একদা এক বনের পশুরাজ সিংহ খুব বুড়ো হয়েছিল।সম্প্রতি সে খুব অসুস্থ হয়ে পড়ল।বেশ কয়েকদিন ধরে সে গুহায় শুয়ে আছে।বেরোবার শক্তি টুকু পর্যন্ত তার নেই।বনের পশুরা দলে দলে এসে তাদের অসুস্থ মহারাজ কে দেখে যাচ্ছে।বনের প্রায় সবাইয়েরই অসুস্থ পশুরাজ কে দেখে আসা হয়ে গেল।কিন্তু পাতি শিয়াল এখনও পর্যন্ত পশুরাজ কে দেখতে আসল না।এক নেকড়ে-সিংহ যাতে এমন দূর থেকে বলতে লাগল-আমাদের রাজার এমন ভারি অসুখ আর পাতিশিয়ালটা এখনও পর্যন্ত একদিনের জন্যও-এক মুহুর্তের জন্যে-মহারাজ কে সেখতে এল না?এ কি?এর মানে কি?এবং মানে হছে আমাদের রাজাকে বিন্দুমাত্র ভক্তিসম্মান করে না।এমন কি গ্রাহ্য পর্যন্ত করে না!নেকড়ে যখন এই কথা বলছিল-ঠিক সেই মুহুর্তে নেকড়ের পিছনে শিয়াল কখন উদয় হয়ে ছিল নেকড়ে টেরই পায়নি। সুতুরাং পাতিশিয়াল নেকড়ের সব কথা শুনে ফেলেছিল।সিংহ এদিকে নেকড়ের কোথায় তেতে উঠে পাতিশিয়ালকে নেকড়ের পিছনে দেখেই গর্জন করে উঠল।
পাতিশিয়াল তখন প্রমাদ গুনল।সে তখন অতি বিনয়ের সঙ্গে হাত জোর করে বলল, মহারাজ,রাগ করবেন না।আমার কথা আগে শুনুন।
এই কোথায় সিংহ একটু নরম হয়ে বলল-বলে ফেল কই তোর কথা?
তখন পাতিশিয়াল মিষ্টি করে বলল-এই তো দেখতে পাচ্ছি এখানে বনের অনেক প্রজারাই হাজির আছে,তবে আপনিই বলুন না,কে আমার মতো আপনার জন্য মাথা ঘামিয়েছে?আমি,এই আমি,কিসে আপনার অসুখ সারে তাই জানবার জন্য কত জায়গায় বদ্যির কাছে যে ঘুরে বেড়েয়েছি তাঁর আর লেখাজোকা নেই।এবং জেনেও নিয়েছি,তাদের কাছ থেকে আপনার অসুখ সারাবার দাওয়াই।
সিংহ তখন শান্ত স্বরে বলল- কি সেই দাওয়াই?
পাতিশিয়াল মুখ গম্ভীর করে বলল-বদ্যিরা সবাই বলল,জ্যান্ত নেকড়ের ছাল ছাড়িয়ে গরম থাকতে থাকতে সেই ছালদিয়ে আপনি গা ঢাকলে নির্ঘাত আপনার অসুখ সেরে যাবে।এই কথা শোনা মাত্র সিংহ নেকড়ের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ল।এবং নেকড়েকে হত্যা করল।
উপদেশঃঅপরের ক্ষতি করতে গেলে নিজের ক্ষতি হয়।