মন কি চায় !

মানব সত্তা বড় বিচিত্র । অনেক সময় বা কোন কোন সময় মন এমন কিছু পেতে চায় যা বিবেক সমর্থন করে না। এতে স্পষ্ট বুঝা গেল যে , মানব সত্তা একক নয়। মানুষের দুটো সত্তা রয়েছে। একটি দেহসত্তা, অপরটি নৈতিক সত্তা। দেহ হলো বস্তুসত্তা । দুনিয়াটাও বস্তুসত্তা। বস্তুজগতের কতক উপাদানেই মানব দেহ গঠিত। তাই বস্তুজগতের প্রতি মানবদেহের প্রবল আকর্ষণ থাকাই স্বাভাবিক। এ পৃথিবীতে ভোগ করার মতো যা কিছু আছে তাই দেহ পেতে চায়। দেহের মুখপাত্রই হলো মন। দেহ যা চায় তাই মনের মাধ্যমে প্রকাশ পায়। সুতরাং বুঝা গেল যে, মন যা চায় তা দেহেরই দাবী।
কুরআন পাকে দেহের দাবীর নাম দেয়া হয়েছে ‘নাফস’। নাফস মানে দেহের দাবী । নাফসের পরিচয় দিতে গিয়ে আল্লাহ পাক বলেনঃ ‘নিশ্চয়ই নাফস মন্দের দিকে প্ররোচনা দেয়।’ (সূরা ইউসুফ ৫৩ আয়াত) অর্থাৎ দেহের যেহেতু কোন নৈতিক চেতনা নেই সেহেতু সে দাবী জানাবার সময় উচিত বা অনুচিত কিনা তা বিবেচনা করতে পারে না। তাই এটা নিশ্চিতভাবে ধরেই নিতে হবে যে দেহের সব দাবীই মন্দ। অবশ্য বিবেক যদি দেহের কোন কোন দাবীকে মন্দ নয় বলে স্বীকার করে তাহলে কোন সমস্যা নেই। ভাল মন্দের বিচার কে করবে?
মানুষের বিবেক বা নৈতিক সত্তাই দেহের দাবী সম্পর্কে বিচার বিবেচনা করে। এ বিবেকই হলো আসল মানুষ। কুরআনের ভাষায় একেই বলা হয় রূহ । দেহ হলো বস্তুগত হাতিয়ার যা মানুষকে ব্যবহার করতে দেয়া হয়েছে। এ বস্তুজগতকে কাজে লাগাবার জন্য বস্তুগত হাতিয়ার জরুরি । কিন্তু হাতিয়ার সঠিকভাবে ব্যবহার করতে না পারলে উদ্দেশ্য সফল হয়না।
দেহ হাজারো দাবি করতে পারে। কিন্তু তাকে কষে লাগাম লাগাবার যোগ্যতা যদি রূহ বা বিবেকের থাকে তাহলে এ দেহ ঘোড়াই দ্রুত গন্তব্যস্থলে পৌঁছিয়ে দেবে। ঘোড়াকে বাদ দিয়ে দ্রুত গন্তব্যে পৌঁছানো সম্ভব নয়। ভালভাবে ঘোড়ার যত্ন নিতে হবে, ওকে সুস্থ ও সবল রাখতে হবে। কিন্তু ঘোড়াকে নিয়ন্ত্রণ করার যোগ্যতা না থাকলে আরোহীর জীবনই ব্যর্থ।

"আলোর পথ"-এ প্রকাশিত গল্পসমূহ ও লেখনী মূলত পাঠক, শুভানুধ্যায়ী এবং সম্মানিত অবদানকারীদের কাছ থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। এই কনটেন্টগুলোর উপর আমরা কোনো মেধাসত্ত্ব (copyright) দাবি করি না। যদি কোনো গল্প, ছবি বা তথ্যের কপিরাইট সংক্রান্ত বিষয়ে আপনার প্রশ্ন, সংশয় বা আপত্তি থাকে, তাহলে অনুগ্রহ করে আমাদের যোগাযোগ পৃষ্ঠায় যোগাযোগ করুন। আমরা যথাযথ আইনানুগ পদ্ধতিতে বিষয়টি পর্যালোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

দুঃখিত!