
গোপাল ভাড় একদা খেয়া নৌকা করে পারে আসছিল। তোড়ে জোয়ার আসার সময় গোপাল খেয়া নৌকা থেকে জলে পড়ে গেল মাঝনদীতে। পড়েই নাকানি চোবানি খেতে লাগল। ভীষণ স্রোত, তাই কেউ তাকে তোলবার জন্যে, জলে ঝাপ দিতে সাহস করল না।
একখান ডিঙ্গি আসছিল পাল তুলে, তা থেকে মদন মাঝি, দেখতে পেয়ে লাফ দিয়ে পড়ে গোপালকে টেনে তুলল তার ডিঙ্গিতে। আগে চিনতে পারেনি, এখন দেখলে, তার মহাজন গোপাল ভাড়কে সে বাচিয়েছে। গোপালের কাছে মদন মাঝি কিছু টাকা দেনা করেছিল। আশা হলো, তাহলে দলিলখানা হয়তো গোপাল অমনি অমনি ফেরত দিতে পারে।
মদন মাঝি এই আশ্রায় মনে মনে কাদছিল। কিন্তু গোপালের প্রথম কথাতেই সে নিরাশ হলো। গোপাল বলল, ‘তুমি আমায় বাচিয়েছো মন। আমিও দরকার হলে তোমার জন্য প্রাণ দেব। কিন্তু তা বলে সুদ ছাড়তে গিয়ে ব্যবসা কখনো মাটি করবো না।’
গোপালের প্রাঞ্জল কথা শুনেই মদন সরকারের প্রাণ জল, তার আশার গুড়ে বালি। হায়রে। আসল ছাড় তো দুরস্থান সুদের ঠ্যালাতেই মদনের লবেজান। পরে গোপাল তার দলিল ফেরৎ দিয়েছিল।