সামুদ জাতির নবী সালেহ (আঃ)-২য় পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক করুন
“তোমার উপর কেউ যাদু করেছে। নইলে তুমি তো আমাদেরই মতো একজন মানুষ। হ্যাঁ তবে তুমি যদি সত্য নবী হয়ে থাকো, তাহলে কোন নিদর্শন দেখাও।” (সূরা ২৬ আশ-শোয়ারা, আয়াত ১৫৩- ১৫৪)
কেউ কেউ বলেছেন, এ কথা বলে তারা একটি বড় পাথর খণ্ডের প্রতি ইঙ্গিত করে বললো- এই পাথরের ভেতর থেকে যদি গাভীন উটনী বের করে আনতে পারো, তবে আমরা তোমার প্রতি ঈমান আনবো এবং তোমার আনুগত্য করবো। তারা মনে করেছিলো, তাঁদের এ দাবী পূরন করা হজরত সালেহ (আঃ) এর জন্যে অসম্ভব। তারপর কি হলো? তারপর হজরত সালেহ তাঁদেরকে নিদর্শন দেখানোর জন্যে আল্লাহর কাছে দোয়া করলেন। তাঁর বুক ভরা আশা ছিলো, নিদর্শন দেখালে হয়তো তারা ঈমান আনবে।
আল্লাহ বললেন- “হে সালেহ, আমি উটনী পাঠাচ্ছি ঠিকই। তবে এই উটনী হবে তাঁদের জন্যে চুড়ান্ত পরীক্ষা স্বরূপ। তুমি স্থির থাকো আর তাঁদেরকে বলে দাওঃ “কূপের পানি পান করার জন্যে তাঁদের মাঝে পালা ভাগ করে দেয়া হয়েছে। অর্থাৎ একদিন পুরো পানি পান করবে সেই উটনী আর একদিন পান করবে তাঁর সবাই আর তাঁদের পশুরা।” ৩ (সূরা ২৬ আশ-শোয়ারা, আয়াত ১৫৫)
আল্লাহর নিদর্শনের উটনী
ব্যাস, আল্লাহর নির্দেশে সমস্ত মানুষের সামনে পাথর থেকে উটনী বেরিয়ে এলো। হজরত সালেহ এবার উটনীর ব্যাপারে মহান আল্লাহর ফরমান তাঁদের জানিয়ে দিলেন। একটি ছোট্ট ভাষন তিনি তাঁদের সামনে পেশ করলেন –
“হে আমার জাতির ভাইয়েরা, সত্যিই আল্লাহ ছাড়া তোমাদের আর কোন ইলাহ নাই। সুতরাং তোমরা কেবল তাঁরই হুকুম পালন করো। দেখো তোমাদের প্রভূর পক্ষ থেকে তোমাদের সামনে সুস্পষ্ট প্রমান এসে পড়েছে। এটি আল্লাহর উটনী। এটি তোমাদের জন্যে চুড়ান্ত নিদর্শন। সুতরাং একে স্বাধীনভাবে ছেড়ে দাও। আল্লাহর যমীনে সে মুক্তভাবে চরে বেড়াবে। কেউ তার বিন্দুমাত্র ক্ষতি করার চেষ্টা করো না। তাহলে চরম পীড়াদায়ক শাস্তি তোমাদের গ্রাস করে নেবে। তোমরা সে সময়টার কথা স্মরণ করো, যখন মহান আল্লাহ আ’দ জাতির উপর তোমাদেরকে স্থলাভিষিক্ত করেন এবং এমনভাবে এ ভূখণ্ডে তোমাদের প্রতিষ্ঠিত করেন যে, তোমরা মুক্ত ময়দানে প্রসাদ নির্মাণ করছো আর পাহাড় কেটে বিলাস গ্রহ করছো। সুতরাং মহান আল্লাহর অনুগ্রহকে স্মরণ করো। দেশে বিপর্যয় সৃষ্টিকারীদের মতো সীমালঙ্ঘন করোনা।” (সূরা ৭ আল আরাফ, আয়াত ৭৩-৭৪)
জাতি বিভক্ত হয়ে গেলো দুইভাগে
মহান নবী হজরত সালেহ (আঃ) এর আহবানে সত্য উপলব্ধি করতে পেরে জাতির কিছু লোক ঈমান আনলো। আল্লাহর পথে এলো। নবীর সাথী হলো। তবে এদের সংখ্যা খুবই কম। কিন্তু জাতির নেতারা এবং তাঁদের অধিকাংশ অনুসারী ঈমান গ্রহন করলো না। এই হঠকারী নেতারা ঐ নির্যাতিত মুমিনদের লক্ষ্য করে বললো – ‘তোমরা কি সত্যি জানো যে, সালেহ তাঁর প্রভুর রাসুল?’ (সূরা ৭ আল আরাফ, আয়াত ৭৫)
মুমিনরা বললেন –‘আমরা অবশ্যই জানতে পেরেছি এবং তাঁর প্রতি ঈমান এনেছি।’ (সূরা ৭ আল আরাফ, আয়াত ৭৫)
অহংকারী নেতারা বললো- ‘তোমরা যে বিষয়ের প্রতি ঈমান এনেছ, আমরা তা মানিনা।’ (সূরা ৭ আল আরাফ, আয়াত ৭৬)
সামুদ জাতির নবী সালেহ (আঃ)-৪র্থ পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক করুন
"আলোর পথ"-এ প্রকাশিত গল্পসমূহ ও লেখনী মূলত পাঠক, শুভাকাংখী এবং সম্মানিত আবেদনকারীদের কাছ থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। এই কনটেন্টগুলোর উপর আমরা কোনো মেধাসত্ত্ব (copyright) দাবি করি না। যদি কোনো গল্প, ছবি বা তথ্যের কপিরাইট সংক্রান্ত বিষয়ে আপনার প্রশ্ন, সংশয় বা আপত্তি থাকে, তাহলে অনুগ্রহ করে আমাদের যোগাযোগ পৃষ্ঠায় যোগাযোগ করুন। আমরা যথাযথ আইনানুগ পদ্ধতিতে বিষয়টি পর্যালোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।