
এক ছিলো মুহিন……ক্লাস সেভেনে পড়ে। মা বাবার একমাত্র সন্তান সে। তাই খুব আদরের। তাদের বাসায় একটা কাজের বুয়া আছে। নাম ঝিংটা। মুহিন তার কাজের বুয়াটার নাম শুনলেই কেমন জানি চটে যায়। শুধু নামের জন্নে নয়, এমনকি ঝিংটা বুয়ার কাজের জন্নেও সে রেগে যায়। ঝিংটাকে তারা পেয়েছিলো বারির ছাদ থেকে। মুহিন তখন ঘুমুচ্ছিল। তার মা বাবা দুজনে যেয়ে ঝিংটাকে ছাদে আবিষ্কার করেন। ঝিংটা কে পাওয়ার পর তার মা বাবা দেখে সে ছাদে পড়ে ছিলো, জ্ঞান ফেরার পরে ঝিংটাকে সব জিজ্ঞেস করলে সে কিছুই বলতে পারেনা। তারপর সেদিন থেকে ঝিংটা মুহিনদের বাসার কাজের বুয়া। ঝিংটাকে দেখলে মুহিনের খুব হিংসা হয়। কারন, মুহিন তাকে কিছু বলার আগেই সে সব বুঝে ফেলে আর তাই করে দেয়। বেপারটা মুহিন বুঝতে উঠতে পারেনা। একদিন মুহিন মাঠে খেলতে গেলো তার বন্ধুদের সাথে। মুহিনের মা বলল ঝিংটার সাথে জেতে কিন্তু মুহিন কিছুতেই রাজি হয়না। শেষমেশ খুব কষ্টে মুহিনের মা মুহিনকে ঝিংটার সাথে জেতে রাজি করাল। মুহিন মাঠে খেলতে গেলে মুহিনের এক শত্রু বন্ধু তন্ময় তাকে খুব জোরে বল দিয়ে আঘাত করল। মুহিন মাটিতে পড়ে গেল, কিন্তু ঝিংটা চুপ করে থাকলো না, সে মুহিনের বন্ধুর দিকে এমনভাবে তাকালো যেন তন্ময় কে মেরেই ফেলবে। ভয়ে তন্ময় পালিয়ে গেলো। তারপর ঝিংটা দেখল মুহিনের মাথা থেকে রক্ত পড়ছে, সে তখনই মুহিনের মাথাত হাত বুলিয়ে দিলো কিনা মুহিনের মাথা থেকে রকত পড়া বন্ধ হয়ে গেলো, বিষয়টা মুহিনকে খুবই আকর্ষণ করল। কিন্তু মুহিন কিছুই বলল না। এর কিছুদিন পড়ে মুহিনের স্যার মুহিনকে পড়াতে বাসায় এলেন। কিন্তু সেইদিন মুহিন অঙ্ক পারলনা। স্যার এসে মুহিনকে অনেক বকাবকি করল। স্যারের পড়ানো শেষ হলে ঝিংটা এসে দেখে মুহিন মন খারাপ করে বসে আছে। তারপর মুহিনের কাছে সব শোনার আগেই সে মুহিনের সব অঙ্কের সমস্যা সমাধান করে দিলো। তারপর থেকে মুহিন খুব ভালো অঙ্ক পারতে লাগ্লো। শুধু তাই নয়, লেখাপড়ার পাশাপাশি মুহিন সব দিক থেকে ভালো করতে লাগলো। এখন ঝিংটার সাথে মুহিনের খুব ভালো সম্পর্ক হয়ে গেছে, মুহিন এখন ঝিংটাকে খুব ভালোবাসে এমনকি আদরও করে। কিন্তু হটাত একদিন ঝিংটা উধাও। খোজ খোজ কিন্তু কোথাও আর ঝিংটাকে পাওয়া জায়না। অবশেষে ছাদে দেখা গেলো ঝিংটাকে। কিন্তু ঝিংটা কেমন জানি মরার মত অসার হয়ে আছে, “কি হয়েছে ঝিংটা বুয়া?” মুহিন জিজ্ঞেস করল। কিন্তু কোনো কথা নেই। অবশেষে কত্থেকে একটা ফ্লাইং সসার এসে ঝিংটাকে তুলে নিয়ে গেলো। ঝিংটা যখন ফ্লাইং সসারে করে উরে জাচ্ছে তখন বিশাল কন্ঠে ঝিংটা মুহিনকে বলল, “মুহিন বাবা, ভালো থাকিস। পৃথিবীতে এসে তোকে মানুষের মতো মানুষ করাই ছিলো আমার মিশন। আমিই তোর আসল মা। তুই যখন খুব ছোটো ছিলি তখন এলিয়েন এসে আমাকে তুলে নিয়ে গিয়েছিলো তাদের দাসী বানাতে। আমি এখন চলে জাচ্ছি বাবা, ভালো থাকিস”। এই কথা বলে ঝিংটা চলে গেলো। আসলে ঝিংটার আসল নাম ছিলো রিমি, কিন্তু সেই রিমি আর কোনোদিনও ফিরে আসবেনা। মুহিনের খুব মন খারাপ হয়ে গেলো, চোখটা ভিজে ঝাপসা হয়ে এলো কিন্তু মুহিন কিছুই করতে পারলো না। ছুটে জেতে ইচ্ছে হলো তার মা রিমির কাছে কিন্তু পারলোনা। অবশেষে সে কাদতে কাদতে ঘুমিয়ে পড়ল। কিন্তু হটাত ঘুম থেকে উঠে দেখলো তার মা মানে রিমি তার পাশেই শুয়ে আছে। মুহিন দেখে খুশিতে লাফিয়ে ওঠে আর বলে “I love you মা” । তার মাও বলল “I love you too Muhin”। এরপর মুহিন সত্যি সত্যি ঘুম থেকে লাফিয়ে ওঠে, কিন্তু সে যেটা দেখল তার সবটাই ছিলো সপ্ন। মুহিন কোনোরকমে হাফ ছেরে বাচল। এরপর আস্তে আস্তে করে পা টিপে টিপে সে মায়ের ঘরে যেয়ে দেখল মা ঘুমাচ্ছে। এরপর সে মায়ের কপালে আলতো করে একটা চুমু দিয়ে আস্তে আস্তে বলল ” আমি তোমাকে খুব ভালোবাসি, মা। তুমি আমাকে ছেড়ে কখনই জেওনা। তুমি আমার কাছ থেকে দূরে চলে গেলে আমার খুব খারাপ লাগবে। আমি তোমার সাথে আর কখনই খারাপ ব্যাবহার করবনা, এই প্রমিস মা”, এই বলে সে মাকে জরিয়ে ধরল। –সংগৃহীত