রাস্তার ভূত..

১৭ এপ্রিল,২০১০। রাত ১১ টায় ফোন আসে আম্মা খুব ই অসুস্থ, আমাকে দেখতে চান । আমি মেসে থাকি । এত রাতে কিভাবে যাব। তবুও রওনা দিলাম। বাসের দেখা মেলে না । শেষে ১টা ট্রাকে চড়ে রওনা দিলাম। যখন আমাদের গ্রামের রাস্তায় নামলাম তখন ঘড়িতে ১:৪৫ । একটা ভ্যানগাড়ি ও দেখতে পেলাম না। এখান থেকে হেটে যেতে লাগবে কমপক্ষে ১ ঘন্টা লাগবে। কি আর করি হাটতে শুরু করলাম।আমি খুব ভীতু।
কিন্তু সেদিন ওসব ভয়ের কথা মনেই ছিল না। আম্মাকে নিয়ে দুশ্চিন্তা করতেছি আর হাটতেছি। হঠাত্ আমার মনে হল আমার পিছনে কেউ আছে।কিন্তু দেখার সাহস পাচ্ছিনা।তখন আমার ভয় লাগতে শুরু করল।মোবাইল বের করে বাড়িতে কল দিতে লাগলাম, কিন্তু বারবার নেটওয়ার্ক ফেল দেখাতে লাগল। চেনাজানা অনেককেই কল দিলাম একই অবস্থা। তখন আমার ভয় আরও কয়েক গুন বেড়ে গেল। তবুও পিছনে না তাকিয়ে হাটতে লাগলাম। কিন্তু যতই আমি সামনে যাই ততই রাস্তা আমার কাছে অচেনা মনে হতে থাকে। হঠাত্ সামনে রাস্তার পাশে একটা বিরাট গাছ দেখতে পাই কিন্তু এখানে তো কোন গাছ ছিল না। আল্লাহ আল্লাহ করতেছি, দেখি গাছ থেকে একটা লোক ফাসি দেয়া অবস্থায় ঝুলতেছে। আমি চিত্কার দিয়ে উঠলাম এবং দৌড় শুরু করলাম। কিন্তু আমি কোথায় যাচ্ছি, রাস্তা অচেনা লাগছে কেন। হঠাত্সা মনে একটি মেয়েকে দেখতে পেলাম। একটু সাহস পেলাম। কিন্তু এত রাতে একা একটি মেয়ে এখানে কি করে। জিগ্গেস করতেই মেয়েটি রাস্তার পার্শ্বের জমিতে নেমে অদৃশ্য হয়ে গেল।
সাথে সাথে আমি সেন্সলেস হয়ে যাই। যখন আমি জাগা পাই দেখি আমার দুই পার্শ্বে সাদা লম্বা কাপড় পরা লম্বা দাড়িওয়ালা দুই লোক বসে আছেন। কেন জানিনা আমি সঙ্গে সঙ্গে কেঁদে উঠলাম এবং তাদেরকে সব খুলে বললাম। তখন তারা দুইজন আমাকে বাড়ি পর্যন্ত পৌঁছে দেন। বাড়িতে যখন পৌঁছি তখন ৩ টার মতো বাজে । আম্মা একটু সুস্হ্য , ঘুমাচ্ছেন। আমি আব্বার সাথে একটু কথা বলে ঘুমাতে গেলাম।
কিছুক্ষণ পর আমাদের টিনের চালে ঢিল পরা শুরু হল। সবাই ঘুম থেকে জাগা পেল এবং ভয় পেয়ে সবাই আব্বার রুমে এসে উপস্থিত হল। ফজরের আযান পর্যন্ত ঢিল পড়েছিল। সকালে আমার আব্বা একজন হুজুরকে আনেন এবং ঐ হুজুর আমাদের বাড়ি বন [বন্ধ ]করে দেন । এরপর আর কোন সমস্যা হয় নি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো পড়তে পারেন...

ভাঙ্গা খেলনার গল্প

রাতুল ছিল তার বাবা-মায়ের একমাত্র আদরের সন্তান। তার কোনো কিছুরই অভাব ছিল না। সে যা…

সীতাভোগ খাওয়ার জ্বর

গোপাল আর তার প্রাণের বন্ধু নেপাল নৌকায় করে একবার চাঁদপুর যাচ্ছিল। নৌকোয় ছয়জন মাঝি ছাড়া…

লোকসান দু’পয়সা

গোপাল একবার নদীর ঘাটে ঘাটের ইজারা নিয়েছিল। নদীর ফেরী ঘাটের ইজারাদার গোপাল ভাড়া ছয় পয়সা…