মিস্‌মিদের কবচ–নবম পরিচ্ছেদ

সেদিন সন্ধ্যার কিছু আগে আমি মহীন সেকরার সঙ্গে আবার দেখা করতে গেলাম। মহীন আমায় দেখে ভয়ে-ভয়ে একটা টুল পেতে দিল বসবার জন্যে।

আমি বললাম—মহীন, একটা সত্যি কথা বলবে?

—কি, বলুন !

—তোমার সঙ্গে ননীর ঝগড়া-বিবাদ হয়েছিল কিছুকাল আগে?

মহীন আমার দিকে অবাক হয়ে চেয়ে থেকে বললে—ননী বলেচে বুঝি? সব মিথ্যে কথা ওর বাবু, সব মিথ্যে।

আমি কড়াসুরে বললাম—ঝগড়া হয়েছিল তাহলে? সত্যি বলো!

মহীন চুপ করে রইল অনেকক্ষণ, তারপর আস্তে-আস্তে বললে—হয়েছিল বাবু, কিন্তু আমার তাতে কোনো দোষ…

—আমি সে-কথা বলি নি—ঝগড়া হয়েছিল কিনা জিগ্যেস করচি।

—হ্যাঁ বাবু।

—কি নিয়ে ঝগড়া হয়েছিল, বলো এবার!

—সোনার দর নিয়ে বাবু।

—আচ্ছা, তুমি শ্রীগোপালের কাছে ননী ঘোষের তাবিজ গড়ানোর কথা এইজন্যে বলেছিলে—কেমন, ঠিক কিনা?

—হ্যাঁ বাবু।

—তুমি তখন ভেবেছিলে যে, ননী ঘোষই খুন করেচে?

—তা—না—

—ঠিক বলো।

—না বাবু।

—তাহলে তুমিও যে দোষী হবে আইনত; তাই ভাবচো বুঝি?

মহীন সেকরা ভয়ে ঠকঠক করে কাঁপতে লাগলো, বললে—বাবু, তা—তা—

—তোমাকে গ্রেপ্তারের জন্যে থানায় খবর দেবো!

মহীন আমার পা জড়িয়ে ধরে বললে—দোহাই বাবু, আমার সব কথা শুনুন আগে। আপনি দেশের লোক—আমার সর্বনাশ করবেন না বাবু—কাচ্চা-বাচ্চা মারা যাবে।

—কি, বলো!

—তখন আমিও লুটের টাকা বলে সন্দেহ করিনি। কি করে করবো? বলুন বাবু, তা কি সম্ভব?

—তবে, কখন সন্দেহ করলে?

—বাবু, শ্রীগোপালই আমায় বললে, আপনি ননী ঘোষকে সন্দেহ করেন। তখন আমি ভাবলাম, গহনার কথাটা প্রমাণ না করলে আমি মারা যাবো এর পরে। তাই বলেছিলাম।

শ্ৰীগোপালের নির্বুদ্ধিতা দেখচি নানা দিক থেকে প্রকাশ পাচ্চে। যদি ওর বাবার খুনের আসামী ধরা না পড়ে, তবে সেটা ওর নির্বুদ্ধিতার জন্যেই ঘটবে।

গল্পের দশম পরিচ্ছেদ পড়তে এখানে ক্লিক করুন

সম্পর্কিত পোস্ট

দুঃখিত!