ষাট বছর আগে মারা যাওয়া মহিলার কবর থেকে বিকট চিৎকার

কয়েক বছর আগে তাবলীগ জামাতের সাথে আমি এটোবাবাদ গেলাম। শরের উপকণ্ঠে এক লোকালয়ের মসজিদে আমারা অবস্থান করলাম। মসজিদের পাশেই ছিল কবরস্থান। কর্মসূচী অনুযায়ী আমরা গাশত করে স্থানীয় কিছু লোককে মসজিদে সমবেত করলাম। কবর ও হাশরের আলোচনা শুরু করতেই উপস্থিত লোকেরা কাঁদতে আরম্ভ করল। আমরা অবাক হলাম। কারণ, কবর ও হাশরের আলোচনায় এরকম প্রতিক্রিয়া ইতিপূর্বে কোথাও দেখিনি।

স্থানীয় এক সাথী জানালেন, আসলে এই এলাকার লোকেরা কবর আযাবের নমুনা দেখেছে। একটি কবরের দিকে ইশারা করে তিনি বললেন, ঐ কবর হচ্ছে এক মহিলার। মহিলা ৬০ বছর আগে মারা গেছে। এক দিন ফজরের নামাজের পর কবর থেকে ভয়ঙ্কর চিৎকার ভেসে আসতে লাগলো। চিতকারের শব্দ কোথা থেকে আসছে অনুসন্ধান করে দেখা গেল, সেই মহিলার কবর থেকে চিৎকার শোনা যাচ্ছে। কবরটি ছিল অনেক পুরাতন এবং পাকা করা। বেলা বাড়ার সাথে সাথে চিৎকারের তীব্রতা এবং ভয়াবহতা বাড়তে লাগলো। জনমনে আতঙ্ক বেড়ে গেল।

লোকালয়ের নারী শিশু সবাই আর্তচিৎকার শুনে কাঁদতে লাগলো। একজন আলেম কে ডাকা হল। তিনি শুনে বললেন, ঐ কবরের ভিতর মহিলাকে শাস্তি দেওয়া হচ্ছে। মহান আল্লাহ আপনাদেরকে আখিরাতের প্রতি মনোযোগী করার উদ্দেশ্যে এই চিৎকার শুনাচ্ছেন। দুনিয়ার যত ধর্ম বিশ্বাস আছে সব মিথ্যা। কোরআনে বলা হয়েছে, মহান আল্লাহ তা’য়ালার নিকট একমাত্র মনোনীত ও পছন্দনীয় গ্রহণযোগ্য ধর্ম হচ্ছে ইসলাম। মহান আল্লাহ এই মহিলার শাস্তির নমুনা শুনিয়ে বুঝাতে চান যে, তোমরা পাঠ কর লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ (সাঃ)। যদি আপনারা এই কালিমার দাবী পূরণ করেন, যদি মহান আল্লাহ এবং তাঁর রাসুল (সঃ) এর উপর অবিচল বিশ্বাস স্থানপন করেন, যদি পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ যথাযথভাবে আদায় করেন – তবে এরকম ভয়াবহ শাস্তি থেকে রেহাই পাবেন। মনে রাখবেন কালিমায়ে তৈয়েবা লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ (সাঃ), এই কালিমা হচ্ছে কবরের শাস্তি থেকে রক্ষা পাওয়ার একমাত্র মূল সম্পদ।

আলেমে দ্বীনের কথা শোনার পর সব মানুষ কালেমায়ে তৈয়্যেবা লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ (সাঃ) পাঠ করলেন। যিকির করলো, দরূদ পাঠ করলো, কোরআন তিলাওয়াত করলো। তারপর চোখের পানিতে বুক ভাসিয়ে সেই মহিলার শস্তি মাফ করে দেওয়ার জন্য মহান আল্লাহর শাহী দরবারে দোয়া করলো। আসরের নামাজের পর কবর থেকে ভয়াবহ চিৎকার আসা বন্ধ হলো।

আমরা যখনই কবর এবং আখিরাতের জীবনের কথা আলোচনা করতাম লোকালয়ের মানুষ হু হু করে কাঁদতে আরম্ভ করতো।

সূত্রঃ চোখে দেখা কবরের আযাব

You may also like...

দুঃখিত, কপি করবেন না।