মোয়েরাকি

না, মোয়েরাকি আসলে কোনো জায়গার নাম নয়, কতগুলো পাথরের নাম। এই মোয়েরাকি পাথরগুলোকে নিয়ে কিন্তু নিউজিল্যান্ডের আদিবাসীদের এক মিষ্টি পৌরাণিক গল্পও আছে। নিউজিল্যান্ডের আদিবাসীদের নাম মাউরি। ওরা বলে ওদের পূর্বপুরুষরা একেকজন ছিলো দৈত্যের মতো বিশাল। আর তাদের সেই দৈত্যের মতো বিশাল পূর্বপুরুষরা একবার আরাইতেউরু নামের এক  বিশাল নৌকাতে চেপে মহানন্দে নৌকা ভ্রমণ করছিলো। যেই না নৌকা মাতাকাএয়ার কাছে এলো, ওমনি বিরাট বিরাট তিনটা ঢেউ এসে সেই বিশাল নৌকা দিলো ডুবিয়ে। যে কয়জন বেঁচে গিয়েছিলো তারা পরে পাথর হয়ে যায়। সেই পাথরগুলোই পরে ওখানকার বিশাল বিশাল পাহাড়ে পরিণত হয়। আর নৌকার যে জিনিসপত্রগুলো ছিলো, সেগুলোই হয়ে যায় মোয়েরাকি পাথর।

 এমনিতেই তো সাগরের পাড়ের সবকিছুই সুন্দর। তার উপর এই মোয়েরাকি পাথরগুলোও কিন্তু কম সুন্দর না। আর এগুলোর কয়েকটা তো এতোই ভারি, ওজন হবে কয়েক টন! ১ টন মানে কিন্তু এক হাজার কেজি। সেগুলো প্রস্থে হয় ৩ মিটারের মতো। এখন প্রশ্ন হলো, পাথরগুলো কিভাবে তৈরি হলো। সাগরের তীরে কোনো একটা নির্দিষ্ট বিন্দুকে কেন্দ্র করে বালি ও বালি জাতীয় বিভিন্ন পদার্থ জমে জমে তৈরি হয়েছে এই পাথরগুলো। সাগরের স্রোত আর বাতাস মিলে বালিকে ঠেলে ঠেলে জড়ো করার কাজটি করেছে। ঠিক যেভাবে ঝিনুকের পেটে বালি জমে মুক্তো তৈরি হয়, ঠিক সেভাবেই। আবার সাগর তীরে পাথরের চাঙড় ভেঙে, ভাঙা অংশগুলো একসঙ্গে জড়ো হয়েও পাথরগুলো তৈরি হতে পারে। সেক্ষেত্রেও অবশ্য জড়ো করার দায়িত্ব পড়ে সাগরের স্রোত আর বাতাসের কাঁধেই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *