একবার এক ইঁদুর লক্ষ্য করল যে বাড়িতে ইঁদুর মারার ফাঁদ পাতা রয়েছে। সে খুবই ভয় পেল। ফাঁদটি অকেজো করার জন্য সে ওই বাড়িতে থাকা মুরগির সাহায্য চাইল।
মুরগি ঘটনা শুনে জবাব দিল—“ফাঁদটি আমার কোনো ক্ষতি করতে পারবে না, অতএব আমি এখানে কোনো সাহায্য করতে পারব না।”
মুরগির কাছ থেকে এই উত্তর শুনে ইঁদুর খুব দুঃখিত হল এবং ছাগলের কাছে গিয়ে সাহায্য চাইল। ছাগল ফাঁদের কথা শুনে বলল—“ওই ফাঁদ বড়দের জন্য নয়। আমি এখানে তোমাকে সাহায্য করতে পারব না।”
ইঁদুর ছাগলের কাছ থেকে একই উত্তর শুনে দুঃখিত হয়ে গরুর কাছে এলো। সব কথা শুনে গরু বলল—“ইঁদুরের ফাঁদ আমার মতো বড় প্রাণীর কোনো ক্ষতিই করতে পারবে না। যা আমার কোনো ক্ষতি করতে পারবে না, তাতে আমি সাহায্য করতে পারব না।”
ইঁদুর শেষ পর্যন্ত নিরাশ হয়ে তার ঘরে ফিরে এলো।
রাতের বেলা বাড়ির কর্ত্রী অন্ধকারের ভিতর বুঝতে পারলেন যে ফাঁদে কিছু একটা ধরা পড়েছে। অন্ধকারে ফাঁদের কাছে হাত দিতেই উনি হাতে কামড় খেলেন এবং দেখলেন ফাঁদে ইঁদুরের বদলে সাপ ধরা পড়েছে। তার চিৎকারে কর্তার ঘুম ভাঙল।
তাড়াতাড়ি ডাক্তার ডাকা হল। চিকিৎসা শুরু হয়ে গেল। কিন্তু অবস্থা মোটেই ভালো ছিল না। পথ্য হিসেবে ডাক্তার মুরগির সূপ খাওয়াতে বললেন। সূপের জন্য কর্তা মুরগিকে জবাই করে দিল।
অবস্থা আস্তে আস্তে খারাপ হতে লাগলো। দূরদূরান্ত থেকে আরও অনেকে আত্মীয় স্বজন আসতে লাগলো। বাধ্য হয়ে কর্তা ছাগলকে জবাই করলেন তাদের আপ্যায়ন করার জন্য। আরও ভালো চিকিৎসার জন্য অনেক টাকার দরকার হতে লাগলো। অবশেষে বাড়ির কর্তা তাদের গরুটিকে কসাইখানায় বিক্রি করে দিল।
একসময় বাড়ির কর্ত্রী সুস্থ হয়ে উঠলেন। আর এই সমস্ত কিছু ইঁদুরটি তার ছোট্ট ঘর থেকে পর্যবেক্ষণ করল।
শিক্ষণীয় বিষয়: কেউ বিপদে সাহায্য চাইলে তাকে সাহায্য করা উচিত, হোক সেই বিপদ আমাকে স্পর্শ করুক বা না করুক। বিপদগ্রস্থকে সাহায্য করা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব।
"আলোর পথ"-এ প্রকাশিত গল্পসমূহ ও লেখনী মূলত পাঠক, শুভাকাংখী এবং সম্মানিত আবেদনকারীদের কাছ থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। এই কনটেন্টগুলোর উপর আমরা কোনো মেধাসত্ত্ব (copyright) দাবি করি না। যদি কোনো গল্প, ছবি বা তথ্যের কপিরাইট সংক্রান্ত বিষয়ে আপনার প্রশ্ন, সংশয় বা আপত্তি থাকে, তাহলে অনুগ্রহ করে আমাদের যোগাযোগ পৃষ্ঠায় যোগাযোগ করুন। আমরা যথাযথ আইনানুগ পদ্ধতিতে বিষয়টি পর্যালোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।