একবার নীল নদের উপর দিয়া জৈনিক সওদাগরের এক খানি জাহাজ কোথাও যাইতে ছিল। সেই জাহাজের লোকদের মধ্যে এমন এক ব্যক্তি ছিলেন যিনি প্রত্যেহ দরুদ শরীফ ওজীফা পাঠ করিতেন। একদা তিনি নিজের প্রাত্যহিক নিয়মানুসারে দরূদ শরীফ পাঠ করিতে লাগিলেন। এমন সময় এক পর্যায়ে তিনি দেখিতে পাইলেন—
নদীর একটি মাছ জাহাজের গা ঘেষিয়া চলিতেছে। তিনি যতক্ষণ দরূদ শরীফ পাঠ করিলেন, মাছটি ততক্ষণ উহা শুনিতে থাকিল। ঘটনা ক্রমে তখন এক জেলে নদীতে জাল ফেলিলে ঐ মাছটি তাহার জালে ধরা পড়িল। জেলেতো ঐ মাছ পাইয়া মহা খুশী। সে উহাকে বাজারে বিক্রয় করার জন্য লইয়া গেল।
সেদিন ঘটনাক্রমে হযরত আবুবকর ছিদ্দিক কিংবা ওমর ফারুক (রাঃ) ভাল একটি মাছ কিনিবার উদ্দেশ্যে বাজারে আসিলেন। তাহার ইচ্ছা বড় রকমের মাছ পাওয়া গেলে উহা ক্রয় করিয়া নিয়া নবী করীম (সাঃ) কে খাওয়াইবেন। উক্ত জেলের ঐ মাছটি দেখিয়া তাহার খুব পছন্দ হইল এবং তিনি উহা কিনিয়া নিজ বাড়ীতে লইয়া গেলেন। ঘরে পৌছিয়া তিনি তাহার বিবি সাহেবা কে বলিলেন—
এই মাছটি মসলাদি দিয়া যত্নের সহিত ভাল রকমের রান্না করিও। আজ ইনশা-আল্লাহ হযরত নবী করীম (সাঃ)-কে দাওয়াত করিব।
স্বামীর আদেশে বিবি সাহেবা মাছটির আঁইশ ছাড়াইয়া ভাল রকমে ধুইয়া পরিস্কার করিয়া রান্না করার উদ্দেশ্যে উহাকে চুলায় উঠাইয়া দিলেন। কিন্তু আল্লাহর কুদরত! মাছের হাড়ি উঠাইয়া দেওয়া মাত্রই আগুন নিভিয়া গেল।
আবার আগুন ধরাইবার চেষ্টা করা হইল। কিন্তু আগুন ধরিল না। স্বামী স্ত্রী দুজন চেষ্টা করিয়াও কোন ভাবেই চুলায় আগুন ধরাইতে পারিলেন না। অনেক ক্ষণ চেষ্টা চালানোর পর অবশেষে তাহারা বিস্মিত হইয়া রাসূলে করীম (সাঃ) এর দরবারে এই বিষয়ে খবর পাঠাইলেন। খবর পাইয়া নবী করীম (সাঃ) নিজে সেই বাড়ীতে আসিলেন। তাঁহার নিকট সমস্ত ঘটনা বর্ণনা করা হইল। তিনি বলিলেন, দুনিয়ার আগুনতো দূরের কথা দোযখের আগুনও এই মাছটিকে পোড়াইতে পারিবে না। কারণ মাছটি নদীতে থাকা কালে এক ব্যক্তি জাহাজে বসিয়া দরূদ শরীফ পড়িতেছিল আর মাছটি অত্যন্ত আগ্রহ সহকারে তাহা শুনিয়াছিল। সুতরাং দুনিয়ার আগুন কেন দোযখের আগুনও ইহার জন্য হারাম হইয়া গিয়াছে।
সংগ্রহঃ ওয়াজে বে নজীর।
হযরত মাওলানাঃ মযীরুদ্দীন সাহেব (রাহঃ)
"আলোর পথ"-এ প্রকাশিত গল্পসমূহ ও লেখনী মূলত পাঠক, শুভাকাংখী এবং সম্মানিত আবেদনকারীদের কাছ থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। এই কনটেন্টগুলোর উপর আমরা কোনো মেধাসত্ত্ব (copyright) দাবি করি না। যদি কোনো গল্প, ছবি বা তথ্যের কপিরাইট সংক্রান্ত বিষয়ে আপনার প্রশ্ন, সংশয় বা আপত্তি থাকে, তাহলে অনুগ্রহ করে আমাদের যোগাযোগ পৃষ্ঠায় যোগাযোগ করুন। আমরা যথাযথ আইনানুগ পদ্ধতিতে বিষয়টি পর্যালোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।