রাজার ইচ্ছা !!

এক দেশে ছিলো এক আজব রাজা।তার মাথায় আসত যতসব আজব চিন্তা…একবার রাজার ইচ্ছা হল প্রজাদের কাছ থেকে ভাল ভালো কবিতা শুনার…তাই রাজা ঘোষনা করলেন- যে আমাকে ভালো ভাল কবিতে শুনাতে পারবে তাকে আমি অনেক টাকা পয়সা দিবো… নানা দেশ থেকে নানা লোক আসে…কবিতা শোনায় কিন্তু রাজার কোনটাই ভালো লাগেনা… রাজার দেশেই ছিলো এক বোকা…কোন কাজ-কর্ম করতনা…শুধু বাড়িতে বসে খেত…এসবে অতিষ্ট হয়ে একদিন বোকার বউ ওকে বাড়ি থেকে বের করে দেয়… বোকা মনের দুঃখে হাটছে আর চিন্তা করছে কি করা যায়…এমন সময় রাস্তায় দেখতে পেল একটা ইঁদু্র মাটি কাটছে…তখন সে বলল “কাটিকুটি, মাটি কাটি…” বোকার শব্দ পেয়ে ইঁদু্র চুপ করে গেলো…তা দেখে বোকা বলল…”বসে গেলি,চেপে গেলি…”

আরও কিছু দূর যাওয়ার পর দেখতে পেল একটা ষাড় তাকে মারার জন্য এগিয়ে আসছে…তখন সে বলল…” চুংকু মুংকু ক্ষুরের ঘাও, অনুমানে বুঝি মারিবার চাও” কিছুক্ষন চিন্তা করার পর বোকা হঠাৎ করে বলে উঠলো” এই তো আমার কবিতা হয়ে গেছে” “কাটিকুটি, মাটি কাটি বসে গেলি,চেপে গেলি চুংকু মুংকু ক্ষুরের ঘাও, অনুমানে বুঝি মারিবার চাও” বোকা তখনি রাজার বাড়িতে চলে যায়…রাজাকে কবিতাটি শোনায়…বোকার এই কবিতা শুনে রাজা ছাড়া উপস্হিত সবাই হাসাহাসি শুরু করে…কিন্তু রাজার কবিতাটি অনেক পছন্দ হয়…তিনি সিপাহীকে বললেন বোকাকে কিছু টাকা দিয়ে দিতে…টাকা পেয়ে তো বোকা অনেক খুশি…সে মহানন্দে বাড়ি গিয়ে বউকে টাকাগুলো দেয়…বউও অনেক খুশি হয়… এদিকে রাজা বোকার সেই কবিতাটা মুখস্হ করছিলো এমন সময় দুইটা চোর আসে রাজার বাড়িতে চুরি করতে…রাজা মুখস্হ করছে…” কাটিকুটি, মাটি কাটি” সেই সময় কিন্তু চোর মাটি খুড়ছিলো…চোর মনে করলো রাজা নিশ্চয় সব কিছু দেখতেছে…তাই তারা খোড়া বন্ধ করে দিলো…তখন রাজা বললেন” বসে গেলি,চেপে গেলি” তারা নাপিতের বাড়ি গিয়ে নাপিতকে বললো…”নাপিত ভাই, আপনি কাল সকালে যখন রাজার দাড়ি কাটতে যাবেন তখন রাজার গলাটা ফাসিয়ে দিবেন…” নাপিত বললো…ঠিক আছে… নাপিত সকালবেলা রাজার দাড়ি কাটতে এসেছে; নাপিত ক্ষুর কে খুব ধার দিচ্ছে তখন রাজা কবিতার পরের লাইন মুখস্হ করছে… “চুংকু মুংকু ক্ষুরের ঘাও, অনুমানে বুঝি মারিবার চাও” নাপিত ভাবল রাজা সব কিছু জেনে গেছেন…নাপিত রাজার পা ধরে মাফ চাওয়া শুরু করে… রাজা বললেন…এ কী কি করছ এসব…আমি তো কিছুই বুঝতে পারছিনা… তখন নাপিত ভয় পেয়ে সবকিছু বলে দেয়…শুনে রাজা তো রেগে আগুন…তখন ই আদেশ দিলেন চোর দুইটাকে আর বোকাকে ধরে আনতে…তারপর রাজা চোর আর নাপিতকে শাস্তি দিলেন আর বোকাকে ওনার জীবন বাচানোর জন্য অনেক টাকা পুরষ্কার দিলেন… তারপর বোকা দম্পতি সুখে-শান্তিতে বাস করিতে লাগল… –সংগৃহীত

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো পড়তে পারেন...

রসিক গোপালের চালাকি

একবার গোপাল পাড়ার এক দোকান থেকে বাকি খেয়েছে। অনেকদিন হয়ে গেল দেনা সে শোধ করে…

নবাবের অষ্টাদশ পর্ব মহাভারত কথা –গোপাল ভাঁড়ের গল্প

একবার মুর্শিদাবাদের নবাবের খেয়াল হল, হিন্দুদের মত আমাকে নিয়ে মহাভারত রচিত হোক। যেমনি ভারা তেমনি…

টোল

যখন রমনা পার্কে পৌছালাম তখন তিনটার মত বাজে ! সাড়ে তিনটার সময় নিশির সাথে দেখা…

রাজার ইচ্ছা !!

এক দেশে ছিলো এক আজব রাজা।তার মাথায় আসত যতসব আজব চিন্তা…একবার রাজার ইচ্ছা হল প্রজাদের কাছ থেকে ভাল ভালো কবিতা শুনার…তাই রাজা ঘোষনা করলেন- যে আমাকে ভালো ভাল কবিতে শুনাতে পারবে তাকে আমি অনেক টাকা পয়সা দিবো… নানা দেশ থেকে নানা লোক আসে…কবিতা শোনায় কিন্তু রাজার কোনটাই ভালো লাগেনা… রাজার দেশেই ছিলো এক বোকা…কোন কাজ-কর্ম করতনা…শুধু বাড়িতে বসে খেত…এসবে অতিষ্ট হয়ে একদিন বোকার বউ ওকে বাড়ি থেকে বের করে দেয়… বোকা মনের দুঃখে হাটছে আর চিন্তা করছে কি করা যায়…এমন সময় রাস্তায় দেখতে পেল একটা ইঁদু্র মাটি কাটছে…তখন সে বলল “কাটিকুটি, মাটি কাটি…” বোকার শব্দ পেয়ে ইঁদু্র চুপ করে গেলো…তা দেখে বোকা বলল…”বসে গেলি,চেপে গেলি…”

আরও কিছু দূর যাওয়ার পর দেখতে পেল একটা ষাড় তাকে মারার জন্য এগিয়ে আসছে…তখন সে বলল…” চুংকু মুংকু ক্ষুরের ঘাও, অনুমানে বুঝি মারিবার চাও” কিছুক্ষন চিন্তা করার পর বোকা হঠাৎ করে বলে উঠলো” এই তো আমার কবিতা হয়ে গেছে” “কাটিকুটি, মাটি কাটি বসে গেলি,চেপে গেলি চুংকু মুংকু ক্ষুরের ঘাও, অনুমানে বুঝি মারিবার চাও” বোকা তখনি রাজার বাড়িতে চলে যায়…রাজাকে কবিতাটি শোনায়…বোকার এই কবিতা শুনে রাজা ছাড়া উপস্হিত সবাই হাসাহাসি শুরু করে…কিন্তু রাজার কবিতাটি অনেক পছন্দ হয়…তিনি সিপাহীকে বললেন বোকাকে কিছু টাকা দিয়ে দিতে…টাকা পেয়ে তো বোকা অনেক খুশি…সে মহানন্দে বাড়ি গিয়ে বউকে টাকাগুলো দেয়…বউও অনেক খুশি হয়… এদিকে রাজা বোকার সেই কবিতাটা মুখস্হ করছিলো এমন সময় দুইটা চোর আসে রাজার বাড়িতে চুরি করতে…রাজা মুখস্হ করছে…” কাটিকুটি, মাটি কাটি” সেই সময় কিন্তু চোর মাটি খুড়ছিলো…চোর মনে করলো রাজা নিশ্চয় সব কিছু দেখতেছে…তাই তারা খোড়া বন্ধ করে দিলো…তখন রাজা বললেন” বসে গেলি,চেপে গেলি” তারা নাপিতের বাড়ি গিয়ে নাপিতকে বললো…”নাপিত ভাই, আপনি কাল সকালে যখন রাজার দাড়ি কাটতে যাবেন তখন রাজার গলাটা ফাসিয়ে দিবেন…” নাপিত বললো…ঠিক আছে… নাপিত সকালবেলা রাজার দাড়ি কাটতে এসেছে; নাপিত ক্ষুর কে খুব ধার দিচ্ছে তখন রাজা কবিতার পরের লাইন মুখস্হ করছে… “চুংকু মুংকু ক্ষুরের ঘাও, অনুমানে বুঝি মারিবার চাও” নাপিত ভাবল রাজা সব কিছু জেনে গেছেন…নাপিত রাজার পা ধরে মাফ চাওয়া শুরু করে… রাজা বললেন…এ কী কি করছ এসব…আমি তো কিছুই বুঝতে পারছিনা… তখন নাপিত ভয় পেয়ে সবকিছু বলে দেয়…শুনে রাজা তো রেগে আগুন…তখন ই আদেশ দিলেন চোর দুইটাকে আর বোকাকে ধরে আনতে…তারপর রাজা চোর আর নাপিতকে শাস্তি দিলেন আর বোকাকে ওনার জীবন বাচানোর জন্য অনেক টাকা পুরষ্কার দিলেন… তারপর বোকা দম্পতি সুখে-শান্তিতে বাস করিতে লাগল… –সংগৃহীত

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *