
একদিন এক দর্শনের শিক্ষক ক্লাসে এলেন হাতে কিছু জিনিস নিয়ে। তিনি সেগুলো টেবিলের ওপর রাখলেন এবং ক্লাস শুরু করলেন।
প্রথমে তিনি একটি বড় কাঁচের জার নিলেন এবং সেটি বড় বড় পাথর দিয়ে ভরতে শুরু করলেন। যখন জারটি ভরে গেল, তিনি ছাত্রদের জিজ্ঞাসা করলেন, “জারটি কি পূর্ণ?”
ছাত্ররা উত্তর দিল, “হ্যাঁ।”
এরপর তিনি কিছু নুড়ি পাথর নিলেন এবং জারে ঢাললেন। হালকা করে ঝাঁকাতেই নুড়ি পাথরগুলো বড় পাথরগুলোর ফাঁকফোকরে জায়গা করে নিলো।
তিনি আবার ছাত্রদের জিজ্ঞাসা করলেন, “এবার কি জারটি পূর্ণ?”
ছাত্ররা এবারও বলল, “হ্যাঁ।”
এরপর শিক্ষক এক বাক্স বালি নিয়ে জারটিতে ঢেলে দিলেন। বালিগুলো জারের ছোট ছোট ফাঁক গুলো পূরণ করে দিল।
তিনি আবারও প্রশ্ন করলেন, “এখন কি জারটি পুরোপুরি পূর্ণ?”
ছাত্ররা একসঙ্গে বলল, “হ্যাঁ!”
তখন শিক্ষক বললেন,
“এই জারটি হলো তোমাদের জীবন। বড় পাথরগুলো হলো জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জিনিস—তোমার পরিবার, জীবনসঙ্গী, স্বাস্থ্য, বাচ্চারা। যদি জীবন থেকে সবকিছু হারিয়ে যায় কিন্তু এগুলো থাকে, তাহলেও তোমার জীবন পূর্ণ থাকবে।
নুড়ি পাথরগুলো হলো জীবনের অন্যান্য প্রয়োজনীয় বিষয়—তোমার চাকরি, বাড়ি, সম্পদ।
আর বালি হলো জীবনের ছোটখাটো বিষয়গুলো, যেগুলোর খুব বেশি গুরুত্ব নেই।
যদি তুমি প্রথমে জারটি বালি দিয়ে ভরো, তাহলে নুড়ি পাথর ও বড় পাথর রাখার জায়গা থাকবে না। একইভাবে, যদি তুমি তোমার সময় ও শক্তি ছোট ছোট বিষয় নিয়ে ব্যয় করো, তাহলে জীবনের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোর জন্য কোনো জায়গা থাকবে না।
তাই প্রথমে তোমার পরিবার, ভালোবাসার মানুষদের সময় দাও। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোর যত্ন নাও। এরপর অন্যকিছু নিয়ে ভাবো। কারণ বাকি সবকিছুই বালির মতো—অর্থহীন ও সামান্য।”
নীতিকথা:
জীবনের আসল মূল্যবোধ বুঝতে শিখুন। ছোটখাটো বিষয় নিয়ে অতিরিক্ত সময় নষ্ট না করে, গুরুত্বপূর্ণ জিনিসগুলোকে আগে গুরুত্ব দিন। তাহলেই জীবন সত্যিকার অর্থে পূর্ণ হবে!