ভূতের আলো

এটা একটা শোনা ঘটনা। আমাদের বাড়ির সামনের গলিতে এমন ঘটনা ঘটার কথা শোনা গেছে। গলিটা এমন যে রাস্তা থেকে দেখলে গলির শেষ মাথায় শিড়ি, গলির দুই দিকে দুইটা বাড়ি। ঘটনা প্রত্যক্ষ করে ডান পাশের বাড়ির নিচতলার মেয়েটা আজ থেকে প্রায় ১৪-১৫ বছর আগে।

একদিন রাতে ওই মেয়েটা ঘুমাচ্ছিল। রাত্রে প্রায় ৪ টার দিকে মেয়েটা একটা মহিলার পায়ের নূপুরের আওয়াজ পায়। নাচিয়েরা পায়ে যে নূপুর পড়ে সেটা। তো সে তা পাত্তা দেয় নাই, ভেবেছে ঘুমের মধ্যে কি না কি শুনেছে। এসব ভেবে ঘুমিয়ে পড়ে।

পরেরদিন একই সময় সে আবারো একই আওয়াজ পায়। এবার সে একটু আগ্রহী হয়। তার রুমের একটা জানালা ওই গলির দিকে মুখ করে ছিল। জানালা খুলে তাকালে গলির অনেকখানি দেখা যায়। সে জানালা খুলতেই তার রুম আলোতে ভরে যায়। আলো সয়ে এলে সে দেখতে পায় গলিতে একটা মহিলা সাদা নাচের কাপড় পরে নূপুর পায়ে হাটছে। ওই কাপড়ের উজ্জ্বলতায় পুরো গলি আলোতে প্রায় ভরে গেছে।

মহিলাটা গলির এ মাথা থেকে একবার ওমাথায় যাচ্ছে আর আসছে। আর তার মুখে ছিল এক অদ্ভূত হাসি। তবে তার চোখ ছিল ভয়ানক, ঠিক গোলাকার, মনি হালকা সাদা এবং লম্বাটে। মেয়েটা হঠাত করে মহিলাটার চোখের দিকে তাকাতেই সম্মোহিত হয়ে যায়। যেন ওই চোখ তাকে এখনি গিলে খাবে।

এভাবে মহিলা এবং মেয়েটা পরস্পরের দিকে তাকিয়ে থাকে। কিছু সময় পর ওই মেয়েটার মা ঘুম থেকে জেগে ওঠে। আর মেয়েকে ওভাবে জানালার বাইরে তাকিয়ে থাকতে দেখে ডাক দেয় কিন্তু মেয়েটা সে সম্মোহিত হয়ে থাকে। তখন তার মা তাকে একটা ধাক্কা দেয়।

এবার মেয়েটা হকচকিয়ে ওঠে। আবার যখন সে জানালার বাইরে তাকায় তখন মহিলাটা নাই। ফজরের আযান শুরু হয়ে গেছে। মেয়েটা পরেরদিন তার মাকে সব কথা বলে। কিন্তু তার মা পাত্তা দেয় না। সেদিন রাতে তার মা একই ঘটনার শিকার হয়।

কিন্তু সেদিন তার মেয়ে আগে থেকেই জেগে ছিল বলে তার মা বাঁচে যায়। তারা চলে যাওয়ার পর যখন নতুন ভাড়াটিয়া আসে, তারাও একই ঘটনা দেখে। কিন্তু যেভাবে ঘটনাটা শুরু ঠিক সেভাবেই শেষ হয়ে যায়। ওই মহিলাকে আর দেখা যায় না, তবে প্রায় রাতে সেই নূপুরের আওয়াজ ঠিকই পাওয়া যায়।

আগন্তুক ভূত

জমির ভূত

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *