লাওহে মাহফুজ দর্শনে ফেরেশতারা

এর কিছুদিন পরেই একদা ফেরেশতারা লাওহে মাহফুজে লিখিত দেখতে পান যে, অচিরেই আমার জৈনক বান্দাহার ওপরে চিরদিনের জন্য আমার লা’নত বর্ষিত হবে। এ লেখা পড়ে ফেরেশতারা ভয়ে অস্থির হয়ে পড়ল। তারা ভয়ে থরথর করে কাঁপতে লাগল।

তারা সঙ্কচিত আল্লাহ তার খলীফা প্রতিনিধি সৃষ্টি করবেন। সে প্রতিনিধির সন্তান অত্যন্ত পাপী এবং শাস্তিযোগ্য হবে। আমি অসহায় মাটি-  আল্লাহর শাস্তিভোগ করার শক্তি আমার নেই।

একথা শুনে জিব্রাইল (আঃ) মাটি না নিয়ে ফিরে যান। এভাবে মীকাঈল এবং ইসরাফীল (আঃ) ও মাটি না নিয়ে ফিরে যান। তাই আল্লাহ পাক আযরাঈল (আঃ)-কে মাটি আনার নির্দেশ দিয়ে প্রেরণ করেন। এবারও যমীন পূর্বের ন্যায় আল্লাহর কসম দিয়ে মাটি নিতে নিষেধ করে। তিনি  নিষেধ অমান্য করে বললেন, তুমি যার কসম নিচ্ছ আমি তাঁর আদেশে এসেছি।

আমি তাঁর আদেশ অমান্য করব না। তোমাকে নিয়েই যাব। অতএব আযরাঈল (আঃ) হাতে করে যমীন থেকে এক মুষ্টি মাটি নিয়ে ঊর্ধ্ব জগতে চলে গিয়ে আল্লাহর দরবারে নিবেদন করেন- হে আল্লাহ! আপনি জ্ঞাতা ও দ্রষ্টা, আমি এটা হাযির করেছি।

তখন আল্লাহ পাক বললেন, হে আযরাঈল! এ মাটি হতেই আমি যমীনে আমার এক খলীফা সৃষ্টি করব এবং তার জীবন হরণ কালেও তোমাকেই নিয়োগ করব। হযরত আযরাঈল (আঃ) এ কথায় অপারগতা প্রকাশ করে বললেন- হে আল্লাহ! এ দায়িত্ব যদি আমাকে দেন তবে আপনার বান্দারা আমাকে দুশমন ভাববে এবং গালি দেবে।

আল্লাহ পাক বললেন,- আযরাঈল! আমি সমগ্র সৃষ্টির স্রষ্টা, আমি প্রত্যেক মৃত্যুর একেকটি কারণ সৃষ্টি করব। ফলে প্রত্যেকে সে কারণের অধীনেই মৃত্যুমুখে পতিত হবে। কাজেই তখন আর তোমাকে দুশমন ভাববে না।

আমি কাউকে রোগে কাউকে আগুনে পুড়ে কাউকে পানিতে নিমজ্জিত করব। অতঃপর আল্লাহর নির্দেশে ফেরেশতারা  মাটি তায়েফ ও মক্কা শরীফেরে মাঝখানে রেখে দেন। তখন আল্লাহর রহমতের বৃষ্টি তার ওপর বর্ষিত হয়। তবে দু বছরে সে মাটি কাদায় পরিণত হয়। চতুর্থ বছরে মাটি খননে এবং ষষ্ঠ বছরে শুকনা মাটিতে রুপান্তরিত হয়। 

অষ্টম বছরে হযরত আদম (আঃ) সৃষ্টি হয়। তখন একদিন ইবলীস সত্তর হাজার ফেরেশতা সাথে নিয়ে আদম (আঃ) এর নিকট এসে দেখে, তাঁর দেহ পিঞ্জর মাটিতে পড়ে রয়েছে। এসময় ইবলীস তার প্রতি অস্মমানের দৃষ্টিতে দেখে।

অন্য এক দিন ফেরেশতারা আযাযীলকে বললেন, এ মাটি হতে আল্লাহর প্রতিনিধি সৃষ্টি হবে। সে বলল, একথা সত্য। আল্লাহ তা’আলা এ আকৃতিকে আমার অধীন করে দিলে আমি তাকে ধ্বংস করে ফেলব। আর আমাকে তার অধীন্থ করে দিলে আমি তার অধিনতা স্বীকার করব না,

Written By

More From Author

লাওহে মাহফুজ দর্শনে ফেরেশতারা

এর কিছুদিন পরেই একদা ফেরেশতারা লাওহে মাহফুজে লিখিত দেখতে পান যে, অচিরেই আমার জৈনক বান্দাহার ওপরে চিরদিনের জন্য আমার লা’নত বর্ষিত হবে। এ লেখা পড়ে ফেরেশতারা ভয়ে অস্থির হয়ে পড়ল। তারা ভয়ে থরথর করে কাঁপতে লাগল।

তারা সঙ্কচিত আল্লাহ তার খলীফা প্রতিনিধি সৃষ্টি করবেন। সে প্রতিনিধির সন্তান অত্যন্ত পাপী এবং শাস্তিযোগ্য হবে। আমি অসহায় মাটি-  আল্লাহর শাস্তিভোগ করার শক্তি আমার নেই।

একথা শুনে জিব্রাইল (আঃ) মাটি না নিয়ে ফিরে যান। এভাবে মীকাঈল এবং ইসরাফীল (আঃ) ও মাটি না নিয়ে ফিরে যান। তাই আল্লাহ পাক আযরাঈল (আঃ)-কে মাটি আনার নির্দেশ দিয়ে প্রেরণ করেন। এবারও যমীন পূর্বের ন্যায় আল্লাহর কসম দিয়ে মাটি নিতে নিষেধ করে। তিনি  নিষেধ অমান্য করে বললেন, তুমি যার কসম নিচ্ছ আমি তাঁর আদেশে এসেছি।

আমি তাঁর আদেশ অমান্য করব না। তোমাকে নিয়েই যাব। অতএব আযরাঈল (আঃ) হাতে করে যমীন থেকে এক মুষ্টি মাটি নিয়ে ঊর্ধ্ব জগতে চলে গিয়ে আল্লাহর দরবারে নিবেদন করেন- হে আল্লাহ! আপনি জ্ঞাতা ও দ্রষ্টা, আমি এটা হাযির করেছি।

তখন আল্লাহ পাক বললেন, হে আযরাঈল! এ মাটি হতেই আমি যমীনে আমার এক খলীফা সৃষ্টি করব এবং তার জীবন হরণ কালেও তোমাকেই নিয়োগ করব। হযরত আযরাঈল (আঃ) এ কথায় অপারগতা প্রকাশ করে বললেন- হে আল্লাহ! এ দায়িত্ব যদি আমাকে দেন তবে আপনার বান্দারা আমাকে দুশমন ভাববে এবং গালি দেবে।

আল্লাহ পাক বললেন,- আযরাঈল! আমি সমগ্র সৃষ্টির স্রষ্টা, আমি প্রত্যেক মৃত্যুর একেকটি কারণ সৃষ্টি করব। ফলে প্রত্যেকে সে কারণের অধীনেই মৃত্যুমুখে পতিত হবে। কাজেই তখন আর তোমাকে দুশমন ভাববে না।

আমি কাউকে রোগে কাউকে আগুনে পুড়ে কাউকে পানিতে নিমজ্জিত করব। অতঃপর আল্লাহর নির্দেশে ফেরেশতারা  মাটি তায়েফ ও মক্কা শরীফেরে মাঝখানে রেখে দেন। তখন আল্লাহর রহমতের বৃষ্টি তার ওপর বর্ষিত হয়। তবে দু বছরে সে মাটি কাদায় পরিণত হয়। চতুর্থ বছরে মাটি খননে এবং ষষ্ঠ বছরে শুকনা মাটিতে রুপান্তরিত হয়। 

অষ্টম বছরে হযরত আদম (আঃ) সৃষ্টি হয়। তখন একদিন ইবলীস সত্তর হাজার ফেরেশতা সাথে নিয়ে আদম (আঃ) এর নিকট এসে দেখে, তাঁর দেহ পিঞ্জর মাটিতে পড়ে রয়েছে। এসময় ইবলীস তার প্রতি অস্মমানের দৃষ্টিতে দেখে।

অন্য এক দিন ফেরেশতারা আযাযীলকে বললেন, এ মাটি হতে আল্লাহর প্রতিনিধি সৃষ্টি হবে। সে বলল, একথা সত্য। আল্লাহ তা’আলা এ আকৃতিকে আমার অধীন করে দিলে আমি তাকে ধ্বংস করে ফেলব। আর আমাকে তার অধীন্থ করে দিলে আমি তার অধিনতা স্বীকার করব না,

Written By

More From Author

You May Also Like

ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ

ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ ছিলেন প্রাচ্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ মনীষী, শিক্ষাবিদ, ভাষাবিদ, লেখক, গবেষক ও সমাজ সংস্কারক।…

অপু ও ফলচুরি রহস্য

মহানগরের কোলাহলের মাঝে, ব্যস্ত জনপথের কিছুটা দূরে একফালি সবুজ ল্যান্ডস্কেপ । সদ্য গড়ে ওঠা আবাসন…

শেয়াল ও মুরগি

এক বাগানের একটি খাঁচায় একপাল মুরগিছানা থাকত ওদের মায়ের সঙ্গে। ওরা ছিল বেশ শান্ত-সুবোধ। কেউ…