লাওহে মাহফুজ দর্শন
ইবলীশ আল্লাহর দরবারে প্রার্থনা জানাল হে প্রভু! তোমারাই অসীম অনুগ্রহে আমি অতি সামান্য স্তর থেকে সসম্মানে অতিচ্চস্তরে পৌঁছেছি। তোমারই অসীম অনুগ্রহে আমি তোমার নৈকট্য লাভ করতে সমর্থ হয়েছি। এখন আমার মনের একান্ত বাসনা হল তোমার পবিত্র লাওহে মাহফুজ দর্শন করে আমার জীবন ধন্য ও সার্থক করি। তুমি অনুগ্রহ করে আমার এই আকাঙ্খা পূর্ণ কর। পরম দয়ালু আল্লাহ তাআলা ইবলীসের প্রার্থনা কবূল করে মিকাঈল ফেরেশতাকে নির্দেশ দিলেনঃ ইবলীসকে পবিত্র লাওহে মাদফুজের একান্ত নিকটে নিয়ে দেখিয়ে আনার জন্য।
আল্লাহর নির্দেশ অনুযায়ী হযরত মিকাঈল (আঃ) ইবলীসকে লাওহে মাহফুজের নিকটে নিয়ে গেল। ইবলীস সেখানে পৌছে এক দৃষ্টিতে লাওহে মাহফুজের দিকে তাকিয়ে অদৃষ্টিলিপি পাঠ করতে লাগল। এক স্থানে তার দৃষ্টি পড়ল, সেখানে লিখিত রয়েছে- আল্লাহর একবান্দা ছয়লক্ষ বছর পর্যন্ত তার মাবুদের ইবাদত করবে। কিন্তু অবশেষে আল্লাহর একটি আদেশ অমান্য করে সে জান্নাত থেকে বিতাড়িত হবে।
ওই বান্দা আসমান ও যমীনের মালউন বা অভিশপ্ত নামে পরিচিত হবে। ইবলীশ এ লিপি পাঠের পর আপনা হতে কেঁদে ফেলল এবং সিজদায় পতিত হল এবং এ সিজদায় সে দীর্ঘ ছয় হাজার বছর অতিবাহিত করল। ছয় হাজার পরছ পর মাথা তুলে দেখতে পেল তার সিজদাহর জায়গায় লিখিত রয়েছে লা আনাতুল্লা-হি আলা-ইবলীস অর্থাৎ ইবলীসেরে উপরে আল্লাহর অভিশাপ বর্ষিত হউক।
ইবলীস আরজ করল, হে আমার রব! ইবলীস কে? তাকে দেখিয়ে দিন। আমি তাকে যথোচিত শিক্ষা দান করি। জবাবে আল্লাহ তাআলা ইবলীশকে বললেন, অচিরেই তুমি তাকে দেখতে পাবে। এ কথা শুনে ইবলীশ সেখানে দাঁড়িয়ে একহাজার বছর পর্যন্ত পাঠ করল , লা লানাতুল্লা-হি আলা ইবলীস- ইবলীসের উপর আল্লাহত লা’নত বর্ষিত হউক। এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন যে, তখনও ইবলীশ এ নামে পরিচিত হয়নি। আর তার এ কথা তখনও জানা ছিল না যে, এক সময় তারই নাম ইবলীস হবে। তখন আল্লাহ তাআলা ইবলীসকে বললেন, ওহে! বলত আমার যে বান্দাহ আমার অশেষ অনুগ্রহ লাভ করেও আমার হুকুম অমান্য করবে, তার কেমন শাস্তি হওয়া উচিত? জবাবে ইবলীশ বলল, হে আমার রব! এরূপ অকৃতজ্ঞ ব্যক্তির ওপর আপনার কঠিন শাস্তি ও অভিশাপ বর্ষিত হওয়া উচিত।
আল্লাহ তাআলা বললেন, তোমার এ মন্তব্যটা এক টুকরা তখতিতে লিখে তোমার নিকটই রেখে দাও, পরে তা কাজে আসতে পারে। এক টুকরা তখতিতে লিখে রেখে দিল ইবলীস তখনই।