মাখন বিলাসী –আশাপূর্ণা দেবি

এই গল্প টা আমার বানানো নয়,সত্যি গল্প।বলেছিল আমার ভাগ্নে নিত্যহরি।বলেছিল- ভোজন বিলাশি অনেকে থাকে।ভোজনের ব্যাপারে খুঁৎ ঘটলে খুঁৎ-থুঁতুনির এর আস্ত থাকে না তাদের।তেমন তেমন হলে তো মাথায় খুন চেপে যায়।যেমন হয়ে ছিল আমাদের গ্রামের একদর জমিদর বংশধর শ্যাম রতন গাঙ্গুলির।শ্যাম রতন ফাসিতে লটকাবার কারণই তো ওই ভোজন বিলাস।
না,ফাসির খাওয়া খেয়ে মরেন নি শ্যামরতন,তেমন স্কুল বিলাস ছিল না তাঁর।ছিল সূক্ষ্ণাতিসূক্ষ্ণ ব্যাপার। শ্যামরতনের নাক আর জিব ছিল আনবিক শক্তিসম্পন্ন।শ্যামরতন ভাত খেয়ে ধরে ফেলতেন পারতেন ওই চালের জন্ম কোন শ্নাশানের ধারে-কাছের ধান ক্ষেত কিনা।কারন তেমন হলে তিনি নাকি ভাতে পড়াপোড়া মড়াপোড়া গন্ধ পেতেন।পায়েস খেয়ে ধরতে পারতেন শ্যামরতন সেই পায়েশের দুধের জায়গা গো মাতাটি ঘাস খেয়েছিল না বেল পাতা খেয়েছিল।বেল পাতা খেলে শ্যামরতন পায়েস তিক্তস্বাদ পেতেন।সেই আনবিক অনুভুতির কাল ধরে হয়েছিল তাঁর।একদিন খেয়ে বসে মাছের কালিয়ার মাছে পোঁকা-পুকুরের গন্ধ পেলেন শ্যামরতন।ব্যস হাত গুটিয়ে ডাক পাঠালেন মাছওলা জেলেকে।তাঁরপর জেরার উপর জেরা,কন পুকুরের মাছ ইত্যাদি।জেলে ছোকরাও একদার প্রজার বংশধর,কিন্তু এখন তাদের ইউনিয়ন হয়েছে,তাই জেরার মূখে চোটপাট জাবাব দিয়ে বসলো,হ্যাঁ পাকের পুকুরের মাছই বটে।তা করবে কি,পুকুরের পাকের জন্মে তো আর সে দায়ী নয়।
আর যায় কোথায়।একে দুপুরের ভোজটি গুবলেট,তাঁর বাবার চোটপাট জাবাব,ধাই ধাই করে হাতের কাছে ভারি কাসার গেলাশটা চুড়ে বসলেন শ্যামরতন,আর বলবে বিশ্বাস করবেনে না তোমার,গেলাশ খেয়ে জে ছোকরা সেই যে রগ চেপে বসে পড়ল,আর উঠল না।একবাড়ি লোক সাক্ষী,পালাবার পথ রইল না,ফাসির কাঠে ঝুলতে হবে শ্যামরতন কে।তা শ্যামরতনের মতন অতো করা না হলেও ভোজন বিলাসী অনেক আছে।ওটা অনেকের দেখা।আবার শয়ন বিলাসীও আছে ঢের।শয়ন বিলাশির সংখ্যা নেহাৎ কম নয়।মশারির বাইরে মশা ঘুরলেও ঘুম ভেঙ্গে যায়,তোষকের নিচে একগাছা চুল থাকলেও ঘুম আসে না।এমন লোক আমার নিজে চোখে দেখা।এরা জিবনে শর প্রজনেও অপর কারও বাড়িতে রাত্রি বাশ করতে পারে না।এরা শয়ন বিলাসে হনি ঘাঁটবার ভয়ে নিকট আত্নীয়ের ব্যাপারেও রাতের মড়ায় কাঁধ দেয়না।দূরপাল্লায় বিয়ে বাড়ি যায়না,আর সাত জন্মে ভ্রমণে বেরোয় না।রেলগাড়ি এদের কাছে বাঘ।এরা অদ্ভুত,তবুও এরা সমাজ-মান্য ব্যক্তি,এদের পরিচয় অল্পবিস্তর সকলের জানা।ভোজন বিলাসি শয়ন বিলাসী,এ-সব শব্দ অভিধানে আছে।কিন্তু মাখন বিলাসী?আছে এ-শব্দ অভিধানে?নাঃ আমি তো দেখিনি,চলন্তিকা থেকে শুরু করে ঠাকুরদার আমলের সেই সাড়ে-বারোসের ওজনের বৃহৎ সটীক বঙ্গভিধান পর্যন্ত সব হাতড়ে দেখেছি।কোথাও পায়নি আ-শব্দ।তার মানে আমাদের চাটুয্যেদা স্রেফ স্বয়নভু।তবে চাটুয্যেদার এ পরিচয় আমাদের এই পিকনিকের আগের দিন পর্যন্ত জানা ছিল না।গোলা গেরস্ত লোক আমরা,কে বা কবে পিকনিক করেছে;কিন্তু কুঁজোরও তো কখনো-সখনো চিৎ হয়ে শুয়ে সাধ যায়।তাই আমাদের এই ভোঁদড় অফিসের কেরানীদেরও পিকনিকের শখ।বারাসতে একজন বড়লোকের এক খানা আরামকুঞ্জ,জোগাড় করা হোল-কোন একজনের বন্ধুর বন্ধুর তুতোর তুতো মারফাত।
তাঁর পর উৎসাহের ঘটায় পকেট হালকা করে চাদাও উঠিয়ে ফেলা হল অনেক অতঃপর ফর্দ লেখা আর পরিকল্পনা চলতে লাগল।বেশ কদিন ধরে।উৎসাবের চোটে বুড়োর তরুণ হয়ে উঠল যেন।এরই মাঝেখানে বিনামেঘে বজ্রপাত।চাটুয্যে বলে বসলো,দ্যাখ,বাপু,আমার বোধায় যাওয়া হবে না।কথাটা শুনে ভেড়ার গোয়ালে আগুন লেগে গেল যেন।যাওয়া হবে না মানে?মানে?চাটুয্যে একটু লাজুক হাসি হেসে বললো,আমার একটু ইয়ে,মানে একটা বস অভ্যাস আছে,তোদের তো বলছি সক্কাল বেলাই বেরোনো-কাজেই- বদভ্যাস!তোমার খাবার বদভ্যাস কি?নেশা-টেশা কর নাকি সকাল বেলা?রেগে বলি আমরা।চাটুয্যেদা তেমনি লাজুক হেসে বলে,তা সে একরকম নেশাই।মানে আমি হচ্ছি বুঝলি,একটু মাখন বিলাসী।মাখন বিলাসী বুঝলাম না তার মানে।ও হো-হো সকাল বেলা মাখন খাওয়ার অভ্যাস আছে?হরিনারায়ন মদুসুধন! এই তোমার সমস্যা?মাথা থেকে পাহাড় নামে আমাদের।সমস্বরে বলি,খেওনা বাবা,যতো পার মাখন খেও।বলো,ক,কিলো মাখন নিয়ে যাব তোমার জন্য?চাটুয্যেদা মাথা নেড়ে বলে,না রে বাবা, না,খাওয়া-ফাওয়া না।একটু তেল মাখি।তেল মাখ!তা সেটা আবার ভাবার কথা কি?কেন না মানে?কখন মাখো?এই মানে সারা সকালটাই!চা খাওয়ার পর থেকে অফিস যাবার আগে পর্যন্ত।আমরা অবাক না হয়ে পারি না। বলি,সারা সকাল থেকে শুধু তেল মাখ?রোজ?বললাম তো বাপু,আমি একটু মাখন বিলাসী।আমাকে তোরা পিকনিক থেকে বাদ দে।চাটুয্যেদা চাঁদা দিয়েছে সব থেকে বেশি।আমিই আবার কর্মকর্তা দি প্রধান কিনা,তাই তেড়ে উঠে বলি,বাদ?অসম্ভব কথা বল না চাটুয্যেদা।সারা সকাল তেল মেখো তুমি বাবা।যতক্ষণ না খিচুড়ি,মাংস না নামে তুমি তেল মেখ।মোট কথা বাদ কাউকে দেওয়া হবে না।তোমার তো প্রশ্নের বাইরে।চাটুজ্যেদা অন্যমনা গলায় বলে,তাই বলছিস?বলছিস তো!বেশ ঠিক আছে।তোমাদের যখন এত ইচ্ছে।রওনাটা কখন?ওই তো ভোর সাড়ে পাঁচটায়!অফিস ভ্যান টা পাওয়া যাবে,বলে রেখেছি ড্রাইভার কে।রোজ যেমন সকালে তোলে সেই-ভাবে তুলে শ্রমবাজারে থেকে মাংস,মিষ্টি আর দই কিনে সোজা এগিয়ে যাওয়া।এত সব করবি?চাটুয্যেদান বিপ্ননভাবে বলে,পৌছেতে তো অনেক দেরি হয়ে যাবে।দেরি আবার কিসের?স্যাম বাজার থেজে সারাসত আবার কতটুকু?সাড়ে পাঁচটার মধ্যে পৌছে যাবো।ঠিক আছে।এবার চাটুয্যেদান কণ্ঠে প্রীত।তাহলে আর অসুবিধে নেই।সাড়ে পাঁচটায় শুরু করি আমি।ওটাই আমার তাইম।কিন্তু কে জানতো চাটুয্যেদান সুবিধে অসুবিধে,আর টাইমের কাটা শ্যাকরার দোকানের নিক্তির কাটা!যতোই হোক বেরানোর ব্যাপার তো।অফিস টাইমের মতো মার মার কাট কাট কি হয়?হয় না।পাঁচজনের দরজায় পাঁচমিনিট পাঁচ মিনিট হাক পাড়ি, চাটুয্যেদান,বেরিয়ে এসো।বেরিয়ে আসে চাটুয্যেদান। খালি গা পরনে লুঙ্গি।এ কি চাটুয্যেদা?এখনও তৈরি হনি?হয়েছিলাম! চাটুয্যেদা নিলিপ্ত গলায় বলে,ছেড়ে ফেললাম তোদের তো বিস্তার দেরি হয়ে গেল।বিস্তর দেরি?কই না তো?মাত্র তো সাড়ে পাঁচটার জায়গায় ছটা।সাত ঘাটের মাছ এক ঘাটে করা,আধঘণ্টা এমন কি দেরি?নাও নাও জামাটা গাঁয়ে দিয়ে এসো।নাঃ চাটুয্যেদা অঙ্ক কষার ভঙ্গিতে বলে,এখান থেকে তোরা এখনো গ্রে স্টিট থেকে চৌধুরি নিবি,টার পর থেকে মাংস কিনবি,দই মিষ্টি কিনবি,টার পর –ওঃঅসম্ভব।সাড়ে ছটা তো বাজবেই বাজবে।টাইম পার হয়ে যাবে।কি মুস্কিল!তেল মাখা তো আর ক্যাপসুল খাওয়া নয় গো,না হয় আধঘণ্টা দেরি হলো।পাগল! চাটুয্যেদা মাথা নেড়ে,তা হয়না।অন্যপথ ধরি।বলি আধঘণ্টা দেরির জন্য তুমি আমাদের এত বড় একটি শাস্তি দিচ্ছো?এবার যেন একটু কাজ হয়।মানে,আসলে তো লোকটা ভালো,ওই মাখন বিলাসী ওকে উল্টা-পাল্টা করে দিয়েছে।বিব্রত ভাবে চাটুয্যেদা,আঃ ছি ছি! এ কি বলছিস!মানে ব্যাপার টা কি জানিস?জানি সব জানি।তুমি উঠে এস তো।নচৎ ওই খালি গা অবস্থাতে তোমায় আমরা পাঁচকোলা করে তুলে নিয়ে যাবো।আমাদের ওই ডাকাটি মনোভাব দেখে বোধকরি ভয় হয় লোকটার।তাড়াতাড়ি বলে,না বাব না,জামা পড়ে আসছি।তবে ব্যাপার টা কি জানিস?আমি বলি জানি জানি।ত
ুই একটু মাখান বিলাসী এই তো?কিন্তু প্রশ্ন তো মাখিয়ে দেওয়ার নয়,প্রশ্ন হচ্ছে টাইমের। চাটুয্যেদার সেই টাইম হচ্ছে সাড়ে ছয়টা।এখন আমরা মাংসের দোকানে বকাবকি,চেঁচামেচি জুড়েছি।জুড়ছে তো হবেই নইলে আর পিকনিকের আমোদ টা কি?চল্লিশ না হলেও চব্বিশ দস্যু তো ঝাপিয়ে পড়ে গিয়ে দোকানে।ফুর্তির বান ডাকছে তখন।সুতরাং দোকানি কে নিয়েই মস্করা-ঠাট্টা,কি বাবা?পাঠার গলা গুলো না কেটে আমাদের গলা গুলোই কাটছে যে।ও কি ওজন হচ্ছে?বলি মেটেগুলো সরাচ্ছেন কেন?বেশি দামি বেচবে বলে?… ওহে ভাই পাঁঠাটা বোকা পাঠানয় তো?দেখ খেয়ে আবার সবাই মিলে বোকা হয়ে না যাই,ইত্যাদি প্রর্ভতি বুনো গাইয়া রসিকতা।কসায়ের সঙ্গে আর কি বা উচ্চঙ্গের রসিকতা হবে!একই পদ্ধতিতে দই-মিষ্টি মিঠে পান,কলাপাতা ইত্যাদি কিনে উল্লাসধ্বনি করতে করতে আমরা যখন বারাসতে পৌছলাম,তখন আঁটটা দশ।দেখি চাটুয্যেদা মলিন মুখে নির্জীবের মতো বসে পড়ছে একপাশে।জর গলায় বলি,কই চাটুয্যেদা লেগে যাও? চাটুয্যেদান সর্বহারা গলায় বলে উঠে,আর লেগে যাওয়া।দু,দিক থেকে সর্বনাশ হয়ে গেলো।দু,দিক থেকে সর্বনাশ।সেটা কী জিনিস।কি আবার?একদিকে দেড়ঘণ্টা লেট অপরদিকে আমাদের তাড়নায় তেলের শিশি আনতে ভুল।তেলের শিশি তুমি গাঁয়ে মাখবে?সরষের তেলই মাখি।তবে?তবে চিন্তাটা কিসের?রন্নার জন্য তো আমাদের পাঁচসেরি টিন এসেছে।তাতে কি আমার কাঁচকলা? চাটুয্যেদা উদাত্ত গলায় বলে,টার তো এক ভাগ সরষে আর টিন ভাগ ভেজাল।বল কি চাটুয্যেদা,আমরা কি কলের তেল এনেছি?গণেশ তেলের টিন-আরে রেখে দে তোদের কাত্তিক গণেশ, চাটুয্যেদা এবার খিঁচিয়ে ওঠে,দেখতে আর বাকি নেই কাউকে।মূলোর রস আর লঙ্কা গুড়োর ঝাজের ভেজাল মেরে-তাহলে তুমি কি তেল মাখো?
হতাশ হয়ে বলি।কি তেল? চাটুয্যেদা গর্বিত বলে,খাটি রাই সরষে কিনে বাড়ি পিসে তেল তৈরি করি।মানে তোমাদের বৌদি করে দেয়।তার মানে তোমার মাখন বিলাসের দাপটা বেচারা বৌদির হাড়ও পেষে?হাড় পাবার পেষা কি? চাটুয্যেদা ক্রুদ্ধ গলায় বলে,হিন্দুনারি শ্বামির জন্য এইটুকু করবে না?আর কথই বা তেল মাখি আমি?দৈনিক তো মাত্র আধপোয়া ।আধপোয়া। আধাপোয়া করে তেল মাখ তুমি চাটুয্যেদা করুন শ্বরে বলে,ওর বেশি আর কোথায় পাব বলো।পাওয়ার কথা হচ্ছে না।অফিসের বেলায়- অফিসের বেলায় তো কি?ওই তেলটুকু জোরেই তো দাড়িয়ে আছি।তোমাদের পাল্লায় পড়ে আমার আজ সর্বনাশ হয়ে গেল।এমন তাড়া দিলি।আমতা জোর দিয়ে বলি, একটা দিন গণেশ মাখলে কিছু নাশ হবে না চাটুয্যেদা,তোমার সোনার কান্তি সোনার থাকবে।এস টিন
খুলি।
কিন্তু টিন খুললে আর কি হবে?মন খোলে কই? মনে যে সীল মারা।জব্বর সীল।মাটির গোছলের এক গেলাস তেল নিয়ে বসে তো পড়ে চাটুয্যেদা,কিন্তু মাখে কই?বারবার কেবল নাকের কাছে তোলে আর নাকটা কুঁচকে নামিয়ে রাখে।কী হল চাটুয্যেদা?শুরু করো।
শুরু?ভাবছি-
তোদের কদ্দুর?
এই তো উনুনে আগুন পড়লো।রান্নার মেনুটা কি?
রান্নার?খিচুড়ি মাংস,আলুর দম,পাপর ভাজা চাটনি!ঠিক আছে! চাটুয্যেদা উল্লাসের গলায় বলে,হয়ে যাবে।তোমাদের হতে আমি এসে যাবো।কোথা থেকে এসে যাবে?আমরা হাঁ।
তেলটা নিয়ে বাড়ি থেকে।প্রসন্নবদনে উদাত্ত গালয় বলে উঠে চাটুয্যেদা।তেল টা বাড়ি থেকে!মানে পার্ক সার্কাস থেকে! চাটুয্যেদা,তুমি আমার সঙ্গে মস্করা করছো,না পাগল হয়ে গিয়েছো?আরে বাবা,মস্কারাও নয়-পাগলও নয়,দিব্যি সাদা বাংলায় বলছি।দেখ না যাব আবার আসবো।বারাসত থেকে পার্ক সার্কাস,তুমি যাবে আর আসবে?আরে বাবা দেখ না।তোমাদের হাতের রান্নাতো!টার মধ্যে তিন বার যাওয়া আসা হয়ে যাবে। চাটুয্যেদা পাগলামি করো না।কি মুস্কিল!পাগলামিও নয়,মাতলামিও নয়,স্রেফ সাদা বাংলা।কিন্তু তোমার টাইম?সে তো অনেকক্ষন আগেই ব্রক্ষপুত্রের জলে তলিয়ে গেছে।এখন আর একটা দিক রক্ষে করার চেষ্টা করতে হবে তো?মূলোর রস টা না মেখে একটু খাটি তেল-জুতোটা পায়ে গলিয়ে বীরবিক্রমে এগিয়ে যায় চাটুয্যেদা আলো-আলো মুখে।চব্বিশ সদ্যু দ্বিগুণে আটচল্লিশ বার বারণ করলাম, চাটুয্যেদা অটল।অতো ঘাবড়াচ্ছিস কেন?দেখ না,যাবো আর আসবো।তার পর কি!গেছে আর আসছনে- মানে আসছেন।মাংস নামলো,খিচুড়ি নামলো,আলুরদম নামলো,চাটনি সব নামলো, চাটুয্যেদার দেখা নেই।এদিকে উনুন নিবে আসছে।তার সঙ্গে উৎসাহও।তবে পাপর গুলো ভাজা হোক।নে-ভাগনার প্রস্তাব।উত্তর হোক! পাপর গুলো তো নেতিয়ে যাচ্ছে,তবে পাতা গুলো পাতা হোক।উত্তর হোক মাংটা ততক্ষণ ভাগ করা হোক।–হোক
কি করা যায় অতপর?
খিচুড়িতা হাতে হাতে পাতায় দেওয়া হোক।–হোক।
দু,এক জন বাদে সবাই বসে পড়া হোক।–হোক।পেট তো চুঁ ই চুঁ ই।খাওয়া আরম্ভ হোক!-হোক গোঁড়ায় না হয় একটু চাটনি চাটা হো।তাই হোক।আওর কিছুক্ষণ পড়ে আরও দুই জনের যখন পেট কাঁদছে!প্রস্তাব হোল কাক এসে ছড়াছড়ি করছে,বাকি জনে রা বসে পড়ুক!-পড়ুক।আর অপেক্ষায় মানে হয় না।মানে হয় না।
কী কেলেঙ্কারি! কী কেলেঙ্কারি!
কী যাচ্ছেতাই! কী যাচ্ছেতাই!
কী হোপলেস!কী হোপলেস!
ব্রেনের ডিফেষ্ট আছে।… নির্ঘাৎ।
বৌদি ছাড়ে নি,বোধা হয়।
তাই সম্ভব।
যাবার সময় ওর ভাগের খাবার টা গাড়িতে তুলে নিয়ে ওর বাড়িতে নামিয়ে দিয়ে যাওয়া হোক।ডেকচির তলা চেঁচে পুছে যখন দই-মিষ্টির খালি হাঁড়িতে ভরে ফেলা হয়েছে,তখন হঠাৎ অদিক কোথায় শোরগোল উঠে।–এসেছে এসেছে।কে এসেছে?ড্রাইভার?আরে ড্রাইভারের জন্য কে মরেছে।এসেছে চাটুয্যেদা।এই মার সেই মার করে তেড়ে যাই আমরা,এই তোমার যাব আর আসব? চাটুয্যেদা লাজুক হাদি হাসে বলে,তেল টা হাতে নিয়ে দারুন লোভ এসে গেল বুঝলি?ভাবলাম মেখেই যাই।মানে আর কি- কিন্তু কে তখন তার মানে কানে নেয়?সামান্য একটু তেল মাখার জন্য নিজের তো বটেই;এত গুলো লোকের আমোদ মাটি করলে তুমি?এই অভি যোগ নিয়ে সবাই এক সাথে ঝাপিয়ে পড়েছে।চাটুয্যেদা নিবিকার!আলো আলো মুখে বলে,সামান্য কি অসামান্য সে তোরা কে বুঝবি?অটোক্ষন বিরহের পর শিশিরটা দেখে ফুর্তির চোটে তিন দিনের তেল এক দিনে মেখে ফেললাম।বলেই তো ছিলাম বাপু ,আমি একটু মাখন বিলাসী।

সম্পর্কিত পোস্ট

দুঃখিত!