রাসূলুল্লাহর (সাঃ) এর সান্ত্বনা বানী
হযরত খাব্বার ইবনে আরাত (রাঃ) বলেন, একদা রাসূলে করীম (সাঃ) কা’বা গৃহের ছায়ায় বসা ছিলেন। ঐ সময় আমরা তার নিকট কাফেরদের নির্যাতনের অভিযোগ পেশ করে বললাম, আপনি কি আমাদের জন্য আল্লাহ্ তা’আলার নিকট দোয়া করেন না? একথা শুনে তিনি সোজা হয়ে বসলেন। তার পবিত্র চেহারা রক্তিম বর্ণ হয়ে উঠল। অতঃপর বলেন, তোমাদের পূর্ববর্তী উম্মতদের উপর এমনও বিপদ এসেছিল যে, এক ব্যক্তিকে ধরে লোহার চিরুনী দ্বারা তার দেহের গোশত ও চামড়া ছিঁড়ে ফেলা হতো।
এত কঠিন নির্যাতনের পরও তাকে তার ধর্ম হতে ফিরাতে পারত না। গর্ত খনন করে তাতে এক ব্যক্তিকে পুঁতে মাথার দিক থেকে করাত চালিয়ে দু টুকরো করে ফেলেও ধর্মচ্যুত করা সম্ভব হতো না। রাসূলুল্লাহ (সাঃ) আল্লাহ্ শপথ করে বললেন, তিনি এ দ্বীনকে এমন শক্তিশালী করবেন যে, একজন অশ্বারোহী সানআ হাতে হাজরাল মাওত পর্যন্ত ভ্রমন করবে। পথে তার অন্তরে আল্লাহ্ ছাড়া অন্য কারো ভয় স্থান পাবে না। এমনকি ছাগলের মালিক তার ছাগলের জন্য বাঘের আশংকা করবে না। (বুখারী ও মুসলিম)
হযরত উসমান (রাঃ) এর জনৈক কৃতদাস বর্ণনা করেন, হযরত উম্মে ছালমা (রাঃ) এর গৃহে কোথা থেকে একখণ্ড গোশত হাদিয়া এল। রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর প্রিয় খাদ্য ছিল গোশত। সুতরাং উম্মে ছালমা পরিবারিকাকে বললেন, এ গোশত হেফাজত করে রেখো। সম্ভবত রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এসে ভক্ষণ করবেন। এজন্য সে ঐ গোশত তাকের উপর রেখে দিল। কিছুক্ষণ পর এক ভিক্ষুক এসে বলল কিছু দান করুন, আল্লাহ্ বরকত দেবেন। আরবের প্রথা অনুযায়ী উত্তর দিলেন, আল্লাহ্ তোমাকে ও বরকত দিন।
কিছুক্ষণ পর রাসূল পাক (সাঃ) ঘরে এসে হযরত উম্মে ছালমা কে জিজ্ঞেস করলেন, হে উম্মে ছালমা! তোমার নিকট কিছু খাবার আছে কি? তিনি বললেন, হ্যাঁ, অতঃপর তিনি পরিচারিকাকে সেই গোশত আনতে আদেশ করলেন। সে ঐ গোশত আনতে গিয়ে দেখল সেখানে এক খণ্ড পাথর ছাড়া আর কিছুই নেই। বিস্তারিত ঘটনা শুনে রাসূল (সাঃ) বললেন, সেই গোশত পাথরে পরিণত হয়ে গেছে। কারণ, তোমরা তা ভিক্ষুককে দান করনি। (বুখারী শরীফ)