তোমার নাম কি?
আমার নাম নেই । নাম্বার আছে । আমার নাম্বার ৪৫৫৪লোএপ্লা ।
তোমার নাম তাহলে লোএপ্লা
হ্যা । লো তে লোহা । এ তে এলোমিনিয়াম । প্লা তে প্লাস্টিক । আমাকে বানানো হয়েছে এই উপাদান দিয়ে
আচ্ছা । আমার নাম আসাদ । আই’ম ফ্রম বাংলাদেশ
আমি জানি
কিভাবে জানো?
আমাদর মস্তিস্কে গতকাল রাতে আপনার বিস্তারিত তথ্য দেয়া হয়েছে । সেখানে আপনার একটি ছবি দেয়া হয়েছে । আপনার সাথে দেখা হওয়া মাত্রই আমার ইলেকট্রিক মস্তিস্ক সেই ছবি স্ক্যান করেছে
স্ক্যান করে কি চেহারায় মিল পাওয়া গেছে?
৯৮% মিল পাওয়া গেছে । ২% মিল পাওয়া যায় নি । ছবিতে আপনি ক্লিন সেইভ । এখানে খোঁচা খোঁচা দাড়ি আছে । আর আপনার চোখের নিচে কালি পড়েছে
আসাদ রোবট কে চলে যেতে বলল । রোবটটা চলে গেল আসাদের সামনে থেকে । আসাদ দীর্ঘ শ্বাস ফেলল । তার কিছুদিন ধরে ঘুম হচ্ছে না । ঘুমের টেবলেট খেলেও হচ্ছে না । একটা মিশনে সে পৃথিবীর বাইরে যাচ্ছে আজ রাতে ।
ন্যাপচুন গ্রহের খুব কাছাকাছি গিয়ে সে অবস্থান করবে । তারপর ঢুকে যাবে নেপচুন গ্রহে । নেপচুন গ্রহে বসে ওদের স্পেশাল টিম পৃথিবীকে তাদের বাহ্যিক খাবারের উৎস বানাবার নীল নকশা করছে ।
ওদের প্রধান খাদ্য সূর্যের হলুদাভ আলো । পুরো পৃথিবীতে ওরা এক ধরনের অদৃশ্য জাল দিয়ে ঢেকে দিতে চায় । সেখানে জমা হবে সোলার এনার্জি । কিন্তু এতে পৃথিবীর মানুষদের হবে ভয়ানক বিপদ ।
আসাদ তেমন একটা মিশনেই যাচ্ছে । আসাদ রাতের বেলা স্পেস শিপে উঠার আগে ব্যাগ গুছিয়ে নিল । ব্যাগে বাড়তি চশমা আছে কিনা দেখে নিল । অবসর সময়ে বই পড়তে ভাল লাগে । ভাল বই পাওয়া যায় নি । একটা নিয়ে যাচ্ছে । সস্তা প্রেমের গল্পের একটা উপন্যাস । বই এর নাম “প্রেম করব বাসর রাতে” ।
বিজ্ঞান কাউন্সিল এর লোক তার বইটা কিভাবে যেন দেখে ফেলে বই এর দিকে ভুরো কুচকে তাকিয়েছে । আসাদ বেপার টা কে তেমন পাত্তা দেয় নি । আমার বই আমি নেব । কার কি?
আসাদ সহ মোট সাতজন বিজ্ঞানী আছে । মোট স্পেস শিপ সাত টি । সাত জনের জন্য সাতটা স্পেস শিপ ।
অত্যন্ত দুঃখের ব্যাপার হল সব গুলো স্পেসশিপ নেপচুন গ্রহের অতি ক্ষুদ্র কিন্তু বিশাল ক্ষমতাধর প্রাণীরা ধ্বংস করে ফেলল । আসাদকে ধরে নিয়ে যাওয়া হল তাদের ক্যাম্পে ।
নেপচুন গ্রহের ক্যাম্প পৃথিবীর ক্যাম্পের মত নয় । সবুজাভ শ্যাওলার চাদরের মত দেয়াল । পায়ের নিচে মাটি নেই কেমন যেন আঠালো । মনে হয় এখনই পা দেবে যাবে ।
আসলে সবই তাদের বসবাসের উপযোগী করে বানানো হয়েছে । যদিও তারা অল্প সংখ্যক । তবে ক্ষমতাধর ।
নেপচুন গ্রহের সেই প্রাণীদের নেতা কি যেন বলল । একটু ভয়েস কনভার্টারে তা রুপান্তরিত হয়ে শোনা গেল
আপনি কে?
- আমি আসাদ
- আসাদ মানে কি?
আমি জানি না । এই নাম আমার বাবা রেখেছেন । ৭১ এর যুদ্ধ এর আগের সময়কালে আসাদ নামের একজন যুবক ছিলেন । যার মৃত্যুর পর তার শার্ট নিয়ে মিছিল হয়
তুমি বেশি কথা বল
হ্যা
তোমাদের গ্রহের নাম কি?
আর্থ । পৃথিবী ।
তোমাদের গ্রহে আমরা আমাদের খাদ্য উৎপাদন করব । তুমি আমাদের সহযোগিতা করবে
জি আচ্ছা
সাথে সাথে রাজি হয়ে গেলে? তার মানে সামথিং ইজ ভেরি রঙ
ঠিক আছে আমি রাজি না । আপনাদের হেল্প করব না ।
তুমি রেগে যাচ্ছ । রেগে যাওয়া মানুষদের বড় দোষ ।
হুম ।
তুমি আমাদের সামনে বসে আছ । ভয় পাচ্ছ না?
না । কারন প্রত্যেক প্রাণীকেই মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতে হবে ।
হ্যা এই ব্যাপারে তোমরা মানুষ এর সাথে আমদের মিল । আমাদের ও মরতে হয় ।
এখন কাজের কথায় আসি । আমরা পৃথিবীর সব মানুষকে একধরনের সবুজাভ গ্যাস এর সাহায্যে মেরে ফেলতে চাই । এতে আমাদের কাজ সহজ হবে
আমাকেও মেরে ফেলবেন?
না তোমাকে মারব না । সবাইকে না । হয়ত ৫০-৬০ জন বেঁচে থাকবে । আমাদের মত । যেমন আমরা মাত্র ৫০-৬০ জন সব মিলিয়ে ।
তুমি কি আমাদের হেল্প করবে মানুষ দের মারতে?
জি আচ্ছা । আপনারা আমাদের সাথে স্পেস শিপে চলুন আমাদের পৃথিবীতে নিয়ে যাই
তুমি আমাদের কাজ করে দিতে পারলে তোমাকে পৃথিবীর অর্ধেক দিয়ে দেব । সেখানে তুমি তোমার প্রিয় আপন জন দের নিয়ে যেতে পারবে
আচ্ছা চলুন তবে । আপনারা সবাই আমার স্পেস শিপে চলুন / সোলার এনার্জি পাবেন পৃথিবীতে ।
অকে
নেপচুন গ্রহের সকল ক্ষুদ্র কিন্তু বুদ্ধিমান প্রাণী আসাদের সাথে স্পেস শিপে উঠল । আসাদ স্পেস শিপ চালানো শুরু করল ।
তাদের প্রধান জিজ্ঞেস করল,
আমরা কোথায় যাচ্ছি
আসাদ হাসল
কোথায় যাচ্ছি আমরা?
সুর্যের পথে ।
মানে?
হোয়াট দ্যা …
আসাদ স্পষ্ট স্বরে বলল,
আমরা সূর্যের কাছাকাছি চলে যাচ্ছি কিছুক্ষনের মধ্যে আমরা সবাই গলে পুড়ে যাব ।
নেপচুন গ্রহের ক্ষুদ্র বুদ্ধিমান প্রাণীরা ক্ষোভে আসাদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ল । আসাদের ঘাড়ে নাকে কানে গলায় কামড়ে চামড়া তুলে ফেলল । আসাদ মারা গেল । তার কিছুক্ষনের মধ্যেই সূর্যের অনেক কাছাকাছি চলে এল স্পেস শিপ । এবং সুর্যর প্রখর আলোয় । স্পেস শিপ গলে গেল । সাথে গলে পুড়ে ধ্বংস হয়ে গেল সেই প্রাণীদের দল …