রাজবধূ ৭২ পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক করুন
কথাগুলো বলেই তারা বাদশার শরীর হাতড়ে চা * কু টি নিয়ে নিলো। আবার বিশ্রী এক গালি দিয়ে উঠলো। এবং ছু* রি টি বাদশার গলার নিচে ঠেকিয়ে ধরলো।
বাদশা অসহায়ের মতো গাঁইগুঁই শুরু করলো। কিছুতেই নিজেকে বাঁচানোর উপায় খুঁজে পাচ্ছে না।
তখনই সামনে থেকে একটি টচ লাইটের আলো এসে ঠিকরে পড়লো খালেদ ও আসলামের মুখ বরাবর। সামনে দাঁড়ানো মানুষটিকে দেখতে পেয়েই আসলামের কম্পিত হাত থেকে চু* রি* টি মাটিতে পড়ে গেলো। নিশিরাতের ভূত দেখার মতন তারা আঁৎকে উঠলো। এবং ভয়াবহ রকমের ক্রোধান্বিত হয়ে উঠলো।
“কী হচ্ছে এখানে?”
মারমুখী কণ্ঠে জিজ্ঞেস করলো রাজ।
“তুই না দেশের বাইরে?”
রোষপূর্ণ গলায় জিজ্ঞেস করলো খালেদ।
“আমি বাইরে থাকলেই ত সবার বেশি সুবিধা। তাই না?”
বলেই রাজ টর্চের আলো ফেলে ফেলে কবরের পাড়ে গিয়ে দাঁড়ালো। বাদশার হাতের বাঁধন মুক্ত করলো। কবরের ভিতরে আলো ফেললো। দেখতে পেলো মৃত মানুষের কংকাল। দুই ভাইয়ের দিকে চেয়ে ধারালো সুরে ফের প্রশ্ন ছুঁড়ে দিলো রাজ।
“এই কবর কার? কে দিয়েছে? এত রাতে এখন কী দামাচাপা দেওয়া হচ্ছে?”
খালেদ ও আসলাম পাথর হয়ে আছে। কিছু বলছে না। তাদের মুখাকৃতি থমথমে ও ভীতসন্ত্রস্ত!
“এই বাদশা, তুই বল কাহিনী কী?
একচুলও মিথ্যা বলবি মেরে ফেলবো।”
র*ক্ত চক্ষু নিয়ে জানতে চাইলো রাজ।
বাদশার ঠোঁট ও গলা শুকিয়ে এলো। বার দুয়েক শুকনো ঢোক গিললো। জিভ দিয়ে শুষ্ক ঠোঁটজোড়াকে ভিজিয়ে নিলো। সে যতটুকু জানে সব বললো রাজকে। আসলাম ও খালেদ মাথা হেঁট করে কবর পাড়ে ভিক্ষুকের ন্যায় বসে রইলো।
এত নৃশংস বর্ণনা শুনে রাজ স্থির থাকতে পারল না। বড় দুই ভাইয়ের গায়ের দিকে লাথি মারতে গিয়েও পা থামিয়ে নিলো।
তাদের জিজ্ঞেস করলো,
“আজগর দাদাকে কেন জীবন্ত মাটিচাপা দিয়েছেন?”
তারা মুখ খুলছে না কিছুতেই। রাজ তাদের মুখ খোলার জন্য মিথ্যে করে বললো,
“আপনারা যদি সত্যিটা না স্বীকার করেন, তাহলে এখন আপনাদের দুজনের বউকে আপনাদের সামনে অপদস্থ করা হবে খুব বাজেভাবে। এবং সেটা বরকতকে দিয়ে করাবো।”
“আচ্ছা বলতেছি। বাড়িতে চল। এই বাদশা কবরটা সমান করে ফেল।”
বলল খালেদ।
“বাদশা কিছুই করতে হবে না তোর। এগুলো এভাবেই থাক এখন।”
বলল রাজ।
তখন আসলাম বলার জন্য প্রস্তুতি নিলো।
কিন্তু পারলো না। বরকত ও মনসুর, তিনজন পুলিশকে সাথে নিয়ে সোজা কবরস্থানে চলে এলো। খালেদ ও আসলাম পালাতে দৌড় দিলো। পারলো না। রাজ ও বাদশা খরগোশের মতো তিনলাফ দিয়ে ধরে ফেলল দুজনকে।
পুলিশ তাদের হাতে হাতকড়া পরিয়ে ফেললো। বাদশাকে দিয়ে মৃত ব্যক্তির কিছু হাড়গোড় তুলে নিলো ব্যাগে করে।
রাজের দিকে চেয়ে বড় দুই ভাই ঘৃণামিশ্রিত নির্বাক কণ্ঠে বললো,
“এই প্রতিদান দিলি মায়ের পেটের ভাই হয়ে? এমন জানলে তোকে ছোট থাকতে পুকুরে ফেলে মেরে ফেলতাম।”
“পাপ করেছেন। এবার তার সাজা পেতে চলে যান আসল ঠিকানায়। পুলিশকে আমি খবর দিইনি।”
তারা কাতর স্বরে পুলিশদেরকে অনুনয় করে বললো,
” থানায় নেওয়ার আগে আমাদের কথা শুনুন।”
“যা বলার আদালতে বলবেন। আপনাদের নামে মানুষ হত্যার মামলা হয়েছে। চলুন।”
কাচারিঘরের উঠানে পুলিশের গাড়ি অপেক্ষা করছে। তালুকদারসহ বাড়ির সবাই সেখানে জড়ো হয়ে আছে। সুমনা ও ডলি কান্নায় ভেঙ্গে পড়লো নিজের স্বামীকে জড়িয়ে ধরে। পুলিশ, খালেদ ও আসলামকে টেনে গাড়িতে তুলে ফেললো। সুফিয়া বিবি দুই ছেলের মাথায় হাত বুলিয়ে দিলেন নিরব অশ্রু ফেলতে ফেলতে। তালুকদার মূর্তির ন্যায় দাঁড়িয়ে রইলেন। তিনি পাহাড়ের মতো অবিচল ও পাথরের মতো শক্ত হয়ে দাঁড়িয়ে আছেন। ছেলেদের সাথে কোন কথা বললেন না। তারাও পিতার দিকে তাকালো না।
শিখা ও ফুল গুটিসুটি মেরে গাছের আড়ালে দাঁড়িয়ে রইলো। খালেদ ও আসলাম আজরাইলের মতো করে শিখার দিকে তাকালো এক পলক। আসলাম দাঁতে দাঁত পিষে গোপনে উচ্চারণ করলো,
“একবার যদি ছাড়া পাই,দুই ভাই তোরে উদাম কইরা ডাইরেক্ট একশান নিমু। মনে রাখিস রুপসী মা * গী।”
সুমনা, ডলি ছুটে গিয়ে রাজের পায়ে পড়ে বললো,
“এমন নিষ্ঠুর হইয়েন না ছোট ভাই। আপনার ভাইদের বাঁচান।”
রাজ পা সরিয়ে অন্যদিকে সরে গেলো। ভার কণ্ঠে মনসুরকে জিজ্ঞেস করলো,
“কাকা এত রাতে আপনারা কীভাবে খবর পেলেন?”
“বরকত গিয়া কইলো আমাদের। তখন আমরা সাথে সাথে থানায় চইলা গ্যাছি বাবা।”
“আচ্ছা দিনে আলাপ হবে৷ আপনারা এখন চলে যান।”
মনসুর, তারসাথে আসা লোকজন নিয়ে চলে গেলো তাদের বাড়ি। রাজ বরকতকে জিজ্ঞেস করলো,
“তোকে কে আদেশ দিলো তাদের বাড়ি যেতে?”
“ভাবি।”
নোয়ানো স্বরে উত্তর দিলো বরকত।
রাজ ঘাড় ঘুরিয়ে শিখার দিকে চাইলো। সবাইকে বললো ঘরে গিয়ে শুয়ে যেতে। সবাই চলে গেলো। শিখাও দোতলায় চলে গেলো।
বাদশা রাজের কাছে এসে চাপাস্বরে জিজ্ঞেস করলো,
“ভাই কখন আইলেন বাড়ি? আপনারে কবরের কথা কে কইলো? ভাবি?”
“হুম। কিন্তু কবরের বিষয়ে সে কিছুই বলেনি। আদুরী ঘরের দরজা খুলে দিলো। আমি দোতলায় গিয়ে রুমে ডুকে মানিব্যাগ রেখে নিচে নেমে এলাম। তোর ভাবির রুমে গিয়ে ওকে দেখতে না পেয়ে সব রুমে খুঁজলাম। পরে মাকে জিজ্ঞেস করলাম। মা উঠে গিয়ে বাবাকে বললো। এভাবে সবাই জেনে গেলো। সবাই মিলে উঠানে বের হলাম। রান্নাঘরে গিয়ে দেখলাম মতির মা চাচী একাই ঘুমিয়েছে। পরে তোর থাকার ঘরের সামনে গেলাম সবাই। দরজায় টোকা মারতেই তোর বউ উঠে এসে দরজা খুলে দিলো। পিছন দিয়ে শিখা উঠে এলো। আকস্মিকভাবে আমাকে দেখে তারা দুজনই ভড়কে গেলো।
তখন শিখা বললো,
” আপনাদের বাড়ির শেষ মাথার বাগানের, শেষ মাথায় আছে বাদশা ভাই। ফুল একা বলে আমাকে তার কাছে রেখে গেলো।”
কারণ জিজ্ঞেস করলাম। বললো,
“গেলেই দেখতে পাবেন। আপনার বাকি দুইভাইও আছে সেখানে। পরে আমার সাথে সবাই আসতে চাইলো। আমি আনিনি। সবাইকে উঠানে দাঁড় করিয়ে আমি একাই গেলাম। বুঝলি?”
“বুঝলাম।”
বাদশা চলে গেলো তার থাকার ঘরে। রাজ ঘরে ঢুকে কারো সঙ্গে কোন কথা বলল না। ভারি ভারি পায়ে উপরে চলে এলো। শিখাকে জিজ্ঞেস করলো,
“মনসুর কাকার কাছে বরকতকে কখন পাঠালে?”
“আপনি বাগানের দিকে যাওয়ার পর।”
“আগে পাঠালে না কেন?”
“আপনাকে দেখার পর সাহস দুঃসাহসে পরিণত হলো। যেটা তার পূর্বমুহূর্তে ছিল না। ঘটনা এতক্ষণে জেনে গিয়েছেন নিশ্চয়ই।”
“হুম। তবে এটা আমি কল্পনাই করতে পারিনি। আমার ভাইদের দ্বারা এত বর্বরোচিত ঘটনা ঘটতে পারে। ভেবেছিলাম বাদশার কোন কুকীর্তি। তাই তারা দুইভাই তাকে ধরতে গিয়েছে। বা শাস্তি দিতে গিয়েছে।”
“আপনি কি আমার উপর মনঃক্ষুণ্ন?আর ঢাকায় কবে এলেন?”
রাজ শিখাকে টেনে নিজের বুকের ওমে মিশিয়ে নিলো। সারাগালে উষ্ণ অধরের পরশ বুলিয়ে দিতে দিতে বললো,
“একদম নাহ। বরং তাদের পুলিশে সোর্পদ করা আরো আগেই দরকার ছিলো। আমি গতকাল এসেছি। এসেই জানতে পারলাম তুমি বাড়িতে এসেছে। দেরি কি সহ্য হয় আমার? আর মায়ের অসুস্থতার কথাও জানতে পারলাম। ও হ্যাঁ, আদুরীর মেয়ের জন্য একটা চেইন এনেছি। সকালে দেখাবো তোমাকে। একটা মাত্র ভাগনি আমার। এই প্রথম মামা হলাম।”
“বেশ করেছেন। আমি কয়েকবার এটা ভেবেছি। আমি একা আর কী দিবো। তাই শুধু দুইসেট বেবিড্রেস নিয়ে এসেছি তাওয়েলসহ।”
“তোমার স্থানে তুমি ঠিক করেছো। আচ্ছা আমি বাবা হবো কবে?”
“আল্লায় জানে। আমি জানি না।”
“কেবল আল্লায় জানলে হবে প্রজাপতি? তোমারও জানতে হবে যে?”
শিখা রাজের শার্টের বোতাম খুলতে খুলতে গলায় উদ্বেগ ঢেলে বললো,
” বাদ দেন একথা। আচ্ছা,এখন উনাদের কী সাজা হবে? আপনি কী উনাদের জামিনের ব্যবস্থা করবেন?”
রাজ ভ্রু কুঁচকে হাসলো। বলল,
“ওকালতি পড়ছো তুমি। আর জিজ্ঞেস করছো আমাকে? দেশের প্রচলিত ‘ল’ অনুযায়ী হ* ত্যার সাজা যা হওয়ার তাই হবে। তাদের বউরা যদি কোন লইয়ার নিযুক্ত করে। করবে। সেটা তাদের বিষয়। আমার কিছুই করার নেই।”
শিখার ঠোঁটের আগায় একটা বাক্য এসে ভর করলো। তার জিজ্ঞেস করতে ইচ্ছে করছে রাজকে,
আপনিও কি কোন দুই নাম্বার কাজের সাথে জড়িত? কিন্তু বলল না। এতদিন পর তার প্রাণের মানুষটা কাছে এলো। চাক্ষুষ প্রমাণ না পেয়ে এভাবে জিজ্ঞেস করা সমীচীন হবে না। শিখা গিলে ফেললো বাক্যটা। যে মানুষটার জন্য তার একটা নিশ্চিত ও উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ গড়তে যাচ্ছে, তাকে হুট করে কিছু বলে আঘাত করা অনুচিত।
রাজ ফ্রেস হয়ে নিলো। শিখাকে কোলে তুলে পালংকের উপরে শুইয়ে দিলো। নিজেও লুঙির কুচি আগলে তুলে শুয়ে পড়লো। কাত হয়ে শিখার কানের নরম লতিতে আলতো কামড় বসালো।
রোমাঞ্চিত স্বরে জানতে চাইলো,
“আমাকে কখন কখন মনে পড়তো?”
“যার বাস আমার হৃদয় কুঠুরিতে। তাকে আলাদা করে মনে পড়ার কারণ নেই। সেতো মিশে আছে আমার প্রতি মূহুর্তের কল্পনায়।”
“যুক্তি চমৎকার। মনঃপূত হলো।”
“একই জিজ্ঞাসা,আমারও। উত্তর দিন।”
রাজ শিখার খোলা পেটে হাত রেখে নাড়াচাড়া করতে করতে বললো,
“মিশে আছো নিঃশ্বাসে। ভোলার নেইতো সুযোগ।”
“হাত সরান। ফাজলামো করছেন কেন?”
রাজ শিখার পেট থেকে হাত সরিয়ে নিলো। কাঁধ থেকে চুল সরিয়ে ঘাড়ে ঠোঁট চেপে ধরে বলল,
“ফাজলামো করবো কেন? সুখপান করছি সুখপেয়ালা হতে। ভালই নাদুসনুদুস হয়েছো। এখন মজা হবে ডাবল ডাবল।”
পরেরদিন সকালে নাস্তা খাওয়ার পর রাজ ভাগনিকে কোলে নিয়ে গলায় চেইন পরিয়ে দিলো। এতে আদুরীসহ সবাই বেশ খুশী হলো। তারপর রাজ চাচীর সাথে গিয়ে দেখা করলো। জুবায়েরের বিষয়ে অনেক কথা বললো দুজনে। সে আমেনাকে আস্বাস দিলো যে করেই হোক জুবায়েরকে দেশে আনবে ও বিয়ে করাতে রাজী হবে। আমেনাও ভরসা পেলো ভাতিজার কথায়।
তারপর রাজ গিয়ে মায়ের পাশে বসলো। মাকে অনুরোধ করলো তাদের সাথে ঢাকায় যাওয়ার জন্য। সে উন্নত চিকিৎসা করাবে মাকে। কিন্তু সুফিয়া নাছোড়বান্দা। তার হাতে গড়া সংসার ফেলে সে কোথাও যাবে না। দুই ছেলে জেলে। তারজন্য সে মানসিকভাবেও মর্মাহত! পযুদস্ত! কাহিল!
তার বিশ্বাস, সে শহরে গেলে আর বেঁচে ফিরবে না। রাজ হতাশ মনে মায়ের পাশ হতে উঠে গেলো।
সেদিন বিকেলে রানির গলা ফাটা চিৎকার শুনে সবাই বেরিয়ে গেলো ঘর হতে। রাজ শিখা কেউই বাকি রইলো না সুফিয়া বিবি ছাড়া। পুকুর পাড় ঘেঁষা বাগানের ভিতর রানিকে দেখতে পেলো তারা। তার লম্বা চওড়া দেহখানি গড়াগড়ি করছে ময়লা পাতার স্তুপের উপর।
“কী হয়েছে?”
জিজ্ঞেস করলো সবাই।
রানি সীমাহীন যন্ত্রণায় কোঁকাতে কোঁকাতে পরনের কাপড় কিছুটা উপরে তুলে তার পায়ের গোড়ালি দেখিয়ে বললো,
“কালসাপে ছোবল মারছে আমার ঠ্যাংগে। ওমাগো! আল্লাহগো! মইরা যাইতেছিগো মা।”
রাজসহ সবাই দেখলো সত্যি তার পায়ে সাপের ছোবল। কিন্তু আশেপাশে কোন সাপ নেই। রাজ হেঁড়ে গলায় বরকতকে ডাক দিলো। বললো,
“দৌড়ে যা। অলি ওঝাকে নিয়ে আয়। যা। কুইক।”
বরকত লুংগি হাঁটুর উপর তুলে দৌড়াতে লাগলো। আমেনার নির্দেশ পেয়ে আদুরি, ফুল, ডলি মিলে এক টুকরো পাটের দড়ি খুঁজে বের করলো। শক্ত করে রানির পায়ের হাঁটু থেকে শুরু করে পাতা অবধি পেঁচিয়ে পেঁচিয়ে বেঁধে ফেললো। ফুল দৌড়ে গিয়ে সামনের উঠানে বড় একটি পাটি বিছিয়ে নিলো। বাদশা,
আদুরী,সুমনা,ডলি, শিখা মিলে রানিকে ধরাধরি করে উঠানে,নিয়ে গেলো। রাজ স্পর্শ করল না রানিকে। সে তাদের সাথে সাথে উঠানে গেলো।
আদুরী দরদ মেশানো আহত গলায় বললো রানিকে,
“ভাবি আল্লাহকে ডাকো। কেন গেছিলা সেখানে? কীভাবে সাপে দংশন করলো তোমারে?”
“কুত্তায় কামড়াইছে আমারে। পাকা আতাফল দেখতে গেছিলাম। পাতার ভিতরে সাপ আছিলো। তার গায়ে আমার ঠ্যাং পড়তেই সে মাথা তুইলা আমার ঠ্যাংগে পটাপট ছোবল মাইরা চইলা গ্যালো অন্যদিকে। এই সাপরে না মারলে বিপদ আছে কইলাম।”
মুখ বিকৃত করে বলল শিখা।
“কুত্তায় কামড়াইলে ত বাঁচতি। কি হাপ চিনবার পারছস? ঢোঁড়াহাপ নি?”
“নাগো চাচী। ডেঞ্জারাস সাপ এইটা।”
মতির মা তার জানা ঘরোয়া টোটকা প্রয়োগ করছে রানীর শরিরের উপরে। আদুরী তার মাকে আস্তে আস্তে উঠানে নিয়ে একটি মোড়ায় হেলান দিয়ে বসিয়ে দিলো। রাজ একটি চেয়ার নিয়ে মায়ের কাছে বসলো। মায়ের মাথাকে নিজের বুকের দিকে হেলান দিয়ে নিলো আরাম দেওয়ার উদ্দেশ্যে।
বরকত, ওঝাকে নিয়ে আসলো। ওঝা তার হেকিমি চিকিৎসা শুরু করলো। কিন্তু লাভ হলো না। ততক্ষণে সময় গড়ালো বেশ কিছুক্ষণ। মুখ দিয়ে ফেণা বের হয়ে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লো তালুকদার পরিবারের অনেকের প্রিয় নিঃসন্তান বড়বধূ রানী।
রাজবধূ ৭৪ পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক করুন
"আলোর পথ"-এ প্রকাশিত গল্পসমূহ ও লেখনী মূলত পাঠক, শুভাকাংখী এবং সম্মানিত আবেদনকারীদের কাছ থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। এই কনটেন্টগুলোর উপর আমরা কোনো মেধাসত্ত্ব (copyright) দাবি করি না। যদি কোনো গল্প, ছবি বা তথ্যের কপিরাইট সংক্রান্ত বিষয়ে আপনার প্রশ্ন, সংশয় বা আপত্তি থাকে, তাহলে অনুগ্রহ করে আমাদের যোগাযোগ পৃষ্ঠায় যোগাযোগ করুন। আমরা যথাযথ আইনানুগ পদ্ধতিতে বিষয়টি পর্যালোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।