কোথাও খুঁজতে বাকি রাখেনি হলদি। রসুই ঘরের পুরনো কাঠের আলমারির পেছনপাশ, শোবার ঘরের তিন চারেক অন্ধকার কোণা, চৌকির নিচে কাগজের ঠোঙ্গার এধার ওধার- সন্দেহের সব জায়গা দেখা শেষ। বারান্দার পায়াভাঙা কাঠের জলচৌকির উপরে বার কয়েক চোখ রাখলো সে। সেখানে নেই, তবু নিজের চোখের সচেতনতা পরখ করে দেখলো হলদি। জায়গাটা নিশানা শূন্য দেখেও ফাঁকির সন্দেহকে নজরবন্দি করলো । নিচে দেয়াল ঘেঁষা যে পাশটায় আলো আসতে মানা সেদিকটাও দেখলো কয়েকবার। তবুও পিছু ছাড়ছে না সন্দেহ। এবার নিজেকেই সন্দেহ করলো সে। নিজেই সরিয়ে রাখেনি তো আবার! না, এমনটিও ঘটেনি। তবে কোথায় গেল পুতুল ? মাটির তৈরি পুতুলটাকে তিনদিন ধরে শুকিয়ে কাঠ করেছে। আজ সকালে কাপড় পরানোর কথা। মাথায় ঘোমটাও টানতো হয়তো। আশপাশে কাউকে পেলে হয়তো হলদি এ অন্বেষণের নিরর্থক যন্ত্রণার বাড় আরো বাড়িয়ে বলতো- ‘পুতুলডা কাইল বিকালে জলচৌকির উপর রাখছিলাম। সকালে দেহি হাওয়া। আগো, এডা কী কষ্টিপাতর যে চোরের চোখ সরে নাই।’ পুতুলটা বানাতে হলদির যত যত্ন ছিল, আরো বেশি যত্ন দিতে হলো পুতুলটা খুঁজতে। বৃহস্পতিবার বিকেলে কালাম মুন্সি দিয়ে গেল খবরটা। তেলি আসবে। মুন্সি নাকি ছমিরহাটে গিয়েছিল কী কাজে। ফেরার পথে খরবটা হলদিকে দিতে বলেছে তেলির শশুড় দিগের কেউ একজন। মুন্সিই জানিয়ে গেল সংবাদটা। হলদি রবিবার দুপুরে রওনা করবে। শ্বশুড়বাড়িতে তেমন নতুন কারবার নাই। সঙ্গে আরো একজন আসতে পারে। হলদি জিজ্ঞেস করেছিল- জামাই সাথে আইবো- এমন কিছু বলছে?
– না, জামাইবাবু নাকি জমিজমার নতুন মাপ জোঁক নিয়ে ব্যস্ত আছে। তা হয়তো পরে আইসা নিয়া যাইতে পারে।
– হাছাই আইবো তেলি। এতদিন পর তাইলে সইমারে মনে পড়লো। কতমাস দেহিনা তেলিরে। কোন বন্ধনে বান্ধা পড়ছে কে জানে!
– না আইলে কী হুদাই খবর পাঠাইছে।
-হ, এর লাইগাইতো কয়দিন ধইরা খালি হলদা পাখি দেহি। ডালিম গাছে, গয়াম গাছে পাতায় পাতায় ফাঁকে দিয়া মুখ দেহায়। দেইখাই কইছি আমাগো তেলি আইবো।
তেলির আসার সংবাদটা হলদির কাছে শুধু কুটুমানন্দ নয়, অনুভূতি জাগায়, শিহরণ জাগায় তার হৃদয়ের অন্য জায়গায়। যেখানটায় পুষে রেখেছে সেই মায়াবী মোহময় সময়, যখন তেলি আর হলদির পুতুলের বিয়ে পর্ব, সংসার ভাঙা পর্ব আর মালাসা খেলার পর্ব চলতো। তেলিকে দিবে বলে বানিয়েছিল মাটির পুতুলটা। কিন্তু সেটাই গায়েব। সকাল থেকেই সারাবাড়ি খুঁজে সারা। কোথাও মিলল না সন্ধান। বাহিরবাড়ি থেকে দৌড়ে ঢোকে লতি। হলদির চার বছরের মেয়ে। আওয়াজ পাওয়া যায়- মা মা আমপাতা দিয়ে একটা সরকি বানাইয়া দে, ঘুরামু’। হলদি যেন লতিকে মনে মনে খুঁজছিল। নিশ্চয়ই এ লতির কাজ। নচ্ছর মেয়েটার হাতে পড়েছে ঐ নিষ্প্রাণ শখের পুতুলটা। মনের চাওয়া আর সময়ের সমস্বরে তেলির উপর চটলো হলদি-‘ হারাদিন খালি ভ্যাঁ-ভ্যাঁ। ওই হারামজাদি তোরে না কইছি কাউনে কাউয়া পরা দিতে। তুই আইসছ সরকির খবর লইয়া।’ যে উৎসাহে লতি শোবার ঘরের বারান্দায় এসে মায়ের সামনে পড়েছিল, এখন তাতে অনুন্ধারের একটা শংকায় শিশুমনে বিচিত্র ভীতি খেলে গেল। লতি দমে গিয়ে মাটির দিকে তাকিয়ে এবার মা মা করার পরিবর্তে ভ্যা ভ্যা জুড়ে দিল। হলদি তেলির ক্ষেত্রে এমনই। প্রতিনিয়ত গা-ছাড়া। একটু আগে যেমন মা মা কে ভ্যা ভ্যা বলে উড়িয়ে দিয়েছিল, এখন তাতে এতণের পুষে রাখা জেদের বাতিকটা উগড়ে দিল- পুতুলডা কই রাখছস ক। লতি চুপ করে থাকে। মাথা নিচের দিকে করে ভয়ে চোখ ঘোরায় চারপাশে। হলদির সামনে একটা শিশু দাঁড়িয়ে আছে- তার সে খেয়ালে যেন ভাববার অতটুকু সময় নেই। আবার ধমকায়- যেভাবে সে রোদে দেওয়া কাউনের বিছানা থেকে কাক তাড়াতে বলেছিল লতিকে সেভাবে- তাড়াতাড়ি বাইর কর হারামজাদি, এইডা তেলির লাইগা বানাইছি। তোরে আরেকটা বানাইয়া দিমু।’
এরকম অভিনব কায়দায় জেরার পর লতি শুধু বলে- মা মা আমি তো দেহি নাই। কোন পুতুল ঐ যে ওইদিন বানাইছো তেলির লাইগা।
তবুও পুতুল পাওয়া গেলনা। হয়তো লতিই দোষী। তবে পড়শিরা আরো ভালো বলতে পারবে, লতির উপর হলদির নজর নাই। লতি জন্মের পর থেকেই মনে হয় নিজে নিজে চড়ে বেড়িয়ে মানুষ। পাশের বাড়ির চাম্পুলির মা আরো ভালো বলতে পারবে। বুড়িই দেখেছে শুধু জন্মাবধি কয়মাস খেয়েছে লতি হলদি মায়ের বুকের দুধ। আট কী নয় মাস থেকেই লতি ভাতের মাড় খেয়েছে মায়ের দুধের বদলে। সন্তানের প্রতি মায়ের এমন অনুদারতার উৎস কোথায়? পড়শিদের এনিয়ে কানাঘুষা বিরামহীন। চাম্পুলির মা বলেছে- কিজানি, এমন মাও হয়। আপন মায়ে এমন করে কোথায়? এমন মুখ খানা দেখলে পাষানীর বুকেও দুধের ঝরণা বইবো’। চাম্পুলির মায়ের মত গ্রামের মা চাচীরাও দুএকটা কথা সব সময়ই বলে যায়। হলদির তাতে মাত নেই।
আর এসব ঘটে যায়, পুরনো হয়ে যায়- সবই জানে জহুর আলী। নিজেও ঠিকভাবে বুঝে উঠেনি কোনো দিন। সকালে ঘুম থেকে উঠে হাটে যাওয়া, রাতে বুক পকেটে মসজিদ মার্কা লাল নোট নিয়ে ঘরে ফেরা ছাড়া জীবনে কিছুই জড়ো করেনি জহুর। শান্তির হাটের মাঝবাজারের আর্সেনিকমুক্ত টিউবয়েলটার ডানপাশে ছোট্ট একটা চায়ের দোকান কারো চোখ এড়ায়না। কাপের লিকারে ত্রিশবছর রোজ চিনি দুধে যে চামচ পেটাচ্ছে সে জহুর। কে যেন একবার জিজ্ঞেস করেছিল- প্রতিদিন কয়কাপ চা বানাও জহুর মিয়া?
– তার কী আর হিসাব আছে?
– হিসাব থাকলে কইতে পারতাম ত্রিশ বছরে কতে জনে কত কাপে ঠোঁট লাগিয়ে ফুঁ ফুঁ শব্দ তুলেছে।
– ভাইজে কী কন না!
গত ত্রিশবছরে জহুর আলীর চায়ের দোকান বন্ধ ছিল মাত্র দুই কি তিন দিন। ভাবতেই জহুর নিজেই টাসকি খায়। জীবনের সঙ্গে এইভাবে পারা মুশকিল। কত রকমের জীবনইতো হয়। তার অর্ধেক জীবন চলে গেল চায়ের কাপের সঙ্গে। এইতো মাত্র পাঁচ বছর আগের ঘটনা। জহুর জীবনকে কত রকম চিনেছে। রাতে বাড়ি ফেরার আগে চায়ের দোকানে যেমন বড়সড় তালা লাগিয়ে যায় তেমনি পাঁচ বছর আগেই জীবনটায় তালা লাগিয়ে চাবিটা নিয়ে পালিয়ে গেছে। এখনো খোলা হয়নি। অবরুদ্ধ আনন্দ বেদনা অনুভূতি দুখ সুখ নামের চিনি দুধ আর চাপাতা এতদিনে নিশ্চয়ই আগের অবস্থায় নেই। পঁচেছে, গলছে নাকি কেমন আছে জানা যায়না। জহুর এখন চাবিহারা তালাবদ্ধ একটা চায়ের দোকান। তালাটা ভাঙতে পারেনি কেউ, চেষ্টাও কোনদিন করেনি। দিনটা এমনই ছিল সেদিন। শান্তিরহাটে চা খাওয়া মানে এখন যেমন জহুরের দোকান তখনও ছিল তাই। পাঁচবছর আগের এক অপরিচিত সন্ধ্যায় একটা চায়ের আড্ডা হয়েছিল এখানে। সামনের দুপাশের বেঞ্চে দশজন বসার পরও দাড়িয়ে ছিল আরো আট দশ জন। গ্রাম উন্নয়ন বিষয়ক একটা সভা শেষে ওরা এসেছিল চা খেতে। জহুর ট্রে শূন্য দশটা কাপ সাজিয়ে লিকার ঢেলে যখনই নিত্যকার চামচের প্রি গতি তোলে তখনই কে যেন একজন আরো বেশি গতিতে এসে জানায়- জহুর ভাই, ভাবিতো নাই। দুপুরেই তো মানুষটারে দেখছি শুকনো পাতা কুড়াইয়া বস্তায় ভরতাছে। জহুর খবরটা বিশ্বাস করবে কি করবে না সেসময়ও পায়না। থ – তাকিয়ে থাকে। তারপর দেখলো আরো কয়েকজন আসছে। একই গতি এবং একই ভঙ্গিমায়। কিছুক্ষণ পর হাত থেকে কেটলিটা ছুটে যায়। চায়ের কাপের কয়েকটা ভেঙে যাওয়ার সময় কোথায় যেন একটা টনপট টনপট শব্দ হলো। জ্ঞান ফেরার পর সে দেখছিল মা হারানোর বেদনায় সাত বছরের তেলির কি হয়েছিল? জহুর সব জেনে বুঝেও তেলিকে জিজ্ঞেস করেছিল- তোর মা কই? আর অমনি যেন একটা উপুড় করা চিনিভর্তি প্যাকেটের গিট খুলে দিল জহুর। ঝরঝর করে চিনি পড়ার মতোই তেলির আটকে থাকা কান্নার রোলের গিট খুলে বাবাকে জড়িয়ে তেলি কাদতে থাকলো। জোহরা মারা যাওয়ার পরদিন চায়ের দোকানে যায়নি জহুর। সেবারই প্রথম। তারপর জহুর বন্ধ রেখেছিল স্ত্রীর চেহলামের দিন। এরপর আরেকটা দিন। অনেকেই হয়তো দিনটা মনে রেখেছে। তবে সেদিন বন্ধ থাকার কথা ছিলনা। হুট করেই বিয়েটা বেঁধে গেল।দূর গ্রাম থেকে নতুন বউকে নিয়ে দিনে দিনে আর আসা হলো না তার। যাদের বুদ্ধিতে জহুর দ্বিতীয় বিয়েটা করলো তারা ভেবেছিল- নিশ্চিত তালাটা খুলতে পারবে হলদি। জহুরা চাবি নিয়ে পালিয়েছে তো কি হয়েছে ? হলদি চাইলেই তালাটা ভাঙতে পারবে। অবশ্য তা আর হলো না। যে পালিয়েছে সে পালিয়েছে। চাবিটা আর উদ্ধার করতে পারেনি হলদি। লোকে বলেছে, সবে তো মাত্র নয়ে পা দিল, পারবে তবে সময় তো রইলো বাকি। হলদি আসাতে জহুরের কী উপকার হয়েছে বলতে পারবোনা।তবে তেলি পাল্টে গেছে। লতি এখন হলদির কাছে যেমন পড়শিরা বলেছে জহুরাও নাকি ঠিক তেমন ছিল তেলির বেলায়। মা মেয়ের আদর অনাদরে খুব বেশি আয়েস ছিলনা। তাই হয়তো মাকে একটু তাড়াতাড়িই ভুলতে পেরেছে তেলি। তবে হলদি আর তেলিতে মিলেমিশে বাড়িটা নতুন যে রূপ ধরেছিল তাও খারাপ লাগেনি পড়শিদের। জহুর তখন আর আলোচনার বিষয় নয়। সে চায়ের দোকানেই সকাল- রাত ব্যস্ত। হলদি আর তেলির বয়সের ব্যবধান তেমন ছিলনা। দুজনে মিলে নতুন একটা সংসার করলো। সে সংসারের নাম পুতুলের সংসার। রোজ পুতুলের বিয়ে হতো। সংসার ভেঙে যেতো। অথবা তেলি জহুর হয়ে দেখাতো হলদিকে। বাবা কিভাবে চায়ের দোকানে চা বানায়, কিভাবে চা বিক্রি করে এসব নিয়ে মিথ্যেমিথ্যি চায়ের আসর সাজাতো তেলি।হলদি কেবল দাঁত বের করে হাসতো আর হাসতো। কখনো কখনো বলতো, ভাই তাড়াতাড়ি এককাপ গরম চা দেন। জামাইবাবু আইছে। চা খাইতে দিমু। মিথ্যা কাপে ভরে নিয়ে যেতো মিথ্যা চা। পুতুলের জামাইকে সেই চা খেতে দিত। জামাই নাকি লজ্জায় শুধু বলতো- থাক থাক। আবার হলদি যখন বাপের বাড়ি যেতো তখন সঙ্গে করে নিয়ে যেতো তেলিকে। তেলি
হলদিকে সইমা বলে ডাকতো। তাদের দুজনের এমন সই ভাব কেউ কেউ সইতে পারতো না। তেলি একবার হলদিকে বলেছিল- সইমা, ও সইমা তর মা আমারে চোখ রাঙাইছে। বলে আমি নাকি তোর মাথা খাইছি। তর নাকি সংসারে মন নাই। মাথা খাওয়া কি জিনিসরে সইমা, সংসার কী সইমা।’ হলদি শুনে বলেছিল- কি জানি মায় জানে। আমারেও কয়- জামাইরে ঠিকমতো খাওন দিস, পানি দিস, গোসলের কাপড় আগাইয়া দিস, শোয়াইয়া পাখার বাতাস করিস। খালিতো তর তেলি তেলি কইয়াই জান যায়।
-তুই কি কইলি সইমা ?
– কইছি, তেলি তো আমার সই। আমি ওর সইমা। আর আমার লগে তেলিরে দেখলে ওর বাপ তো কিছু কয়না।
– সইমা, ও সইমা।
– ক
– ল, তুই আর কহনো এইহানে আইস না। তর মা চায়না আমাগো পুতুলের বিয়া হোক, আমরা চায়ের দোকান দোকান খেলি, চড়ুইভাতি খেলি।
এরপর থেকে যতবারই হলদির বাপের বাড়ি থেকে নাইওরের খবর এসেছে হলদি ততবারই নিষেধ করেছে।হলদি মাঝেমাঝে তেলির সঙ্গেই ঘুমাতো। জহুর হাট থেকে এসে যখন দেখতো দুজনে জড়াজড়ি করে ঘুমিয়ে আছে তখন সে হলদিকে চাইলেও মন তাতে সাড়া দিতো না। জহুরা মরার পর থেকে চাম্পুলির মা এবাড়িতেই থাকতো। সংসারটা সেই আগলে রেখেছে। মাঝেমাঝে বুড়ি বলতো- বাবা হলদিরে তোমার ঘরে পাডাইয়া দিমু? জহুর কিছুণ চুপ থেকে বলতো- না, থাক। একদিন চাম্পুলির মা তেলিকে জিজ্ঞেস করলো- সইমা তোরে অনেক পছন্দ করে নারে তেলি?
– হ তুমি বুঝি দেহনা।
– সইমারে ছাড়া রাইতে ঘুমাইতে পারছ না?
– না, রাইতে আমরা বেয়াইন বেয়াইন খেলি। আমি জামাইর মা , সইমা বউয়ের মা সাজে।
সেবারই লতির জন্ম। মা হয়েও হলদি তেলির সইমাই থেকে গেল। লতিকে চাম্পুলির মা বাঁচিয়ে রেখেছে। কেবল লতি ুধার জ্বালায় কেঁদে উঠলেই হলদির প্রয়োজন পড়তো। লতিকে দুধ খাইয়ে আবার ছেড়ে দিত। লতির মুখে যেবার একটু একটু কথা ফুটতে থাকলো এবং বয়স প্রায় তিনে পড়লো সেও তেলির দেখাদেখি হলদিকে মা না ডেকে সইমা ডাকতে থাকলো। সবাই তো শুনে অবাক। চাম্পুলির মা বললো- তরতো মা, তুই সইমা কছ কোন দুঃখে।’
এভাবেই কেটে গেল আরো একটি বছর। এবার তেলিকে সইমার সংসার,পুতুলের সংসার ছাড়তে হল। পাত্রের বিস্তর জায়গা জমি আছে। জহুর বেশি বাচবিছার না করে এই বিবেচনায় একদিন পাত্রপকে ডেকে তেলিকে উঠিয়ে দিল। তবে এটা বেশি দিন আগের কথা নয়। মাত্র ছয়মাস হবে।তবুও এ দিনগুলো হলদির কাছে অনেক বলে মনে হয়। স্বামীর ঘরে যাওয়ার সময় তেলিকে তার পছন্দের সব পুতুল সঙ্গে দিল হলদি। সেদিন আরেকবার দোকান বন্ধ রেখেছিল জহুর। কেবল চুপ করে দেখে গেছে দুই সইয়ের কান্ড কারখানা। জামাইর হাতে তেলিকে দিয়ে হলদি শুধু এটুকুই বলেছিল- ভাত কাপড়ের জন্য সে তোমারে জ্বালাতন করবেনা। যদি করে তবে সইমা অথবা পুতুল হতে পারে।’ সেদিনের পর আর দুজনে দেখা হয়নি। তেলি আজ আসবে । তেলি কয়দিনের জন্য ফিরবে পুতুলের সংসারে? অন্য আয়োজনের কথা থাক। হলদি তাকে দেওয়ার জন্য একটা মাটির পুতুল বানিয়েছিল। পুরো বাড়ি খুঁজেও তা পাওয়া গেলনা।
"আলোর পথ"-এ প্রকাশিত গল্পসমূহ ও লেখনী মূলত পাঠক, শুভানুধ্যায়ী এবং সম্মানিত অবদানকারীদের কাছ থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। এই কনটেন্টগুলোর উপর আমরা কোনো মেধাসত্ত্ব (copyright) দাবি করি না। যদি কোনো গল্প, ছবি বা তথ্যের কপিরাইট সংক্রান্ত বিষয়ে আপনার প্রশ্ন, সংশয় বা আপত্তি থাকে, তাহলে অনুগ্রহ করে আমাদের যোগাযোগ পৃষ্ঠায় যোগাযোগ করুন। আমরা যথাযথ আইনানুগ পদ্ধতিতে বিষয়টি পর্যালোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।