বাংলাদেশের শিশুসাহিত্যের উত্তরণকালের দিকে যখন তাকাই দেখি এক মায়াময় সাহিত্য জগৎ হাতছানি দেয়। শিশুসাহিত্য জগৎ কেবলই যে শিশুকে হাতছানি দেয় তা নয়। শিশুসাহিত্য এমনই আনন্দের জগৎ যেখানে সব বয়সের পাঠকের প্রবেশ আছে। হাতছানি দেয় ছেলে-বুড়ো সকলকেই। এখন প্রশ্ন হলো এই বাংলার শিশুসাহিত্যকে যারা তাদের মেধা-মনন আর ভালোবাসা দিয়ে সমৃদ্ধ করে গেছেন তারা কেমন ছিলেন। কেমন ছিল তাদের জীবন। এই উন্মেষকালের শিশুসাহিত্যিক ছিলেন রোকনুজ্জামান খান। ১৯৫২ সালে, দৈনিক ইত্তেফাকের শিশুদের বিভাগ কচি-কাঁচার আসর প্রকাশিত হলে, সম্পাদক হন রোকনুজ্জামান খান; সে সময় ব্যবহার করতে শুরু করেন ছদ্মনাম- ‘দাদাভাই’।
‘লাইনে দাঁড়িয়ে বুক কেঁপে উঠলো। কি জানি কী, হয়তো আমার অঙ্ক কষা শেষ না হতেই অন্য প্রতিযোগীরা নির্দিষ্ট জায়গায় পৌঁছে যাবে। শুরু হলো প্রতিযোগিতা। মাঠের ও-প্রান্তে গিয়ে অঙ্ক কষলাম। কাগজটি নিয়ে দৌঁড় দিলাম এ-প্রান্তে। আমি ছিলাম তৃতীয় প্রতিযোগী। সবাই কাগজ জমা দিল। ভাবলাম অঙ্কটা শুদ্ধ হলে অন্তত থার্ড প্রাইজ তো পাব। কিন্তু থার্ড নয় ফার্স্ট হলাম। কারণ আমারটি ছাড়া আর কারো অঙ্কই শুদ্ধ হয়নি। আমার স্কুল জীবনের এটি ছিল অপূর্ব স্বাদের-আনন্দের দিন।’ এই দৌঁড় প্রতিযোগিতার নাম ‘অঙ্ক দৌঁড়’। এখনো কোনো কোনো স্কুলে প্রতিযোগিতাটি হয়। এই গল্পটি দাদাভাইয়ের! এই মানুষটির নাম রোকনুজ্জামান খান দাদাভাই। দাদাভাইয়ের ‘আমার ছেলেবেলা’ নামের একটি রচনা আছে; সেখানেই এই কথাগুলো। দাদাভাই তাঁর জীবনের অধিকাংশ সময়ই শিশুদের জন্য কাজ করেছেন, ভেবেছেন শিশুদের কল্যাণের কথা। তবে তিনি কেবল বসে বসে ভাবেননি বা ঢাকাতেই বসে কাজ করেননি, শিশুদের কাজে ছুটে বেড়িয়েছেন তিনি সারা দেশে, এমনকি দেশের বাইরেও। নিরলস প্রচেষ্টায় শিশুদের জন্য গড়ে তুলেছিলেন একটি শিশু সংগঠন যার নাম- ‘কচি-কাঁচার মেলা’।
এই ‘কচি-কাঁচার মেলা’ গড়ে তোলার গল্পই দাদাভাই বলেছেন- ‘১৯৫৬ সালের ৫ অক্টোবর। শরতের আকাশে রোদ আর মেঘের লুকোচুরি। হঠাৎ করে এক পশলা বৃষ্টি হয়ে গেল কিছুক্ষণ আগে। নির্ধারিত সময়ে সবাই এসে গেলেন ঢাকার তারাবাগে, বেগম সুফিয়া কামালের বাসা। সব্বাই, অর্থাৎ ১৪-১৫ জন শিশু-কিশোর ভাই-বোন; আর সেইসঙ্গে অধ্যাপক অজিত কুমার গুহ, আবদুল্লাহ -আল-মুতী এবং এম. এ. ওয়াদুদ (দৈনিক ইত্তেফাকের সে সময়ের ম্যানেজার) সঙ্গে আমি। বেগম সুফিয়া কামাল আমাদের নাস্তার ব্যবস্থা করেছিলেন। ‘সেদিন সভা শুরু হয় ঘাসের ওপরে মাদুর বিছিয়ে। সভাপতি ছিলেন আবদুল্লাহ- আল-মুতী। সেই সভায় ঠিক হয়, কচি-কাঁচার মেলা নামে একটি শিশু-কিশোর সংগঠন গড়ে তোলা হবে। এর সদস্যদের প্রগতিশীল চিন্তা-চেতনা ও দেশাত্মবোধে উদ্ধুদ্ধ করা হবে। তারা গুণীজনদের সম্মান দেবে। শুধু চেয়ারের মর্যাদা নয়- গুণের মর্যাদাও দেবে। দৈনিক ইত্তেফাকের ছোটদের বিভাগ কচি-কাঁচার আসরকে কেন্দ্র করে এই সংগঠনের জন্ম হয়েছিল।’ পরে এই সংগঠনের সঙ্গী হন শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন, সাংবাদিক তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া, এম. এ. ওয়াদুদ প্রমুখ। দাদা ভাইয়ের আরেকটি লেখায় আছে- ‘অনেক কর্মী, শুভানুধ্যায়ী আজ হারিয়ে গেছেন। অনেকের ঠিকানা আমার জানা নেই। কিন্তু বিগত ৩৩ বছর আগে যে কয়েক লক্ষ কচি-কাঁচা বয়ঃপ্রাপ্ত হয়েছেন। সদস্য পদ থেকে প্রাক্তনের পর্যায়ভুক্ত হয়েছেন, তারা আজ ছড়িয়ে পড়েছে শুধু বাংলাদেশের শহর-বন্দর-গ্রামেই নয়, পৃথিবীর বিভিন্ন শহর-বন্দরে।’
রোকনুজ্জামান খান দাদাভাই ছিলেন স্বপ্ন গড়ার কারিগর। হয়তো এর আগেই কথাটি তার জন্য প্রাপ্য ছিল। আজকের দেশ জুড়ে যারা বিভিন্ন ক্ষেত্রে বরেণ্য অথবা সম্মানের সাথে কাজ করে যাচ্ছে তাদের পেশায় বিশেষভাবে সাহিত্য ক্ষেত্রে এর একটি উল্লেখযোগ্য সংখ্যক কোনো না কোনোভাবে সান্নিধ্য পেয়েছেন এই গুণী মানুষটির। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় এই যে দাদাভাইকে আজ আর কেউ স্মরণ করে না। হালের শিশুসাহিত্য আজ আর শিশুর জন্যও লেখা হয় না। বাংলাদেশের স্বাধীনতা-পূর্ববর্তী শিশুসাহিত্য অথবা ছড়া কত দুর্বল ছিল তা হাল আমলের শিশুসাহিত্য পাঠে স্পষ্ট হয়। তবুও এই শিশুসাহিত্যকে যারা ওই সময়ে সমৃদ্ধির জন্য সব সময় কাজ করে গেছেন সেই মানুষদের মধ্যে অন্যতম আমাদের দাদাভাই। শিশুর জগতকে সাজিয়ে দিতে চেয়েছিলেন একটা ফুলের বাগানের মতো করে। তার চিন্তা রাজ্যে সব সময় বসবাস করেছে এক শিশু জগত। দাদাভাইয়ের রোকনুজ্জামান খান নামটি রেখেছিলেন নানা রওশন আলী চৌধুরী। সবাই আদর করে ডাকতো নান্নু বলে। দাদাভাইয়ের জন্ম ১৯২৫ সালের ৯ এপ্রিল, রাজবাড়ী জেলার পাংশা উপজেলার নারায়ণপুর গ্রামে, নানার বাড়িতে। তার নানা রওশন আলী চৌধুরী আবার ছিলেন ‘কোহিনূর’ পত্রিকার সম্পাদক। দাদাভাইয়ের বাবার নাম মৌলভী মোখাইরউদ্দীন খান, মায়ের নাম রাহেলা খাতুন। বাবার বাড়ি, যাকে বলে পৈতৃক নিবাস, কুষ্টিয়া জেলার ভেড়ামারা উপজেলার ভবানীপুর গ্রামে। দাদাভাই ছিলেন মোখইরউদ্দীন খানের দ্বিতীয় স্ত্রীর একমাত্র সন্তান। রোকনুজ্জামান খানের দাদা মুজিরউদ্দীন খান ছিলেন পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলার মানুষ; ছিলেন সরকারি চাকুরে- সাবরেজিস্টার। ভেড়ামারা এলাকায় ছিল তার বিরাট জমিদারি। পরে এই ভেড়ামারাতেই স্থায়ীভাবে বসবাস করতে শুরু করেন।
তার শৈশব ও কৈশোর কেটেছে পাংশায়, নানাবাড়িতে। সেকালে পাংশার চৌধুরী পরিবার, মানে তার নানার পরিবার ছিল ভারতবিখ্যাত। খুব ছোট থাকতেই তিনি মাকে হারান। সে সময় তার বয়স ৬ বছর। দাদাভাই লেখাপড়া শুরু করেন পাংশা জর্জ হাই ইংলিশ স্কুলে। স্কুলের শিক্ষকদের প্রিয় ছাত্র ছিলেন তিনি। এজন্য তিনি ক্লাস ক্যাপ্টেনও হতেন সবসময়। আর ক্যাপ্টেন হওয়ার সুবাদে, অন্য ছাত্রদের দাবী-দাওয়া, অনুযোগ-অভিযোগ নিয়ে প্রধান শিক্ষকের কাছে যেতে হতো তাকেই। সেই ছোটবেলাতেই সহপাঠীদের নিয়ে হাতে লেখা পত্রিকা বের করেন রোকনুজ্জামান খান। ক্লাসের গরিব ছাত্রদের সাহায্যের জন্য একটি ‘দরিদ্র তহবিল’-ও গঠন করেছিলেন। পাংশার গ্রামটি ছিল জলা-জঙ্গলে ভরা। সে সময় রাতে জঙ্গলে বাঘ আসতো। রাতে নানার পাশে শুয়ে শুয়ে তিনি বাঘের গর্জন শুনেছেন বলেও তার একটি লেখায় পাওয়া যায়। তিনি একই লেখায় আরো বলেছেন, আমি যখন নানা বাড়ি থেকে পাঠশালায় পড়ি, পাশে হিন্দু ব্যবসায়ীদের বাড়িতে যাত্রা হতো। টিফিনের সময় যাত্রা দেখতাম। তিনি বলেন-‘তখন থেকেই আমি মিছিল, হরতাল, স্লোগান এসবের সঙ্গে পরিচিত। রওশন আলী চৌধুরী ছিলেন গোয়ালন্দ মহকুমা কংগ্রেস কমিটির বিশিষ্ট নেতা। আমি নানা বাড়ি প্রাঙ্গণে বহু বৈঠক, ভলেন্টিয়ারদের সমাবেশ প্রভৃতি দেখেছি।’ আর যৌবনেও তার ভোজনরসিক হিসেবে সুখ্যাতিটি অটুট ছিল।
কৈশোর শেষ করে যৌবনে পদার্পণের সময়ে, বয়স তখন ২০ বছর, দাদাভাই তখন পাড়ি জমান কলকাতায়। এর আগেই অবশ্য তার লেখালেখি শুরু হয়ে গেছে। কলকাতায় গিয়ে উঠলেন খালার বাসায়। পরে মুসলিম সাহিত্য সমিতির মেসে গিয়ে ওঠেন। চাকরি নেন রেকর্ডকিপার হিসেবে, ‘অফিস অব দি ডেপুটি চীফ একাউন্টস-আমরিকান পারচেজ’ অফিসে।
চাকরিটি অবশ্য তার তেমন পছন্দ হলো না। নানা এয়াকুব আলী চৌধুরীর ঘনিষ্ঠ বন্ধু আবুল মনসুর আহমদ, মুজিবর রহমান খাঁ, আব্দুল মওদুদ, আবুল কালাম শামসুদ্দীন, হাবীবুল্লাহ বাহার প্রমুখের সহায়তায় অন্য একটি চাকরি জোটালেন তিনি; মুসলিম সাহিত্য সমিতিতে সহকারী গ্রন্থাগারিকের চাকরি। এই চাকরিতেও বেশিদিন স্থায়ী হলেন না। এ সময় ১৯৪৬ সালে ১৬ আগস্ট, কলকাতায় সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা শুরু হয়ে যায়। এই রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার মধ্যেই, ‘ইত্তেহাদ’ নামে একটি পত্রিকা আত্মপ্রকাশ করে। পত্রিকাটির শিশুপাতা ‘মিতালী মজলিস’ সম্পাদনা শুরু করলেন শিশুসাহিত্যিক মোহাম্মদ নাসির আলী। ১৯৪৭ সালে তিনি ঢাকায় চলে আসেন। এরপর পাতাটি সম্পাদনার দায়িত্ব পান- রোকনুজ্জামান খান। পাতা পরিচালনার জন্য ‘মিতাজী’ ছন্দনাম গ্রহণ করেন। ১৯৫০ সালের প্রথম দিকে আবার কলকাতা এবং ঢাকায় সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা শুরু হয়। সে ধাক্কায় বন্ধ হয়ে যায় ‘ইত্তেহাদ’। এবারে রোকনুজ্জামান খান শিশুদের মাসিক পত্রিকা ‘শিশু সওগাত’ সম্পাদনার দায়িত্ব পান। পরে, ওই বছরেরই ২৮ মে ঢাকায় ফিরে আসেন তিনি। এরইমধ্যে, সওগাত সম্পাদক মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন সম্পত্তি বদলের মাধ্যমে, ঢাকায় সওগাত প্রকাশের ব্যবস্থা করে ফেলেন। রোকনুজ্জামানও ঢাকায় এসে আগের দায়িত্বই আবার পালন করতে শুরু করেন। ১৯৫২-১৯৫৫ পর্যন্ত রোকনুজ্জামান মাসিক সওগাতের ব্যবস্থাপকসহ ঢাকার বিভিন্ন দৈনিক, সাপ্তাহিক ও সংবাদ সংস্থায় চাকরি করেন। তিনি দৈনিক মিল্লাত-এর ছোটদের কাগজ ‘কিশোর দুনিয়া’ প্রায় দুই বছর সম্পাদনা করেন ‘দরদী ভাই’ নামে। এরপর ১৯৫৫ সালের ১ মার্চ তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া বের করেন দৈনিক ইত্তেফাক। রোকনুজ্জামান প্রথমে পত্রিকাটির মফস্বল সম্পাদক, পরে ছোটদের বিভাগ কচি-কাঁচার আসরের সম্পাদক নিযুক্ত হন। এই পাতাটির সম্পাদনা করতেই তিনি ‘দাদাভাই’ নাম গ্রহণ করেন, পরে যে নামটি তার নামকেই আড়াল করে ফেলে। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি এই পাতাটির সম্পাদনার দায়িত্বে ছিলেন।
দাদাভাইয়ের প্রথম প্রকাশিত লেখার নাম- কচি বুকের রক্ত। তবে প্রথম লেখাটি ছিল পদ্য; তার নানার মৃত্যুর পরে, তাকে স্মরণ করে লিখেছিলেন পদ্যটি। তিনি ছড়াকার হিসেবে খ্যাতি অর্জন করলেও তার প্রথম বই- ‘আজব হলেও গুজব নয়’ ছড়ার না, গদ্যের এবং অনুবাদ। তার লেখা মৌলিক ছড়ার বই দু’টি- ‘হাট্টিমা টিম টিম’ অন্যটি ‘খোকন খোকন ডাক পাড়ি’। সম্পাদনা করেছেন বেশ কয়েকটি- আমার প্রথম লেখা, ঝিকিমিকি, কবি আহসান হাবীব স্মারকগ্রন্থ, ছোটদের আবৃত্তি, মাসিক কচি ও কাঁচা, বার্ষিক কচি ও কাঁচা এবং কেন্দ্রীয় কচি-কাঁচার মেলার বিভিন্ন পুস্তিকা। এছাড়া তিনি অনেক ছড়া-কবিতা লিখেছেন। লিখেছেন বড়দের গল্পও। কিন্তু এসব লেখা সংগ্রহও করেননি, প্রকাশ করারও উদ্যোগ নেননি। দাদাভাই দৈনিক ইত্তেফাকের কচি-কাঁচার আসরের পরিচালক ছিলেন প্রায় ৪২ বছর। তিনি এই পাতায় ‘দাদাভাই-এর কথা’ শিরোনামে ছোটদের কাছে প্রায়ই চিঠি লিখতেন; চিঠিগুলো লিখতেন নির্ধারিত বিষয় নিয়ে। জীবনের শেষ দশ বছরে, তিনি প্রতি সপ্তাহে ‘দাদাভাই-এর কথা’ লিখতেন। আর চিঠিগুলোর ব্যাপারে কবি শামসুর রাহমান বলেছেন, ‘ইত্তেফাক-এর কচি-কাঁচার আসরে প্রতি সপ্তাহে দাদাভাই-এর কথা নামে একটি ছোট কলাম লিখতেন শিশু-কিশোরদের উদ্দেশ্যে। সেসব চিঠিতে অনেক ভালো ভালো কথা আছে, যা সবার কাজে আসবে। আলোকিত করবে ছোটদের মন। যদি কোনো ভালো প্রকাশক দাদাভাই-এর চিঠিগুলো ছাপার উদ্যোগ নেন, তাহলে তোমরা-আমরা সবাই একটি ভালো বই পেয়ে যাবো।’ দাদাভাই বিভিন্ন সময় বিভিন্ন সাহিত্য পুরস্কার ও সম্মাননা লাভ করেছেন। এরমধ্যে – বাংলা একাডেমি, শিশুসাহিত্য পুরস্কার (১৯৬৮), শিশু একাডেমী পুরস্কার (১৯৯৪), একুশে পদক (১৯৯৮), স্বাধীনতা পদক (১৯৯৯)।
দাদাভাই কেবল পুরস্কৃত হয়েছেন রাষ্ট্র কর্তৃক কিন্তু তার কাজকর্মকে মানুষের মাঝে পৌঁছে দেওয়ার আজ অব্দি কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। এখনকার দিনে শিশুসাহিত্যে যে ধরনের দলবাজি বা স্বার্থ হাসিলের চেষ্টা চলে তা দাদা ভাইয়ের মধ্যে ছিল না। অন্যদিকে প্রত্যেকের রচনা সমগ্র বের করা নিয়েও দৌড়ঝাঁপ তো নিত্যকার ব্যাপার। দাদাভাইয়ের লেখা নিয়ে তেমন কোথাও লেখা বা আলোচনা এখন আর হয় না। দাদাভাই তার জীবদ্দশায়, যে কাজ করেছেন এবং লিখেছেন তা প্রতিটি মানুষের কাছে একটা উদাহরণ হতে পারে। তার লেখা কয়েকটি ছড়া শিশুদের বইয়ে আছে কিন্তু তার জীবনী কোথাও নাই। অবশ্য খালেক বিন জয়েনউদ্দিন দাদাভাইকে নিয়ে জীবনী আকারে একটা বই লিখেছিলেন তা প্রকাশ হয়েছিল বাংলা একাডেমি থেকে। এখন তার কপি পাওয়া যায় না। কিন্তু তার জীবনী এবং লেখা বিভিন্নভাবে শিশুদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আর আজকের শিশুদের জন্য সত্যিকার আলোকিত মানুষ দরকার, দরকার তার লেখা- জীবনী। আর এই আলোকিত মানুষ হিসেবে ছোটদের দাদাভাই-ই আদর্শ মানুষ।
"আলোর পথ"-এ প্রকাশিত গল্পসমূহ ও লেখনী মূলত পাঠক, শুভানুধ্যায়ী এবং সম্মানিত অবদানকারীদের কাছ থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। এই কনটেন্টগুলোর উপর আমরা কোনো মেধাসত্ত্ব (copyright) দাবি করি না। যদি কোনো গল্প, ছবি বা তথ্যের কপিরাইট সংক্রান্ত বিষয়ে আপনার প্রশ্ন, সংশয় বা আপত্তি থাকে, তাহলে অনুগ্রহ করে আমাদের যোগাযোগ পৃষ্ঠায় যোগাযোগ করুন। আমরা যথাযথ আইনানুগ পদ্ধতিতে বিষয়টি পর্যালোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।