সিডনী থেকে–২য় পর্ব- এম, এ, জলিল

গল্পের শেষ অংশ পড়তে এখানে ক্লিক করুন।

যেই জায়গায় ওরা বসলো তার ১৫০/২০০ গজ দক্ষিনে কবরস্থান। পূর্বে হিন্দু গ্রাম শুভরিয়া, পশ্চিমে আনুমানিক ৫০/৬০ গজ দূরত্বে বিরান ভিটা, অসংখ্য গাছ-গাছরা আর জঙ্গলে পরিপূর্ণ যা লেংরির ভিটা নামে গ্রামে পরিচিত। সবার ধারণা এখানে ভূতের বসবাস। সন্ধ্যাতো দুরের কথা দুপুরেও এই পথে কেউ পা বাড়ায় না। ওদের বসার জায়গা থেকে বাবু মিয়ার বাড়ীর পুকুর আনুমানিক ৪০/৪৫ গজ দূরত্বের মধ্যে।

অন্ধকার রাত, ওরা রাত আনুমানিক ১২টার দিকে পৌঁছে গেল মাছ ধরতে। মাছ ধরার পদ্ধতি লম্বা একটি জাল এমনভাবে পাতা থাকবে যাতে মাছ প্রবেশ করলে আর বের“তে না পারে। যা করতে হয় মাঝে মাঝে মাছ জাল থেকে তুলতে হয়। যাতে করে ঘুমিয়ে পরলে আশ পাশ থেকে শিয়াল এসে মাছ না খেতে পারে।

যারা মাছ ধরতে বসেছে তাদের বয়স প্রায় সকলেরই ১৭/১৯ এর মধ্যে। এ ধরনের আয়োজনে সিগারেট থাকাটা যেন অনিবার্য্য। কারণ বাড়ী থেকে বাইরে থাকায় সিগারেট খাওয়ার এটা সুবর্ণ সুযোগ, তাছাড়া ধারনা-আগুনের সামনে ভূত আসতে পারে না। রাতে যাতে ঘুমও হয় আবার মাছও ধরা যায় (কলাবেচা আর রথ দেখার মত অবস্থা) এই ব্যবস্থাপনায় সিদ্ধান্ত — হলো একজন জেগে থাকবে বাকিরা ঘুমাবে, এই ভাবে পালাক্রমে মাছ ধরা আর ঘুমানো হবে। সাথে মাদুর রয়েছে। মাথার উপর খোলা আকাশ। কিছুক্ষণ একসঙ্গে আড্ডা দেওয়ার পর একজন বাদে বাকীরা সবাই ঘুমিয়ে পড়লো। অন্ধকার রাত ক্রমশ গভীর থেকে গভীর হতে লাগলো। পালাক্রমে জেগে থাকার পালা এবার আক্তারের (আক্তার অত্যন্ত — ভীতু প্রকৃতির)। এছাড়াও দলের মধ্যে মনির ও মতিন উভয়েও যথেষ্ট ভীতু। সাহস রয়েছে কিছুটা রাকিব ও কুটির । রাত প্রায় আড়াইটা। আক্তার জেগে আছে, বাকিরা ঘুমিয়ে। আশে পাশে মাছের দাপাদাপি, বিরান ভিটা আর করবস্থান থেকে শিয়ালের ডাকাডাকি যেন বেড়ে গেল। পাশের গ্রাম থেকে হিন্দুদের পুজার কাশ ও ঢুলের শব্দে পরিবেশ ক্রমশ ভারী হয়ে উঠেছে। এরই মধ্যে আক্তারের মনোজগতে ভূতের আনাগুনা শুর“ হয়ে গেছে। অনিচ্ছা সত্বেও একাধিক ফাঁসির মারার ঘটনা আক্তারের মনে এসে ভীর জমাতে শুর“ করলো। মাঝে মাঝে বিরান ভিটা থেকে পাখির ডানা ঝাপটানো ও কিচিরমিচির শব্দকেও আক্তার মনে মনে ভূতের আগমনের পূর্বাভাস মনে করতে শুর“ করেছে। ভয়ে ভয়ে চারিদিকে তাকাচ্ছে । এক পর্যায়ে ভূতের নানাবিধ চিন্তা করতে করতে যখন বাবু মিয়ার মজা পুকুরের দিকে তাকিয়েছে অমনি অঘটন। ঘটে গেল ভৌতিক কান্ড। গলা পানির সেই পুকুরের মাঝখান থেকে বিশাল এক আগুনের কুন্ডলী উপর দিকে উঠে আকাশে মিলিয়ে গেল একই সংগে পুকুর পাড়ের গাছ থেকে কি যেন উড়ে গেল। আক্তার কোনমতে উচ্চারণ করলো- লা ইলাহা ইল্লালাহু মুহাম্মাদুর রাসুল্লাহ। অন্যদের ডেকে উঠানোর মত অবস্থা না থাকলে কোনমতে অন্যদের জাগিয়ে ঘটনা বুঝানোর চেষ্টা করলো। অন্যরা বিষয়টির পাত্তা না দিয়ে সকলে একসঙ্গে বসে থাকার সিদ্ধান্ত — নিল। বসতে বসতে সকলে যখন ক্লান্ত — এক পর্যায় এবার আবারো মজাপুকুরের মাঝখানে আগুনের কুন্ডলী দেখতে পেলো। আগুনের কুন্ডলী চারি দিক আলোকিত করে আকাশে মিলিয়ে গেল। এবার সকলে বুঝতে পারলো ব্যাপারটা ভৌতিক। ওরা হারিয়ে ফেললো সম¯— মনোবল।

গল্পের শেষ অংশ পড়তে এখানে ক্লিক করুন।

"আলোর পথ"-এ প্রকাশিত গল্পসমূহ ও লেখনী মূলত পাঠক, শুভানুধ্যায়ী এবং সম্মানিত অবদানকারীদের কাছ থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। এই কনটেন্টগুলোর উপর আমরা কোনো মেধাসত্ত্ব (copyright) দাবি করি না। যদি কোনো গল্প, ছবি বা তথ্যের কপিরাইট সংক্রান্ত বিষয়ে আপনার প্রশ্ন, সংশয় বা আপত্তি থাকে, তাহলে অনুগ্রহ করে আমাদের যোগাযোগ পৃষ্ঠায় যোগাযোগ করুন। আমরা যথাযথ আইনানুগ পদ্ধতিতে বিষয়টি পর্যালোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

দুঃখিত!