মুহাম্মাদ (সাঃ)-এর প্রেমের নিদর্শন
মক্কা নগরের কুরাইশরা হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ) এর নবুয়্যত প্রাপ্তির বছরে হাশিমীদের একযোগে ত্যাগ করার জন্য ওয়াদাবদ্ধ হল। সকল নেতা এক সাথে হয়ে একটি চুক্তিনামা করল। চুক্তিনামাটি হল, সমগ্র ব্যক্তি হাশিমীদের সাথে কোন প্রকার লেনদেন, বিবাহ, বেচা-কেনা এবং কথাবার্তা চিরতরে বন্ধ রাখতে হবে। এর বিপক্ষে কেউ যেন না যায়। তাঁদের এ চুক্তিনামা বায়তুল্লাহ শরীফের দরজার মধ্যে টানিয়ে রাখা হল।
এ চুক্তির কারণে হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ) এর চাচা আবু তালেব পড়ে গেলেন বড় ধরনের বিপদে। তিনি বাধ্য হয়ে হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ) এবং সম্পূর্ণ হাশিমী মুসলমানদের সাথে শা’বে আবু তালিব পাহাড়ি কিল্লায় অবরুদ্ধ হলেন। তাঁদের এ পরিস্থিতি তিন বছর পর্যন্ত স্থায়ী হল।
এ কারণে তাঁরা সকলেই পেটে ক্ষুধায় গাছের পাতা পর্যন্ত খেয়ে জীবন রক্ষা করতে হয়েছিল। অবশেষে হজ্জের সময়ে চতুর্দিক হতে লোকজন একত্রে মিলিত হলে হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ) তাঁদের মাঝে ইসলাম ধর্ম প্রচার করলেন আর তাঁর সাথে ছিলেন হযরত আবু বকর (রাঃ)। এ সময় যদি কোন রকম বিপদ হতো, তা হলে সে বিপদের ঝুকি নিতেন হযরত আবু বকর (রাঃ)।
হিযরতের ঠিক এক বছর আগে হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ) মে’রাজ শরীফ যান। আর সে মে’রাজের কথা যখন মক্কাবাসীদের কাছে বলা হল, তখন মক্কাবাসীরা এ মে’রাজের কথা নিয়ে বিদ্রূপ করতে আরম্ভ করল।
হযরত আবু বকর (রাঃ), আবু জাহল প্রমুখের মুখে এ কথা শুনে বললেন, “যদি হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ) এর কথা বলে থাকেন, তাহলে তিনি সত্য কথাই বলেছেন। আমি তাঁর কথা বিশ্বাস করি এবং দৃঢ় চিত্তে পালন করি।” হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ), হযরত আবু বকর (রাঃ) – এর কথা শুনতে পেয়ে তাঁকে খুব আনন্দের সাথে ‘সিদ্দীক’ উপাধিতে ভূষিত করেন। ঠিক সেদিন হতে তিনি আবু বকর সিদ্দীক নামে পরিচিত লাভ করেন এবং সুখ্যাতি অর্জন করলেন।