লজ্জা – ঘৃণা – ভয় এই তিন থাকতে নয় ।। আব্বুর এই কথাগুলো শুনে মনে হয়, বলেই ফেলি উপদেশ এবং ভাষনের একটা স্কুল খুলে ফেলো। কারন রাতে যখন গরমের কারনে খালি গায়ে লুঙ্গি কাছা দিয়ে প্রায় খুলি খুলি করে ঘুরি তখন তার আর বলতে বাধে না… দেহো দেহো অবস্থা খানা ! এ বলে আমার পোলা ! অয় হারামজাদা, কাছা না দিয়া লেংডা হইয়া ঘোর না, তাও কইতে তো পারমু পোলা ওইডা পাগল হইয়া গেছে। দাম্রা পোলা উদাম শইল্লে ঘুরে, লুঙ্গি পড়ছে হেইয়াও খোলার জোগার! এই কুত্তার ছাওডা লইয়া যামু কই ?? ঐ পাগলের মা কিছু কইবানি নইলি কিন্তু ঝাড়ু দিয়া পিডাইয়া ঘরের থে নামাইয়া দিমু …… বোঝ এবার, নিজেই বইলে লজ্জা থাকতে নেই, এখন নিজেই বলে আমি নাকি পাগল! আমার লজ্জা নেই। আব্বুর এই বাবা নামক পাগলামিটা কখনও কানের লতিতেও বাধি নি। কি শুধু বুল ডগের মত সারাদিন হাঁও হাঁও করতে থাকে। বিরক্তও হতাম মাঝে মাঝে ভীষন আকারে।
কিন্তু অবাক হতাম যখন দেখতাম রাতে ঘুম ভেঙ্গে আব্বুর বুকে আমার মাথাটা। বড় হয়ে গিয়েছি ! অনেক বড়, আব্বুকে পাশে পেয়েও মাথাটা ওই বুকে ঠেকিয়ে জড়িয়ে ধরতে পারতাম না। আমি অনেক বড়! সেদিন হুট করে একটা ফোন আসলো, শুধু শুনলাম অতি কষ্টস্বরে বলা… আব্বুরে! আর কিছু শুনতে পারলাম না, না চাইলাম না… শুধু মনে হল কড়াতের ধারালো আঁকাবাঁকা ফলাগুলো হৃদপৃন্ড, কলিজা, পাজর ছিড়ে ফেলছে, হামার দিস্তার বারি যেন ভেঙ্গে ফেলছে মস্তিস্কের খোলস।
বুল ডগের বাচ্চাটার মতই হাঁও হাঁও করতে করতে এক দৌড় দিলাম। সেদিন পানি এসেছিলো চোখে! কেন ? আমি তো বড় হয়েছি ! নিশ্বাসের গতি বৃদ্ধি পেয়েছিলো… কিন্তু তাতে অক্সিজেন আর নাইট্রোজেন ছিল না ছিলো শুধু আব্বু … আব্বু … আব্বু … আর আব্বু … তেমন কিছু হয়নি আব্বুর, শুধু গ্যাসের সমস্যাটা একটু বেড়েছে, বুকটা নাকি আটকে আটকে গিয়েছিলো, তাই সেদিন আবার ছোটই হয়ে গিয়েছি, জড়িয়ে ধরেছি আমার বুল ডগকে। বুকের ভেতর আটকে গিয়েছিলো নাকি ?? তাই বুকটাকেই আঁকড়ে ধরে রেখেছিলাম বুল ডগের ছানার মত। কোথাও আটকাতে পারবে না্, দেবোই না আটকাতে। আব্বু …… … কিরে আব্বু ??? তুমি না একটা কথা বলতা দাঁত নাকি কি জানি ?? হুম – … দাঁত থাকতে দাঁতের মর্ম কেউ বোঝে না ।