
এ থেকে মুক্তির জন্য আলোচনায় বসলো সবাই। একজন বললো, ‘আমি জানি কীভাবে দৈত্যটাকে মারা যাবে।’ এই বলে সে এমন জায়গায় গেলো, যেখানে শেষ দৈত্যটাকে দেখা গিয়েছিলো। সেখানে গিয়ে সে মরার মতো পড়ে থাকলো। একটু পরই দৈত্যটা সেখানে গেলো। মানুষটাকে পড়ে থাকতে দেখে সে বললো, ‘এই মানুষগুলো আমার জন্য কাজটা সহজ করে দিয়েছে। এখন মানুষ ধরে মারার আর দরকার নেই; এরা আমার যাওয়ার রাস্তার ওপরই মরে পড়ে থাকছে। মনে হয় আমার ভয়েই!’ দৈত্যটা লোকটার শরীর ছুঁয়ে দেখে বললো, ‘আহ! দারুণ। এটা তো এখনও তাজা আর গরম। কী মজার খাবার। এর হৃৎপিণ্ড রোস্ট করে খাওয়ার অপেক্ষা করতে পারছি না।’ এই বলে লোকটাকে কাঁধে নিয়ে দৈত্য হাঁটতে থাকলো, আর লোকটাও তার মাথা ঝুলিয়ে দিলো এমনভাবে_ যেন মারা গেছে। বাড়ি ফিরে লোকটাকে মেঝের চুলি্লর কাছে ফেলে রাখলো দৈত্য। কিন্তু কোনো জ্বালানি কাঠ না দেখে সে বাইরে গেলো কাঠ আনতে। দৈত্য চলে যেতেই লোকটা দৈত্যের বড় ছুরিটা নিয়ে নিলো। এমন সময় দৈত্যের ছেলে নিচু হয়ে ঘরে ঢুকলো। ছেলেটা তেমন বড় হয়নি। লোকটারই মতো। তাই লোকটা তার গলায় ছুরি ধরে বললো, ‘তাড়াতাড়ি বলো তোমার বাবার হৃৎপিণ্ড কোথায়? নইলে তোমার গলা ধড় থেকে আলাদা করে ফেলবো।’ দৈত্যের ছেলে ভয় পেয়ে বললো, ‘আমার বাবার হৃৎপিণ্ড তার বাঁ হাঁটুতে।’ ঠিক তখনি দৈত্যটা ঘরে ঢুকল বাঁ-পা সামনে দিয়ে। লোকটাও আঘাত করলো তার হাঁটুতে। দৈত্য কাতরাতে কাতরাতে মাটিতে লুটিয়ে পড়লো। মারা যাওয়ার আগে দৈত্য বললো, ‘আমি মরে গেলেও, তোমরা আমাকে মেরে ফেললেও, আমি মানুষদের খেতেই থাকব।’ লোকটা বললো, ‘আমি নিশ্চিত করবো, যেন তুমি কাউকেই আর কখনও খেতে না পারো।’ বলেই দৈত্যেটাকে আগুনে পুড়িয়ে ফেললো। এরপর দৈত্যের শরীরের পোড়া ছাই বাতাসে উড়িয়ে দিলো, যেন মিলিয়ে যায় তার সব চিহ্ন। আর সেই ছাইগুলো মশা হয়ে গেলো। মেঘের ভেতর থেকে দৈত্যটার গলা শোনা গেলো আর হাসতে হাসতে সে বললো, ‘আমি তোমাদের রক্ত খেতেই থাকবো পৃথিবী ধ্বংস হওয়ার দিন পর্যন্ত।’ দৈত্যের এমন কথা বাতাসে শোনার পর পরই লোকটাকে মশা কামড়ে রক্ত খেতে থাকলো। আরও অনেক মশার কামড় খেয়ে সে নিজের পায়ে চুলকাতে থাকলো।