সূরা ইয়াছিনের ফজিলতে সামান্য খাদ্য দ্রব্যে অসাধারণ বরকতের ঘটনা

একবার এক গ্রীষ্মকালে তাবলীগী জামাতের সাথে এক পাহাড় থেকে অন্য পাহাড়ের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হলাম। আমরা পায়ে হেঁটে সফর করছিলাম। দীর্ঘ পথ। নিজের প্রয়োজনীয় জিনিস মাথায় নিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলাম। তখন ছিল রমজান মাস। চাল-আটা ইত্যাদি খাদ্য সামগ্রী কিনিনি ভাবলাম যেখানে যাবো সে জায়াগায় কিনে নেব।

দুপুরে নতুন পাহাড়ে পৌঁছলাম। সেখানে ছিল পাঁচটি পরিবার এবং একটি মসজিদ। খাবার রান্নার দায়িত্ব ছিল আমার উপর। রেশন চেক করে দেখা গেল একজনের খাবারের উপযোগী চাল এবং এক ছটাকের মতো ডাল রয়েছে।

সেখানে কোন দোকান নেই। লোকেরা জানালো আপনারা যে পাহাড়ী এলাকা থেকে সকালে রওয়ানা হয়ে এসেছেন সেখানেই দোকান আছে। এখানের লোকেরা সেখান থেকেই খাদ্যসামগ্রী কিনে আনে।

আছরের সময় চারজন লোক এলেন। তারা আমাদের রাত্রী যাপনের ইচ্ছা প্রকাশ করলেন। নবাগত ৪জনসহ জামাতের লোকসংখ্যা দাঁড়ালো পনের জন। এদের ইফতারি, সন্ধ্যার খাবার, শেষ রাতের সেহরী ব্যবস্থা করতে হবে। আমি অস্থির হয়ে গেলাম। আমীর সাহেবকে অস্থিরতার কথা জানালাম।

তিনি রান্নার দায়িত্ব নিজে গ্রহণ করলেন। আমাকে এবং অন্য একজনকে জঙ্গলে পাঠালেন কিছু জংলী ফল পাওয়া যায় কি না দেখে আসার জন্য। আমরা কাছাকাছি জঙ্গলে গিয়ে কিছু বন্য ফল এবং কয়েকটি জয়তুন কুড়িয়ে আনলাম।

ফিরে আসার পর আমীর সাহেব আমাকে বললেন, আমি যা করছি আপনি দেখতে থাকবেন কোন কথা জিজ্ঞেস করবেন না। আমীর সাহেব দু’টি বড় পাতিলে পানি দিয়ে চুলোয়  বসালেন। এক পাতিলে দু’ ছটাক চাল অন্য পাতিলের এক  ছটাক ডাল দিলেন এবং কি যেন পাঠ করতে লাগলেন।

খাবার রান্না হচ্ছিল। আধ ঘন্টা পর খাবার রান্না হলো। ১৫ জন সন্ধ্যায় আহার করলাম ছেহরীতেও তৃপ্তির সাথে খেলাম। ফজরের পর আমি ডেকচির ঢাকনা খুলে দেখলাম উভয় পাতিলে কিছু খাবার অবশিষ্ট রয়েছে। আমীর সাহেব জানালেন আপনারা কিতাবে নিশ্চয়ই পড়েছেন যেখানে খাবার কম থাকবে সেখানে সূরা ইয়াছিন পাঠ করলে খাবারে বরকত হয়। আজ আপনারা সেই বরকতের প্রমাণ প্রত্যক্ষ করছেন।

You may also like...

দুঃখিত, কপি করবেন না।