিল না। সে প্রত্যেক দিন…

ঋণ মুক্তি

মহান্তিপুরে গোপাল নামে এক গরিব লোক নিরুপায় হয়ে ভিক্ষে করে দিন কাটাত। লোকটা এমন হতভাগা…

প্রতিজ্ঞা

প্রাচীনকালে মালবদেশ ও পঞ্চাল দেশের মধ্যে একবার প্রচন্ড বিরোধিতা দেখা দিল। মালবদেশের রাজার নাম ছিল…