প্রযুক্তির কল্যানে আমরা দূরত্ব ভুলে গেছি। বাড়ি, অফিস, সাইবার ক্যাফে- যেখানেই যাই, কিছু বলার জন্য, শোনার জন্য, আদান প্রদানের জন্য। আবেগ, অনুভূতি, ভালবাসা, যন্ত্রণা, আন্তরিকতা। কখনো হাসি, কখনো কাঁদি। টুকরো কিছু মুহূর্ত নিয়ে- আমার এই গল্প। নাম দিয়েছি-“মানুষ ও পাগলের গল্প”।
নেটেই পরিচয়। ধন্যবাদ, মন্তব্য, প্রেরণা, আন্তরিকতা। চ্যাটিং। লিখেই কথা বলা। মুখের কোন ব্যবহার নেই। এমন কি কলমও এখানে অলস। কালি ছড়ায় না। কাগজ? সেটাও এখানে মূল্যহীন। কীবোর্ড নেচে নেচে হাওয়ায় ভাসিয়ে জানান দেয় ওপ্রান্তের কোন একজনকে।
মানুষ। পরিচয় করিয়ে দিই তার সাথে। পৃথিবীর সবচেয়ে সম্মানীত পেশায় সাথে উনি জড়িত। স্পষ্টবাদী। মেধাবী। মিষ্টভাষী। তবে একটু আলাদা কিসিমের। ইনি গল্পের আরেক চরিত্র পাগলের এক বোন। রক্তের সম্পর্কে নয়। আত্মার সম্পর্কে। নেট বোন, ব্লগ বোন- যেটাই বলুন।
এখন আসা যাক পাগলের পরিচয় পর্বে। সুস্থ্য সবল মনে হলেও, কিছুটা অসুস্থ্য প্রকৃতির। আবেগী। তাই তাকে অসুস্থ্য বলা হচ্ছে। আপনারাই বলুন-বর্তমান সময়ে কি আবেগী মানুষের কোন প্রয়োজন আছে? স্বপ্ন দেখে। সমস্যাটা এখানেই। কেউ কাউকে নাহি ছাড়ি অবস্থা। পাগলের ব্যক্তি জীবন সম্পর্কে জানার কৌতুহলটা নিয়েই যত বিপত্তি। শুরুটা কিন্তু স্বপ্ন নিয়ে।
এবার বলি পাগলের ব্যক্তিগত জীবন সম্পর্কে। যুদ্ধ করা। লালিত স্বপ্ন নিয়ে এগিয়ে চলা। হোঁচট খাওয়া। বেঁচে থাকার যুদ্ধে মেতে থাকা। ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য অমানসিক শ্রম ব্যয় করা। তারপরও ভাগ্য পরিবর্তন হয় না। ভালই চলছিল- হঠাৎ মারাত্বক বিদ্যুত বিপর্যয় পাগলের ভাগ্য রেখাটা টেনে ছোট করে দিল। শারীরীক সমস্যা। অর্থনৈতিক সমস্যা, নতুন মুখের আগমন, ব্যবসায়ী সরঞ্জামগুলোর কয়েকটি একবারে ডেড হয়ে যাওয়া। আপনারাই বলুন- ভাগ্যের এ খেলা কি নিজের দোষে?
স্বজনদের ছেড়ে দূর প্রবাসে থেকে উনি স্বপ্ন আঁকেন। পাগলটার মতো নয়। বাস্তব দৃষ্টিতে সবকিছু দেখেন। বলতে দ্বিধা করেন না। পরিবর্তনের স্বপ্নটা তাঁকেও ঘিরে রেখেছে। তবে অতীতকে প্রাধান্য দিতে একটু বিবেচনা করেন। বর্তমান নিয়েই ভাবতে চান, ভাবেন। ইতিবাচক দিক।
মুল গল্পে আসা যাক।
অপমান বলবো না। অভিমান বা পাগলামীই বলবো। দোষও দেব না। যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। বারবার বারণ করা। আঘাত করে পোস্ট দেওয়া। তারপরও নজর রাখা। অপেক্ষায় থাকা। হ্যাঁ, কথা হয়েছে। তবে পূর্বের মতো করে। লিখে লিখে। একপ্রান্ত থেকে অন্যপ্রান্তে। দু’জনেই অনুতপ্ত। গালাগাল শুনতে একপায়ে খাড়া। ঝগড়ার সূচনা। মাঝপথে কারেন্ট চলে যাওয়া।
পরের দিন। নক করা থেকে পাগলের বিরত থাকা। শব্দহীন ঠক ঠক শব্দে সাড়া দেওয়া। অসুস্থ্য। হাসিতে ফেটে পড়া। পাগলটাতো সকাল থেকেই নিজের শারীরীক কষ্টটা ভুলে থাকার জন্য ননস্টপ চ্যাটিংয়ে পড়ে ছিল। তারপর বিকেলের এই চ্যাটিং।
শেষটা হলো কিভাবে?
পাগলটা একাই লিখে গেল-
ভাল বলেছেন। আপনজন।
আপনার সব ভালো, কিন্তু একটা বিষয় আমার মোটেও ভাল লাগেনা। নিজের বোন হলে আপনাকে ঝাড়তাম।
অতো স্পস্টবাদী না হলেও চলে। আপনার কিছু কমেন্ট আমার ভীষণ খারাপ লাগে। আপনি দেখেছেন ১০ রকম মানুষ। সেই ১০ রকমের মধ্যে আমি নেই। আমি ১১ রকম মানুষের একজন।
আপনার উপর কেন যে রাগ করতে পারি না, সেটা নিয়ে তুলির সাথে আজ কথা বললাম।
শুধু হাসে।
ভাল থাকবেন।
যোগাযোগ না রাখলেই খুশি হবো। আমি ফিরে যাচ্ছি সেই সময়ে, যে সময়ে আপনি আমাকে, আমি আপনাকে চিনতাম না।
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখার মতো একটি ঘটনা মাত্র।
নিছক ঘটনা বললেও ভুল হবে না।
সুখ স্বপ্ন নয়, আবার দুঃস্বপ্নও নয়।
মাঝামাঝি কোন এক স্বপ্ন। দুটি চরিত্র। একজন বাস্তববাদী, অন্যজন আবেগপ্রবণ। গল্প লিখলেও লেখা যাবে। নামটা হবে- মানুষ ও পাগলের গল্প।
"আলোর পথ"-এ প্রকাশিত গল্পসমূহ ও লেখনী মূলত পাঠক, শুভানুধ্যায়ী এবং সম্মানিত অবদানকারীদের কাছ থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। এই কনটেন্টগুলোর উপর আমরা কোনো মেধাসত্ত্ব (copyright) দাবি করি না। যদি কোনো গল্প, ছবি বা তথ্যের কপিরাইট সংক্রান্ত বিষয়ে আপনার প্রশ্ন, সংশয় বা আপত্তি থাকে, তাহলে অনুগ্রহ করে আমাদের যোগাযোগ পৃষ্ঠায় যোগাযোগ করুন। আমরা যথাযথ আইনানুগ পদ্ধতিতে বিষয়টি পর্যালোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।