রাজবধূ পর্ব ১১ (রেহানা পুতুল)

রাজবধূ ১০ পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক করুন

শিখা নির্বিকার! একাধিক প্রশ্নবাণে তার হৃদয়টা ছিন্নভিন্ন হয়ে যাচ্ছে। হায় খোদা! দয়া করুন! সামান্য একটা ডালের আঘাতে একজন পুরুষ মরে গেলো? কিন্তু অতদূরে নির্জনে জঙ্গলে তার মৃতদেহ কিভাবে গেলো? আর চিরকুট দেওয়া সেই আড়ালের ব্যক্তিটিই বা কে? সে কিভাবে রাতের বিষয় জানলো? কি হচ্ছে এই বাড়িতে এসব? এতো দেখি সবই রহস্য আর ধুম্রজালের খেলা। শান্তি কোথায় এই বাড়িতে?

ঘরের ভিতরে কেউ নেই তেমন। সবাই ঘরের দাওয়ায়,উঠানে। শিখা ত্রস্ত পায়ে নিজের রুমে গেলো। দরজা বন্ধ করে দিলো। বালিশের নিচ হতে চিরকূটটি বের করে আবার বার দুয়েক পড়লো। খানিক সময় কিছু একটা চিন্তা করে ছিঁড়ে কুচি কুচি করে ফেলল। মুঠিতে ধরে রাখলো ভালো করে। জানালায় গা ঘেঁষে দাঁড়িয়ে বাইরে এদিক সেদিক দৃষ্টি ঘোরালো। যদি সেই চেনা আগুন্তকের দেখা মেলে। নাহ! কোন মানুষের চিহ্নটুকু নেই। শিখার ক্ষীণ আশাটুকুও শূন্যতায় পৌঁছে গেলো।

দরজা খুলে সাবধানী হয়ে নলকূপে চলে গেলো। পাইপের মুখে সেগুলো রেখে ভরা বালতির সব পানি গড়গড় করে ঢেলে দিলো। চলে গেলো চিরকুটের সব ছেঁড়া টুকরোগুলো। শিখা মুখ দিয়ে স্বাস ফেলার ভঙ্গি করলো।

ফিরে গিয়ে ঘরের সামনের দরজায় লোহার গেটের একপাশ হয়ে দাঁড়িয়ে রইলো মাথা ঢেকে। নিজের রুমে ঘাপটি মেরে বসে থাকাটা বেমানান দেখায় এসময়ে। যেমনই হোক এটা একটা উটকো বিপদ হয়ে গেলো তালুকদার পরিবারের জন্য। শিখা সবার কথা শুনতে পাচ্ছে।

ছোট তালুকদার অর্থাৎ শিখার চাচা শ্বশুর খায়রুল তালুকদার বড় ভাই জয়নুলকে বলল,

“মিয়াভাই লা*শ মাটির উপরে বেশি সময় রাখন ঠিক না। তারে তার বাড়িতে নেয়ার বন্দোবস্ত করতে হইবো। ”

“হ্যাঁ। তাদের বাড়িতে খবর নিয়া বাদশা গ্যাছে। আর এম্বুল্যান্স আনতে লোক পাঠাইছে রাশেদ।”

একটু পর এম্বুল্যান্স চলে এলো। সবাই চাদরে ঢাকা ফাটা হাসুকে এম্বুল্যান্সে তুলতে গ্যালো। তখনই একপাশে মাটির উপরে বসা থেকে সুফিয়া বিবি গলা ঝাঁকিয়ে বাষ্পরুদ্ধ কন্ঠে বলে উঠলেন,

” খবরদার কইছি। কেউ এখন আমার ভাইরে গাড়িতে তোলার চেষ্টা করবা না। কল্লা ফালায়া দিমু। একবছর বাদে আমার ভাই বোনের বাড়িতে আইলো জীবন দেওনের লাইগা? আমি থানায় লোক পাঠাইছি। পুলিশ নিয়া আসতেছে। পুলিশ তদন্ত কইরা কউক আগে ক্যামনে মরলো আমার ভাই।”

সবাই থেমে গেলো। জয়নুলও তাদের ইশারা দিয়ে থামতে বলল। শিখার আত্মারাম খাঁচা ছেড়ে পালাবার পথ খুঁজছে। না জানি কি হবে এবার। একটু পর সীমান্ত তিনজন পুলিশ নিয়ে এলো। শিখা সীমান্তকে দেখে তব্দা খেলো। এ খবর পেলো ক্যামনে? মনে হয় লোক পাঠাইছে হেগো বাড়ি। তাইলে এদের বাড়ি মনে হয় বেশি দূরে হইব না। বাদশাও এসে পড়লো। তার সঙ্গে সুফিয়া বিবির বাবার বাড়ির দু’চারজন পুরুষও দেখা গেলো। উঠান ভর্তি শত শত মানুষের জটলা।

একজন পুলিশ কর্মকর্তা হাসুর গায়ের উপর থেকে চাদরটি সরিয়ে নিলো। তারা তিনজন সুক্ষ্ম চোখে হাসুর আপাদমস্তক পর্যবেক্ষণ করে দেখলো। সুফিয়া বিবি তীর্থের কাকের মতো তাদের মুখ থেকে কিছু শোনার অপেক্ষায়। তারপর পুলিশ কনস্টেবল দুজন বলল,

” যেখানে লা*শ পাওয়া গিয়েছে। সেখানে নিয়ে চলুন আমাদের।”

বাদশা,বরকত নিয়ে গেলো তাদের। সীমান্তও গেলো। সীমান্ত হলো সুফিয়া বিবির অনুগত ভাগিনা। তাই বড় মামীর আদেশ তার কাছে শিরোধার্য। যেমন করে খবর পেয়েই সে ছুটে এলো হাওয়ার বেগে নানার বাড়ি। তার পুলিশের সঙ্গে সঙ্গেও থাকতে হবে। কেউ কিছু বলে কিনা পুলিশকে, তা শোনার জন্য।কাজের লোকদের বিশ্বাস নেই। এরা দু’মুখো সাপের মতো। সবদিকে তাল মিলায়া বাতাস দেয়।

পুলিশের পিছনে পিছনে আরো কিছু এই বাড়ির ওই বাড়ির নারী,পুরুষ, ছেলেমেয়েরা গেলো। সেই স্থানটি পুলিশ সাঁড়াশি অভিযানের মতো দেখলো। ফিরে এসে হাসুকে থাকতে দেওয়া দোতলার রুমে গেলো পুলিশেরা। ঘরের বাকি রুম ও আশপাশ ভালো করে দেখলো।

অবশেষে তারা উঠানে এসে দাঁড়ালো।

রাশভারি কন্ঠে পুলিশ কর্মকর্তা বলল,

“কেউ উনাকে খু* ন করেনি। অতিরিক্ত মদ্যপানে তার বমি হলো। এবং জ্ঞান হারিয়ে মারা গেলো। জংগলের সেখানে বমির নমুনা পাওয়া গিয়েছে। বমি হয়ে বের হওয়া ভাতগুলো কাক বা পাখিরা খেয়ে ফেলেছে। কিন্তু ছোপছোপ দাগের দেখা মিলেছে। ”

সুফিয়া বিবি ক্ষোভ ও অনুযোগের সুরে বলল,

“পুলিশ সাব, নেশা করলে রাইতের কালে ওতদূরে যাইব ক্যান? বাড়িতে কি যায়গার অভাব আছে নাকি তাড়ি খাওনের? আমার ভাইরে কেউ সেখানে নিয়া মাইরা ফালাইছে? ভালো কইরা তদন্ত করেন।”

“আমরা তার শরীরের কোথাও কোন জখম পাইনি। মদের দুর্গন্ধ পেয়েছি তার শরীর থেকে। তবুও সন্দেহভাজন কারো নাম বলতে পারেন আপনি। আমরা তাকে থানায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করবো।”

সুফিয়া বিবি সবার দিকে নজর বুলিয়ে নিলেন একবার। বেদনার্ত স্বরে বললেন,

“আপনারা চইলা যান। খোদার কাছে আমি নালিশ দিয়া রাখলাম।”

পুলিশ চলে গেলো। হাসুকে এম্বুল্যান্সে তোলা হলো। সুফিয়া বিবি বোরকা পরে বের হয়ে গেলো। একে একে ঘরের সবাই লা*শের সঙ্গে রিকসা,বেবিট্যাক্সি নিয়ে চলে গেলো। সীমান্তও চলে গেলো মামীর বাবার বাড়ি। শিখা নিজের রুমে গিয়ে দপ করে বসে পড়লো। জোরে নিঃশ্বাস ফেললো। আল্লাহকে স্মরণ করলো কৃতজ্ঞতার সঙ্গে। সুফিয়া বিবির মতো সেও বিশ্বাস করে কেউ হাসুকে সেখানে নিয়ে মেরে ফেলেছে। কোন অলৌকিক কারণে এটা এখন ধামাচাপা পড়ে গিয়েছে। শিখা রুম হতে বের হয়ে গেলো মতির মাকে খোঁজার উদ্দেশ্যে। দেখলো সে ঘরের ভিতরেই আছে। সুফিয়া বিবির বিছানা ঝাড়ছে নারকেল শলার ঝাড়ু দিয়ে।

শিখা রুমের দরজায় দাঁড়ালো। কিছু বলল না। মতির মা তার উপস্থিতি টের পেলো। বিছানা ঝাড়তে ঝাড়তে আহত সুরে বলল,

” হায়রে রঙ তামাসার দুনিয়া। কত খেল তুমি দেখাও খোদাগো। ব্যাটা আইলো জিন্দা। গ্যালো মরা। আহারে বইন। হউক সৎ বইন। বইনতো একই বাপের জন্ম দেওয়া। রাজের বউ কিছু কইবা?”

“খালা উনারা মনে হয় সবাই চইলা গ্যাছে। আমারে ঘর বাড়ি সব চিনায়া দেন না এই সুযোগে। ”

আর্তির সুরে ছোট্ট করে বলল শিখা।

“ভালো কথা মনে করছো। এরা কেউ কেউ লা*শ মাটি হইলেই চইলা আইবো। খাড়াও আগে এক চক্কর মাইরা দেইখা নিই কে আছে না আছে ঘরে।”

শশব্যস্ত হয়ে মতির মা আড়ালে থেকে সব দেখে নিলো। শিখা পূর্বের স্থানেই দাঁড়িয়ে রইলো। মতির মা ফিরে এসে শিখাকে বলল,

“আসো আমার লগে। সব দেইখা লও। আইজকার মতন সুযোগ আর কোনকালে হয় কে জানে। ভাবির মন রাখনের লাইগা সবাই গ্যালো। নইলে বউয়েরাও যাইতো না।”

মতির মা হেঁটে হেঁটে শিখাকে ঘরের ভিতর সব রুম দেখাচ্ছে।

“এটাতো তোমার হড়ির শয়ন ঘর। চিনই। এইটা রাশেদ, মানে তোমার বড় ভাসুরের শয়ন ঘর। এইটা খালেদ, তোমার মাইজ্জা ভাসুরের শয়ন ঘর। এইটা হইলো আসলাম, তোমার সাইজ্জা ভাসুরের শয়ন ঘর। রাশেদ ছাড়া বাকি তিন ভাই শহরে ব্যবসা করে।এদিকে আসো। এইটা হইলো তোমার ননদ আদুরীর শয়ন ঘর। এইটা হইলো তোমার শ্বশুরের শয়ন ঘর। আর পাটিশনের ওইপাশে হইলো তোমার চাচাশ্বশুরেরা থাকে। ল যাই। হেরাতো আর কেউ যায়নাই। সবাই মনে হয় আছে।”

“খালা উনাদের সাইড দেখছি। দেখা লাগব না আর।”

“ওহ। তাহলেত ভালাই। হেগো এক শয়ন ঘরে থাকে ছোড় ভাবি। আরেক শয়ন ঘরে থাকে হের মা হারিছা খালা। আরেকটায় থাকে ছোড় তালুকদার। আরেকটাতে জুবায়ের থাকে।”

শিখার মনের ভিতর আকুলিবিকুলি করছে একটা বিষয়। সে আগ্রহকে না দমাতে পেরে জানতে চাইলো,

“উনার থাকার রুম নাই?”

“কার রাজ? থাকব না ক্যান? তার রুম উপরে। দোতলায়। এইটা দোতলা ঘর না? নিয়া যামু।”

শিখার মুখ উজ্জ্বল হয়ে উঠলো। ঘরের ভিতরের সিঁড়ি ডিঙিয়ে শিখাকে নিয়ে মতির মা উপরে গেলো। রাজের রুমের সামনে গিয়ে দরজার ঝুলানো তালা ধরে বলল,

“এইটা রাজের রুম। যাওনের সময় তালা দিয়া যায় সব সময়। জানালার গ্লাস সরায়া ভিতরে দেখতে পারবা। যাও দ্যাখো।”

শিখা দরজা অতিক্রম করে কয়েক হাত এগিয়ে যায়। মতির মা এসে থাইগ্লাসের জানালার একপাশ ঠেলে দেয়। শিখা জেলখানার আসামির মতো জানালার ফাঁক দিয়ে রাজের রুমের ভিতরে দেখে বিমুগ্ধ নয়নে। ওমা! এত্ত সুন্দর উনার রুম। কি সাজানো গোছানো। বাগানের মতো। সবই ত আছে রুমে দেখি।

সে হতাশ কন্ঠে মতির মাকে বলল,

“কি আজগুবি কথা কন ত খালা। আমার কি পুরা দুই বছর ওই পুরানা রুমেই থাকতে হইবো?’

” সেইটা ত জানিনা মা। হ আজবই। স্বামীর রুম রাজাগো মতন। বধূর রুম বান্দিগো মতন। ল এদিকে আসো।”

শিখা দুঃখভরা নিঃশ্বাস ফেলে এগিয়ে গেলো মতির মায়ের পায়ে পায়ে।

“এইটা হইলো হেগো বৈঠকখানা। এখানে বেশি রাজ আর জুবায়েরের লোকজন আসে। আর নিচের বড় বৈঠকখানায় হেগো বাপেরগো লোকজন আসে। এইটা হইলো অতিথি ঘর। এইটাও অতিথি ঘর। অতিথির লেভেল বুইঝা থাকতে দেওয়া হয়। কাইল এইটাতেই ছিলো হাসু। মরতেই ব্যাটা বাইর হইছিলো। এইটা হইলো টাট্টিখানা। এইটা গোসলের রুম। রাজের রুমের লগেও একটা আছে গোসলখানা। বারান্দায় আসো। বাইরে দেখাই।”

শিখা বৈঠকখানা,ও দুটো অতিথি রুম দেখলো ঘুরে ফিরে। ওয়াশরুম ও শাওয়ার রুম দেখলো ঢুকে। সামনের বারান্দায় এসে দাঁড়ালো। উপর থেকে চারপাশ দেখতে বেশ লাগছে তার। ছবির মতো সব। মতির মা বলল,

“ওই যে একটা হাফ টিনের ঘর দেখতাছো। এইটা হইলো ধানের গোলা। কানি কানি ধানি জমি আছে তালুকদারগো। বছরে দুইশো মন ধান তোলে গোলায়। তখন চরের থেইকা দশ পনেরজন কামলা আসে। তারা কাচারি ঘরে থাকে। ওই যে বাড়ির সামনে একটা ফুল টিনের ঘরের পিছন অংশ দেখা যায়। ওইটা হেগো কাচারি ঘর। এখানে সালিশ,বিচার হয় মাইনষের জায়গা জমি নিয়া। এদের নগদ টাকার চাইতে সম্পদ বেশি। এর লাইগাই ত হেরা তালুকদার।”

“নিচে যাইবা? না আরো খাড়াইবা এইখানে?”

“নাহ। চলেন নিচে যাই। খালা এদের মামু যে মরলো। ঢাকা খবর দেয়নাই?”

“এইটা আমি জানিনা।”

দুজনে নিচে নেমে যায়। সামনের উঠান ঘুরে পিছনের উঠানে যায়। সেখানে আমেনা চাচী ও তার মা হারিছা খাতুনও ছিলো। মতির মা শিখাকে বলল,

“ঘরের কামের আমাদের ত চিনই। আমি ফুলবানু,বরকত বাদশা। দরকার পড়লে আরো জুইটা যায় হ্যাগো কাজের লোক। তবে সবচাইতে আমি হইলাম পুরানা আর বিশ্বস্ত। নাগো ছোড়ভাবি?”

“হ। এইটা সত্য। আমাগো বাড়িতে মতির মা অনেক বছর ধইরা আছে। এখন নিজের হইয়া গ্যাছে বলা যায়। ”

বলল আমেনা বেগম।

মতির মা রান্নাঘরে প্রবেশ করলো। গলা হাঁকিয়ে ফুলবানুরে ডেকে বলল,

“ও ফুল, রাজের বউরে দুইটা পুকুর দেখায়া আন পাড় ঘুরায়া। বাগিচাও দেখায়া দিস।”

মতির মা রান্নার কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়লো। ফুলবানু হাতের কাজ শেষ করে শিখাকে ডাকলো।

“আসেন ভাবি।”

শিখা চঞ্চল পায়ে এগিয়ে যায়। গল্প করতে করতে তারসঙ্গে যায় আমেনা ও তার মা। তখন ফুলবানু বলল,

“তাইলে আমি যাই। ছোট চাচী ত আছেন। দেখাইতে পারবেন। বহুত কাম আমার। তিনবিবি চইলা যাই চাপ বাইড়া গ্যালো আমাগো উপরে।”

“হ তুই যা। রান্ধন শেষ কর মতির মায়ের লগে হাত লাগায়া।”

বলল আমেনা।

“নানুকে ধইরতে হইবো? নানু?”

শিখা আন্তরিক গলায় জিজ্ঞেস করলো হারিছা খাতুনকে।

“না বইন। তোমার চাইতে আমার জোর বালাই।”

শিখা আলতো হাসলো। অপলক নয়নে দৃষ্টিতে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে দেখতে লাগলো সব। তারকাছে সব স্বপ্নের মতো মনে হচ্ছে। এতবড় বাড়ি,এত জায়গা জমির মালিক এরা। গাছভরা ফল,পুকুর ভরা মাছ, গোলাভরা ধান। কিভাবে তার বিয়ে হলো এই বাড়িতে। কোন যাদুবলে হলো নাকি। শিখা আনমনা হয়ে উঠে। অনেকসময় পরে তারা তিনজন নানান কথা বলতে বলতে বাড়ির অন্দরে প্রবেশ করলো।

শিখা রান্নাঘরে গিয়ে মতির মাকে বলল,

“খালা পুকুরের ঘাটে গিয়া গোসল করলে অসুবিধা আছে কোন?”

“নাহ। কিসের অসুবিধা। তবে ঝুপঝাপ কইরা চইলা আইসো। হেরা কেউ আইসা পড়বো। পশ্চিমের পুষ্কনীতে যাও। ”

শিখা ঘাড় হেলিয়ে রুমে যায়৷ কাপড় চোপড় নিয়ে শান বাঁধানো পুকুর ঘাটে গেলো। গোসল করে নিজের রুমে চলে এলো। শরীরটা একটু খারাপ লাগছে তার। দুদিন ধরেই তেমন কিছু খেতে ইচ্ছে করছে না। ভেঙ্গে ভেঙ্গে আসছে কেন জানি। গতরাত্রের ঘটনা মনে পড়তেই মানসিকভাবে বিধ্বস্ত হয়ে উঠলো শিখা। শরীরে নেমে এলো অবসাদ। চোখে নেমে এলো ক্লান্তিভাব।

” ওমা! গুন্ডার মতন আপনে এইখানে খাড়ায়া আছেন ক্যান?

পড়ন্ত দুপুরে ঘুম ভেঙ্গে গেলে শিখা আঁৎকে উঠলো। দেখলো সীমান্ত দরজায় দাঁড়িয়ে তার দিকে অবিকল চেয়ে আছে। চাহনি ক্ষুরধার ও ক্রোধান্বিত। সীমান্ত বিড়বিড়িয়ে বলল,

“আমি তোমাকে একটু ছুঁতে চাই শিখা। আপোষে দিবে? না জোর খাটাবো? তবে এটার জন্য তোমার রাজবর দায়ী। আমি নই একদম।”

“উনিই দায়ী? ক্যামনে? বুঝলাম না?”

ঢুলু ঢুলু চোখে ভয়ার্ত কন্ঠে জিজ্ঞেস করলো শিখা।

রাজবধূ ১২ পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক করুন

"আলোর পথ"-এ প্রকাশিত গল্পসমূহ ও লেখনী মূলত পাঠক, শুভাকাংখী এবং সম্মানিত আবেদনকারীদের কাছ থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। এই কনটেন্টগুলোর উপর আমরা কোনো মেধাসত্ত্ব (copyright) দাবি করি না। যদি কোনো গল্প, ছবি বা তথ্যের কপিরাইট সংক্রান্ত বিষয়ে আপনার প্রশ্ন, সংশয় বা আপত্তি থাকে, তাহলে অনুগ্রহ করে আমাদের যোগাযোগ পৃষ্ঠায় যোগাযোগ করুন। আমরা যথাযথ আইনানুগ পদ্ধতিতে বিষয়টি পর্যালোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

সম্পর্কিত পোস্ট

দুঃখিত!