রুহানী চিকিৎসা
কথিত আছে এক বুজুর্গ বলেন, আমি যখন মদীনা শরীফে ছিলাম তখন সেখানে মাঝে মাঝে আল্লাহ ওয়ালাদের ঘটনা বর্ণনা করে শুনাতাম। আমাদের পাশে ছিল এক অন্ধ ব্যক্তি। সে বেশ আগ্রহের সাথে আমার বর্ণিত ঘটনাগুলো শুনত। একদিন সে নিজের ব্যক্তিগত জীবনের ইতিহাস বর্ণনা করে বলল, এক সময় আমার সুখের সংসার ছিল। পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ আনন্দে আমার দিন কাটত। একদিন মাঠে লাকড়ি কুড়াতে গিয়ে দেখলাম, এক যুবক রেশমের দামী জামা পরে হাতে একটি মোতি নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। আমি মনে মনে বললাম, এটা সুবর্ণ সুযোগ বটে। তার কাছে গিয়ে বললাম, গায়ের জামাটি খুলে আমাকে দিয়ে দাও। কিন্তু সে কিছুতেই রাজী হল না। এদিকে আমিও নাছোড় বান্দা। অবশেষে সে বলল, তুমি কি সত্যিই আমার জামাটি নিয়ে যাবে? আমি বললাম, হ্যাঁ! যুবক এবার আমার দিকে হাত তুলে দু আঙ্গুল দিয়ে আমার চোখের দিকে ইশারা করল। সাথে সাথে আমার উভয় চোখ দেহ হতে বিছিন্ন হয়ে মাটিতে পড়ে গেল। আমি তাকে আল্লাহর শপথ দিয়ে জিজ্ঞেস করলাম, তুমি কি?
সে বলল- আমি ইব্রাহীম খাওয়াস। বর্ণনাকারী বললেন- হযরত ইব্রাহীম খাওয়াস চোরের জন্য বদদোয়া করলেন। যেন তার চোখ অন্ধ হয়ে যায়। আর হযরত ইব্রাহীম বিন আদহাম প্রহারকারীর জন্য দোয়া করেছিলেন, যে তার জান্নাত লাভ হয়। এর রহস্য থাক, হযরত ইব্রাহীম খাওয়াস দেখলেন যে, ঐ চোরকে যদি অন্ধ করা না হয়, তবে সে তওবা করবে না। অর্থাৎ তার আত্মসংশোধনের জন্য পার্থিব এ শাস্তিকেই তিনি উত্তম মনে করলেন। পক্ষান্তরে হযরত ইব্রাহীম বিন আদহাম দেখলেন যে, প্রহারকারীকে যদি কোন প্রকার শাস্তি দেয়া হয়, তবে সে আরো অধিক ক্ষেপে যাবে। সুতরাং তিনি তার জন্য নেক দোয়া করলেন। কিছুদিন পর সে তার দরবারে হাজির হয়ে নিজ অপরাধ স্বীকার করে তওবা করল।