এক বনের পাশে ছোট একটা নদী।ঠিক রবী ঠাকুরের ছোট নদীর মত।তবে এই নদীতে হাটু জল নয়,থই থই জল।নদীতে স্রোতও অনেক।
নৌকা দিয়ে এপাড়-ওপাড় হতে হয়। নিত্য দিনের মত একটি হাতি সেই নদীতে জল পান করতে এল। কিছুক্ষন পরে একটি সিংহও এল্।তারা নিরবে দুজনে জল পান করতে
ছিল,হঠাৎ সিংহ মাথা তুলল,তারপর নদীর মাঝখানে পাল তোলা নৌকায় বসা লোকটাকে দেখিয়ে বলল,মামা দেখ ওটা কি!হাতি মাথা
তুলে দেখলো তারপর তাচ্ছিল্য ভরে বলল ওটাতো পাল তোলা নৌকা আর নৌকা চালাচ্ছে একটা মানুষ।তা কি হযেছে,প্রতিদিনইতো দেখি।
সিংহ বলল,তা ঠিক।তবে একটা বিষয় খেয়াল করেছ!হাতি বলল কোন বিষয়?সিংহ বলল মানুষ কত বুদ্ধিমান আর চালাক দেখেছ!
হাতি বলল তাতে দেখার কি আছে।সিংহ বলল আছে মামা আছে। বাতাস দেখা যায় না,তাছাড়া বাতাস যখন ঝড় হয়ে আসে তখন
তার মোকাবেলা কেউ করতে পারে না।সব তছনছ করে দেয়।অথচ সেই বাতাসকে কাজে লাগিয়ে বিনা প্ররিশ্রমে নৌকা টানিয়ে নিচ্ছে।
আর আমরা তো সে হিসাবে সামান্য।আমাদের দিয়ে না কবে হালচাষ করাতে শুরু করে দেয়।তাই বলি মামা চল আমরা আর সামান্য
বনজঙ্গলে থাকবো না।গভীর অরন্যে চলে যাব।সেখানে মানুষ সহজে আমাদের খুজে পাবে না।হাতি অবহেলার ছলে বলল থামতো!বাতাসের
হাত পা নাই, তাই তাকে খাটাচ্ছে।আমাদেরতো হাত পা আছে। ধরে এমন আছাড় দেব যে ধারে কাছে ঘেষতেই পারবে না।সিংহ
বলল না মামা ব্যাপারটা আমার কাছে সহজ মনে হচ্ছে না। আমি আর এখানে থাকবো না।গভীর অরন্যে চলে যাব।হাতি বলল তুমি যদি ভয় পেয়ে থাক যাও।আমি এখানেই থাকবো। আমি মানুষকে ভয় পাইনা। সেই থেকে সিংহ গভীর অরন্যে চলে গেল।আর হাতি থেকে গেল।পরে সিংহের কথাই সত্যি হল।হাতি মানুষের মায়াজালে
ধরা পড়লো।বুদ্ধির কাছে হেরে গেল।হাতিকে দিয়ে মানষ গাছের গুড়ি টানায়,সার্কাস দেখায়,পিঠে উঠে ঘুরে বেড়ায় আরও কত কি কাজ যে করায় তার ইয়ত্তা নেই।হাতি যদি সে দিন সিংহের কথা শুনতো তাহলে আজ মানুষের গোলাম হয়ে থাকতে হতো না।