সুখের সন্ধানে ——

এক লোকের বউয়ের সাথে খুব ঝগড়াঝাটি হতো। বউটি ছিলো ভীষণ ঝগড়াটে। কোনোদিন সে তার স্বামীকে সুখে থাকতে দিতো না। একদিন সেই ভদ্রলোক কোন উপায় না দেখে কিছু পয়সা ও জামাকাপড় পোঁটলায় বেঁধে কোথাও চলে যাওয়ার জন্য মনস্থ করে রাস্তায় বেরিয়ে পড়লো। নাসিরুদ্দিন সেই লোকটিকে মুখ ভার করে রাস্তার ধারে এমনভাবে বসে থাকতে দেখে প্রশ্ন করলেন, “তোমার কী হয়েছে? কেন তুমি এমনভাবে রাস্তার ধারে বসে আছো?”

লোকটি বললো, “জীবন একেবারে বিষের মত হয়ে গেছে আমার স্ত্রীর জন্য মোল্লা সাহেব! হাতে কিছু পয়সা আছে বটে কিন্তু মনে সুখ নেই। তাই দেশে দেশে ঘুরতে বেরিয়েছি। যেখানে কোন সুখের সন্ধান পাব, সেখানেই থেকে যাবো।” লোকটির পাশে তার পোঁটলায় টাকা-কড়ি এবং অন্যান্য জিনিসপত্র রাখা ছিলো। তার কথা শেষ হতে না হতেই নাসিরুদ্দিন সেই বোঁচকাটা নিয়ে দৌড়ে পালাতে লাগলেন। মোল্লাকে পোঁটলাটা নিয়ে পালিয়ে যেতে দেখে লোকটিও তার পেছনে প্রাণপণ দৌড়াতে লাগলো। কিন্তু মোল্লা খুব দ্রুত দৌড়াতে পারতেন এবং বুদ্ধিও ছিলো— এমন অবস্থায় নাসিরুদ্দিনকে ধরে কার সাধ্য! দেখতে দেখতে তিনি রাস্তা ছেড়ে জঙ্গলে ঢুকে হাওয়া হয়ে গেলেন। এভাবে লোকটিকে ধোঁকা দিয়ে তিনি আবার সেই রাস্তায় ফিরে পোঁটলাটা রাস্তার মাঝখানে রেখে একটা গাছের আড়ালে লুকিয়ে রইলেন।

এদিকে লোকটিও কিছুক্ষণ পরে সেখানে এসে হাজির। তাকে এখন আগের চেয়েও বেশি দুঃখিত দেখাচ্ছিল। কিন্তু রাস্তায় তার পোঁটলাটি পড়ে আছে দেখে মহা আনন্দে চিৎকার করে পোঁটলার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়লো। এতক্ষণে সে যেন প্রাণ ফিরে পেলো। গাছের আড়াল থেকে নাসিরুদ্দিন বেরিয়ে এসে বললেন, “দুঃখীকে সুখের সন্ধান দেয়ার এও একটা উপায় দেখতে পেলাম, কী বলো ভাইয়া?” এই বলে মোল্লা সাহেব লোকটির দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে চলে গেলেন।

–সংগৃহীত

ভূতের গল্প

শেষ রাতের ট্রেন!!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *