ভবিতব্য

এক নিরীহ বৃদ্ধের একটি মাত্র ছেলে ছিল। ছেলেটি ছিল তরূণ আর অসীম সাহসী, শিকারে নিপুন এবং খুবই উৎসাহী।

বৃদ্ধ একদিন স্বপ্ন দেখলেন, তাঁর একমাত্র ছেলেটিকে সিংহ মেরে ফেলেছে। এই স্বপ্ন দেখে বৃদ্ধটি খুবই ভয় পেয়ে গেলেন, কি জানি কি হয়! স্বপ্নে দেখা ব্যাপার অনেক সময় বাস্তবেও ঘটতে দেখা যায়। যাই হোক, সাবধান থাকাই ভালো মনে করে তিনি মাটির নিচে উঁচু পাঁচিল দেয়া একটা বড় রকমের ঘর তৈরী করিয়ে ছেলেটিকে সেখানে আটকে রেখে বাইরে প্রহরী মোতায়েন করে দিলেন।

ছেলের আবার খুব শিকারের শখ। জীবজন্তু দেখলে তার মন ভালো থাকবে মনে করে তিনি ঐ ঘরের দেওয়ালে শিল্পী দিয়ে নানান জীবজন্তুর ছবি আঁকলেন, সিংহের ছবিও অবশ্য বাদ পড়লো না।

এই সব ছবি দেখে শিকারী ছেলের মন ছটপট করতে লাগল, কবে ছাড়া পাবে সে-কে জানে? বিশেষ করে সিংহের দিকে নজর পড়লেই তার মিজাজটা রীতিমত খিঁচড়ে যেতে লাগল। সেটাকে লক্ষ্য করে ছেলেটা বলতো – মর, তুই মর, তুই আর বাবার দেখা মিথ্যে স্বপ্ন-এই দুই কারণে আমি এখানে গৃহবন্দী। কি করে যে তোকে খতম করব!

এই সব ভাবতে ভাবতে সিংহের ওপর রাগ আর সামলাতে না পেরে – দাঁড়া, দেখাচ্ছি তোর মজা বলে দেওয়ালে আঁকা সিংহের চোখ উপড়ে নেবার চেষ্টায় সজোরে চোখের ওপর নখ ফোটাতে গেল। অমনি দেওয়ালের পলস্তারা খানিকটা ঢুকলো ছেলেটার নখের ভিতর। দারুণ যন্ত্রনা হতে লাগল। নখের ডগা থেকে কুঁচকি পর্যন্ত যন্ত্রনার চোটে সারা শরীর যেন বিকল হয়ে গেল।

শেষে এই অসহ্য যন্ত্রণার ফলে হলো জ্বর। বিষম জ্বর। সেই জ্বরে ছেলেটা মারা গেল। সিংহের হাতে ছেলের মৃত্যু হবে স্বপ্ন দেখেছিলেন বৃদ্ধ, তাই-ই হলো, ছবি হলেও সিংহ তো বটে।

উপদেশ: নিয়তির লিখন খন্ডানো যায় না।

কুকুরে কামড়ানো মানুষ

অভিযোগ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *