লা হাওলা বিষয়ক বিস্ময়কর ঘটনা
বর্ণনায় হযরত জাবীর বিন আবদুল্লাহ বাজায়ী (রহঃ) তাসতার বিজয়ের পর তার কোনও এক রাস্তা দিয়ে আমি সফর করছিলাম। যেতে যেতে একবার আমি لا حول ولا قوة الا بالله লা হাওলা অলা কুউওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ বলি। ওখানকার এক বীরপুরুষ তা শুনে বলেন, আমি একথা একবার মাত্র আকাশ থেকে শুনেছিলাম। তারপর আর কারোর মুখে শুনিনি।
আমি বললাম, সেটা কি রকম?
তিনি বললেন, আমি ছিলাম একজন রাজদূত। দূত হিসাবে কিসরা (পারস্য সম্রাট)-এর কাছেও যেতাম। সেতাম কাইছার (রোম সম্রাট)-এর কাছেও একবার আমি রাজপ্রতিনিধিদল নিয়ে পারস্য সম্রাটের কাছে গিয়েছি। সেই সময় শয়তান আমার রূপ ধরে আমার স্ত্রীর কাছে থাকতে লাগে। আমি ফিরে এলে আমার স্ত্রী কোনও আনন্দ প্রকাশ করল না, যেমনটা সে আগে করত। তো আমি বললাম, তোমার কি হল? সে অবাক হয়ে বলে, তুমি আমার থেকে কবে চলে গিয়েছিলে?
তারপর সেই শয়তান আমার সামনে প্রকাশিত হয়ে বলে, তুমি এটা স্বীকার করে নাও যে, তোমার স্ত্রী একদিন তোমার জন্য হবে এবং একদিন আমার জন্য হবে।
পরে একদিন সেই শয়তান আমার কাছে এসে বলল, আমি হলাম সেইসব জ্বিনের অন্তর্ভুক্ত, যারা (আসমান বা উর্ধ্বজগত থেকে) তথ্য চুরি করে। এবং আমাদের চুরি করার পালাও নির্ধারিত আছে। আজ রাতে আমার পালা। তা তুমিও আমার সাথে যাবে কি?
আমি বললাম, হ্যাঁ, যাব।
সন্ধ্যা হতে সে আমার কাছে এল। আমাকে তার পিঠার ওপর বসাল। সেই সময় তার আকৃতি ছিল শুয়োরের মতো। সে আমাকে বলল, সাবধান! এবার তুমি বিস্ময়কর আর ভয়ঙ্কর ব্যাপার-স্যাপার দেখবে। তাই আমাকে জোরালোভাবে ধরে থাকবে। তা না হলে খতম হয়ে যাবে।
তারপর সেই জ্বিনেরা উপরদিকে উঠল। উঠতে উঠতে শেষ পর্যন্ত আকাশের প্রায় গায়ে গিয়ে ঠেকল। এমন সময় আমি শুনলাম একজন বলছিল-لا حول ولا قوه الا بالله ما شاء الله كان وما لم يشاء لم يكن আল্লাহ ছাড়া আর করোর কোনও শক্তি-ক্ষমতা নেই। আল্লাহ যা চান তাই হয়, যা চান না তা হয় না।
এরপর সেই জ্বিনদের উপর আগুনের গোলা ছোঁড়া হয়। ফলে তারা লোকালয়ের পিছনে পায়খানায় ও গাছপালায় গিয়ে পড়ে। আমি ওই কথাটা মুখস্থ করে নেই। সকাল হতে নিজের স্ত্রীর কাছে আসি। তারপর থেকে সেই শয়তান যখনই আসত, আমি এই কথাটা বলতাম। যা শুনে সে প্রচণ্ড ঘাবড়ে যেত। এমনকি (ভয়ের চোটে) সে কামরার ঘলঘুলি দিয়েও বেরিয়ে যেত। আর আমিও ওই দুয়াটি পড়তে থাকি। অবশেষে সে আমাকে (চিরতরে) ছেড়ে যায়।