ভুত বিষয়ক সত্য ঘটনা

আমি যে জায়গাটাই বসে আপনাদের সাথে এই কাহিনী শেয়ার করছি, ঘটনাটা তার থেকে ১৫০ কিলোমিটার দূরের এক অজঁ পাড়া গায়েঁ, যেখানে ভোরের সূর্য উঠে সবার আগে আবার সূর্য ডুবে ও সবার আগে অর্থাৎ অন্ধকার নেমে আসেও বেলা শেষ হওয়ার আগেই। যাই হউক আমি কিছু নাম ও চরিত্র সেট করে এটাকে গল্পের রুপ দেওয়ার চেষ্টা করেছি, ঘটনা’টা যদি পড়ে কারো ভাল লাগে তবেই আমার লেখাটা স্বার্থক হবে। এবার নিবেদন করছি বিস্তারিত।

ফরিদপুর জেলার নারকেলবাড়ী ফেলে আরও চার কিলোমিটার পূর্বে অবস্তিত মিশন স্কুলের নাম অনেকের মনে থাকলেও থাকতে পারে তবে হালদা বাড়ীটির নাম সেই অঞ্চলের লোকের মুখে মুখে তখন এক নামে পরিচিত ছিলো, রাত কি বিরাতে তো কথায় নেই, দিনে-দুপুরেও ওই বাড়ীতে কেউ যেতে চাইলেও তার সঙ্গী পাওয়া একপ্রকার দুরহ ছিলো, আমি সেই হালদা বাড়ীর কথা আপনাদের পেশ করতে যাচ্ছি।

ঘটনাটা খুবই সাদামাটা শুরু হলেও এর শেষ ছিল ভয়ানক ভয়ের, যা আমি নিজ চোখে নিজেকেই বিশ্বাস করতে পারছিলাম না যে এইসব কেমনে হচ্ছে, না না, আগে দিয়ে বলে ফেললে তো মজাটাই নষ্ট হয়ে যাবে। বরং প্রথম থেকেই শুরু করি।

হালদা বাড়ীটিতে একটি পরিবার বসবাস করতো। বাড়ীটি কোন এক হিন্দু ব্যাক্তির হলে ৭১ এর যুদ্ধের পর পরই ওই বাড়ীতে বসবাস করছিলো তেমনই একটি পরিবার যার ডাকনাম নির্মল হলেও সে একজন মুসলমান আর তার নয় থেকে দশ বছর বয়সের একটি মেয়ে, মেয়েটিকে খুজে পেয়েছে যুদ্ধের সময় এক নির্মল বাবু ডাকনাম হলেও আসল নাম সুলাইমান একনজর দেখার পর আপনার উতসাহ সব উবে যাবে এইরুপ লোক। এত ভালভাবে তখন খেয়াল আমি করিনি কেননা আমি এসেছি মুলত হালদাকে দেখতে, শোনা কথা যা, হালদার মতো এত দুরন্ত বালিকা সেই গ্রামে খুব কমই দেখা যেত, এক গ্রাম থেকে আরেক গ্রামে গিয়ে ডাঙ্গুলি খেলে মাটা ফাটিয়ে দেইনি এইরুপ ঘটনা তার খুব কমই আছে, হালদার যেদিন থেকে সব ধরণের যোগাযোগ বন্ধ সেই দিনের থেকে আমার উক্ত গ্রামে বসবাস। (এক মাস স্কুল ছুটি সব মিলিয়ে, তখন সব ছুটি এক সাথে পাওয়া যেত)

হালদা কথা বলে না, এক দৃষ্টিতে ঘন্টার পর ঘন্টা সে নিজের চোখকে নিজেই দেখছে এমন করে তার তাকানো, তার চঞ্চলতার স্বাক্ষী আমার নতুন বন্ধু নিখিল, তার থেকে যা শুনলাম, হালদা এত দুরন্ত ও দস্যি মেয়ে ছিল যেমন, তেমন নৌকা চালানো, নারিকেল গাছে চট জলদি উঠে পড়া, শামুক ছুড়ে গাছে বিধানো, চোখের পলকে ডুব সাতাঁর দিয়ে পুকুরের নীচে থেকে মাটি তুলে এনে দেখাতে পারতো যা গ্রামের কোন যুবকও তা করতে সাহস করতো না, আর ডাব গাছ, সুপারী গাছে উঠে কাদিঁ কাদিঁ সুপারি, ১২/১৪টা ডাব সহ কাধেঁ নিয়ে কত সহসা সে নিচে নেমে আসতো যা ছিলো দেখার মতো, তার সাথে দৌড়’দিয়ে পারা যেত না কেননা তার শরীর ছিল এত রোগা যে মনে হবে এখুনি পড়ে যাবে সে, কিন্তু দৌড়ে ফাস্ট। সারাদিন বাড়ীটাতে নালিশ আর ঝগড়া, হালদার কান্নার আওয়াজ, সাতারের আওয়াজ সেই বাড়ী থেকেই আসতো, কাছে গেলে দেখা যেত পুরো বাড়ি উজার করে রেখেছে হালদা নিজে। এসব নিখিলের কাছে শোনা আমার কিন্তু আমি বিশ্বাস করি কেননা গ্রামের মানুষরা তখন মিথ্যা তেমন বলতেন না।

সেইবার পুজোতে হালদা’কে স্বরস্বতী সাজিয়ে যখন পুজা শুরু করবে, তখনই সমস্যাটা শুরু হলো, একপর্যায়ে তাকে ধরে সোজা করার চেষ্টা হলো, তার মুখ থেকে লালা গড়িয়ে এক অবস্তার সৃষ্টি হলো শেষে ডাক্তার ডাকো, ঢাকায় নিতে হলো। অতপর সেই থেকে হালদা এখন যেমন আছে, কোন কথা নেই, নড়ন-চড়ন বন্ধ আর নিজের দিকে নিজেই তাকিয়ে থাকে এক দৃষ্টিতে, তবে ব্যাতিক্রমটা যেদিন আমি নিজ চোখে দেখলাম আমার সমস্ত শরীর কাটাঁ দিয়ে উঠলো।

আমি কিছু জানতাম না। নিখিল আমাকে বলেছে, নিখিল আমার সাথে তুই তোকারী করতো কেননা সে আমার থেকে বয়সে দুই বছরের বড়ো, যা হোক, ঘটনাটা বলি, আমি আর নিখিল গেলাম সে বাড়ীতে, বাড়ীটি প্রত্যাহ ফাকা থাকে, আমরা লুকিয়ে লুকিয়ে হালদা’কে যেখানে রেখেছে সেদিকে গেলাম, কেননা হালদা কভার করার জন্য ঢাকা ও বিভিন্ন দেশ বিদেশ থেকেও লোক এসে জ্বালাতন করে করে হয়রান করে পরিবারটি, তাই হালদাকে তারা দিন রাত যে ঘরে রেখেছে তা আমি আর উল্লেখ করতে পারলাম না, কেননা বুঝতে পারছি, এই পরিবারটির উপরে বেশ দখল গেছে এবং এখনও যাচ্ছে, আমি মাথা নীচু করে নিখিলের সাথে দমদমা দিয়ে টিকটিকির মতো করে চলে গেলাম যেখানে হালদা’কে লুকিয়ে রেখেছে পরিবারটি, অতপর সবশেষে যখন হালদা’র সামনা সামনি হয়েছি তখন শরীর জুড়ে ঘাম আর ময়লা, ঝেড়েটেরে আমি হালদার জন্য পকেটে করে নিয়ে আসা লাড্ডু বের করলাম, মায়ের হাতে বানানো, হালদা সেই ভাবে লাড্ডুগুলো নিলো, খাওয়ার পর তার পানি খাওয়ার দরকার যা ছিলো একটু ধূরে, কিন্তু নিখিল আমাকে বারণ করলো, সে বললো হালদা নিজেই পানি খেতে পারে দেখ, বলতে না বলতে আমি দেখলাম একটা হাত যেটা তার (হালদা) শরীরে ভেতর থেকে বের হয়ে একটু দূরে হলেও হাত পৌছাবার প্রশ্নই উঠে না, সেখানে রাবারের মতো টান টান হয়ে মগ দিয়ে মটকার পানি নিয়ে আবার চলে এসে অন্য হাতে নিয়ে ধক ধক করে সে পান করছে, আর আমার আত্মা খাচাঁ ছাড়া, এইরুপ একটা দৃশ্য আমি দেখবো কখনও কল্পনাও কবি নাই, যেটা অবাস্তব শুধু না যেটা এখনকার যুগে অচল, তার প্রায় ৬ দিন পর আমি বিছানায় উঠে বসলাম, আমার এইরুপ লাগাতার অসুস্ততা কোনো দিনই হয় নি, মার সন্দেহ বাড়লে আমাকে ঢাকায় নিয়ে আসে এবং চেক করে সব কিছু ঠিক ঠাক করার পরেও আমাকে আর ফরিদপুরের ঔই বাড়ীতে পাঠাতে আমি নিজ থেকে চেষ্টা করলেও মা’র শাসনে আর যাওয়া হয়নি, আজকে বুঝতে পারি, এটা আসলে আমার হেলুসিনেশন হতে পারে, এইরুপ রাবারের মতো হাত যতো লম্বা বানাচ্ছে ততই লম্বা হচ্ছে আবার এক পর্যায়ে ছোট হচ্ছে….এটা ইম্পসিবল। আই ডোন্ট বিলিভ ইট, শেষ খবর পাওয়া পযন্ত ঘটনাটা যে জায়গায় ঘটেছিলো সব কিছু সে জায়গায় আছে, ব্লগার ভাইদের কারো যদি তার ও বেশী জানার ইচ্ছা থাকে তবে যোগাযোগ করবেন, আমি ঠিকানা ও ম্যাপ ও আনিয়ে রেখেছি, হালদা ভালো হয়ে উঠুক এটা আমি সবসময় চেয়েছি, এখনও তাই চাইবো। সময়ের সাথে সাথে নিশ্চয় এখন সে একজন রুপসী নারী বা রুপসী ভুত কিছু একটা হবে। আজ আপাতত গল্প এখানেই সমাপ্তি। ধন্যবাদ।

"আলোর পথ"-এ প্রকাশিত গল্পসমূহ ও লেখনী মূলত পাঠক, শুভানুধ্যায়ী এবং সম্মানিত অবদানকারীদের কাছ থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। এই কনটেন্টগুলোর উপর আমরা কোনো মেধাসত্ত্ব (copyright) দাবি করি না। যদি কোনো গল্প, ছবি বা তথ্যের কপিরাইট সংক্রান্ত বিষয়ে আপনার প্রশ্ন, সংশয় বা আপত্তি থাকে, তাহলে অনুগ্রহ করে আমাদের যোগাযোগ পৃষ্ঠায় যোগাযোগ করুন। আমরা যথাযথ আইনানুগ পদ্ধতিতে বিষয়টি পর্যালোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

দুঃখিত!