আমাদের বাড়ির পাশে দিয়েই ময়মনসিংহ-ঢাকা রোড । এই রোডকে ঘিরে অনেকরকমের কথা চালু আছে আমাদের এখানে । আমাদের বাসার পাশেই একটা বাঁক আছে যেখানে রয়েছে একটি পুরানো কবর । কবরটি কার তা কেউ জানে না । শোনা যায়, এখানে বসতি স্থাপনের অনেক আগে থেকেই নাকি এই কবরটি ছিল । আমার দাদার বাবা কাদের আলী তালুকদার অনেক আগে এই এলাকায় বাড়িঘর স্থাপন করেন । তখন নাকি আশেপাশে গভীর জঙ্গল ছিল এবং মানুষ সন্ধ্যার পর দরজায় মোটা লোহা বা
কাঠের খিল দিয়ে রাখতো যেন বন্য পশুরা রাতের আঁধারে আক্রমণ না করতে পারে । তিনি নিজেও বলে গেছেন এই কবর সম্পর্কে । এই কবরে নাকি রাতের বেলা আলো জ্বলে (তবে ইধানিং কখনো দেখা গেছে বলে শুনি নি । আমি নিজেও দেখি নি কখনো ।) । তিনি আরো বলেছেন অনেকেই নাকি ঐ কবরের পাশে মাঝে মাঝে একজন বৃদ্ধকে বসে থাকতে দেখত । তবে কেউ কোনোদিন সামনে গিয়ে কিছু জিজ্ঞেস করার সাহস পেত না । বৃদ্ধকে যখন দেখা যেতো তখন হয় বিকেলের শেষভাগ অথবা সন্ধ্যা হয়ে গেছে । অর্থাৎ একটু আঁধার পড়ে পড়ে অবস্থা । কবরটি এরপরে একবার ব্রিটিশ আমলে বাঁধিয়ে দেয়া হয় । কবরটি বাঁধার সময় নাকি এক আশ্চর্য ব্যাপার ঘটেছিলো । যারা বাঁধাইয়ের কাজে ছিল তারা প্রত্যেকে নাকি ক্রমান্বয়ে একজন বৃদ্ধকে স্বপ্নে দেখে । সেই লোক তাদের নির্দেশ দেয় শ্বেত পাথরে কবর বাঁধাই করতে না হলে নাকি ক্ষতি হবে । প্রথমে পাত্তা না দিয়ে নরমাল ইটের দেয়াল দেয়ার পরিকল্পনা করা হয় । কিন্তু বিধিবাম । কবর বাঁধাইয়ের কাজ শুরু করার পরপরই নাকি দুজন লোক দিনের বেলা হটাত মারা যায় । তারা দুজনেই কবর বাঁধাইয়ের কাজে জড়িত ছিল । এরপর প্রায় ১০ বছরের মতো কাজ বন্ধ রাখা হয় । শেষে গ্রামের একই সাথে কয়েকজন স্বপ্নে দেখে যে একটা বৃদ্ধমতন লোক তাদের আদেশ করছে সেই কবরটি শ্বেত পাথরে বাঁধাই করতে । গ্রামের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে । প্রতিদিনই শোনা যায় নতুন কেউ না কেউ সেই বৃদ্ধকে দেখেছে । অবশেষে গ্রামের মানুষ টাকা জোগাড় করে কবরটি বাঁধিয়ে দেয় ।
সেই কবরের পাশের রাস্তায় এখনো মাঝে মাঝে এক্সিডেন্ট হয় । অনেক ড্রাইভারদের সাথে কথা বলে জানা যায়, হটাত গাড়ি চলার সময় এক বৃদ্ধ নাকি রাস্তার মাঝে চলে আসে । সেই সময়ে যারাই লক্ষ্য করেছে তারাই নাকি দেখেছে যে বৃদ্ধের পা বলতে কিছু নেই এবং সে বাতাসে ভাসমান । (আমি নিজে কখনো প্রত্যক্ষ করি নি এবং করতে চাইও না, শুধুমাত্র যেমন শুনেছি তেমন বললাম
"আলোর পথ"-এ প্রকাশিত গল্পসমূহ ও লেখনী মূলত পাঠক, শুভাকাংখী এবং সম্মানিত আবেদনকারীদের কাছ থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। এই কনটেন্টগুলোর উপর আমরা কোনো মেধাসত্ত্ব (copyright) দাবি করি না। যদি কোনো গল্প, ছবি বা তথ্যের কপিরাইট সংক্রান্ত বিষয়ে আপনার প্রশ্ন, সংশয় বা আপত্তি থাকে, তাহলে অনুগ্রহ করে আমাদের যোগাযোগ পৃষ্ঠায় যোগাযোগ করুন। আমরা যথাযথ আইনানুগ পদ্ধতিতে বিষয়টি পর্যালোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।