শয়তানের টাকা
দুনিয়ার জীবনটা রঙিন স্বপ্নের মত। সারাটা জীবন যদি সুখেও কেটে যায় আর মৃত্যুর সাথে সাথে যদি শ্বাস্তির জন্য পাকড়াও করা হয় তবে দুনিয়ার এ সুখ-শান্তি স্বপ্নের মত মনে হবে।
দুনিয়ার জীবনের সাথে নীচের ঘটনাটির মিল আছেঃ
এক লোকের অভ্যাস ছিল প্রত্যেক রাত্রে ঘুমন্ত অবস্থায় বিছানায় পেশাব করা। তার স্ত্রীর প্রতিদিন সেগুলো ধুতে হতো। একদিন তার স্ত্রী বললো, আমি প্রতিদিন আপনার পেশাব ধুতে ধুতে হয়রান হয়ে যাই। আর পারি না! রাত্রে আপনার ঘাড়ে কি কোন ভূত চাপে নাকি?
লোকটি বললো, রাত্রের বেলায় স্বপ্নের মধ্যে আমার কাছে একটি শয়তান আসে এবং বলে চল তোমাকে বেড়িয়ে নিয়ে আসি। আমি যখন বেড়াতে যেতে উদ্যত হই তখন বলে, পেশাব করে নাও! আগে পেশাবের কাজ সেরে পরে চল। আমি তখন পেশাবখানাতেই পেশাব করছি ভেবে পেশাব করে দেই। পরে দেখি সেটা আমার বিছানা।
স্ত্রী বললো, শয়তান তো জিনদের বাদশাহ। আমরা গরীব মানুষ। তুমি শয়তানকে বল আমাদেরকে কিছু টাকা এনে দিতে। আমাদের এ দুঃখের জীবন কেটে উঠবে।
স্বামী শয়তানকে একথা বলতে রাজি হলো।
রাত্রে যখন ঘুমালো তখন আবার স্বপ্নে শয়তান আসলো।
শয়তান বললো, চল বেড়িয়ে আসি।
লোকটি বললো, রোজ রোজ খালি হাতে বেড়াতে পারবো না। কোথা থেকে কিছু টাকা এনে দাও তবে আমি যাব।
শয়তান বললো, এটা আমার এমন কী কঠিন কাজ। টাকা নিতে হলে আমার সাথে চল, যত ইচ্ছা নিয়ে নিবে।
এ বলে সে লোকটিকে এক বাদশাহর ধন ভান্ডারের সামনে নিয়ে হাজির করে দিল। দেখে-শুনে টাকার বিরাট একটি বোচকা ওর মাথায় চাপিয়ে দিল। টাকার বোচকাটি এত ভারী ছিল যে তার চাপে লোকটার পায়খানা বের হয়ে গেলো।
যখন সকাল হলো, তখন সে দেখলো বিছানায় পায়খানার স্তুপ।
স্ত্রী বললো, এটা কেমন করে হলো?
সে বললো, রাত্রে শয়তান আমার মাথায় টাকার বোঝা এত বেশী চাপিয়েছিল যে বোঝার ভার সহ্য করতে না পেরে পায়খানা হয়ে গেছে।
স্ত্রী বললো, আগে পেশাব করতেন সে ভাল ছিল। আল্লাহর ওয়াস্তে আর পায়খানা করবেন না। আমাদের টাকা-পয়সার প্রয়োজন নেই।
ঘটনাটি অশ্লীল বটে, কিন্তু যদি চিন্তা করা হয় তবে আমাদের জীবনের সাথে লোকটির স্বপ্নের বেশ মিল রয়েছে। জীবনটা যেন ঘুমন্ত অবস্থা। মৃত্যু এসে চোখ খুলে দিবে। আমরা তখন বাস্তব জীবনে ফিরে যাবো। নাপাক গুনাহ তখন আমাদের সারা অঙ্গে মাখানো থাকবে। (ইলম ও আমল, পৃষ্ঠা – ৫৬৯)