ব্রহ্মদত্তের আমলে একবার বোধিসত্ত্ব এক বণিক বংশে জন্ম নেন। নিজের বুদ্ধি ও পরিশ্রমে তাঁর বেশ নামযশ হয়। কালে কালে বারাণসীর শ্রেষ্ঠ হলেন। ‘চুল্ল শ্রেষ্ঠী’ খেতাব পেলেন। জ্যোতিষ শাস্ত্র তাঁর খুঁটিয়ে পড়া ছিল। গ্রহ নক্ষত্র বিচার করে যাকে যা বলতেন অক্ষরে অক্ষরে ফলে যেত।
বোধিসত্ব একদিন রাজদরবারে যাবেন। রাস্তায় দেখেন একটা মরা ইঁদুর পড়ে আছে। সেই সময়কায় নক্ষত্র বিচার করে তিনি দেখলেন ইঁদুরটি তুচ্ছ করার মত নয়। কারণ ভাল বংশের কোন সৎ লোক যদি এটাকে তুলে নিয়ে যায়, তাহলে তার কপাল ফিরে যাবে। ব্যবসা করে কোটিপতি হয়ে যাবে।
এখন হয়েছে কি, ঠিক সেই সময় ঐ রাস্তা দিয়ে সৎবংশের এক সৎ যুবক কোথাও কাজে যাচ্ছিল। সে বেচারা বেশ গরীব। বেকার। বোধিসত্ত্ব তাকে ডাকলেন, ‘শুনছ, ও ভাই।’
‘কিছু বলছেন?’
‘হ্যাঁ। এই যে মরা ইঁদুরটা দেখছ না…’
‘হ্যাঁ’
‘ভক্তি করে এটা তুলে নিয়ে গিয়ে যদি ব্যবসা শুরু কর তবে তোমার দুঃখ থাকবে না। রাতারাতি বড়লোক হয়ে যাবে।’
যুবকটি বোধিসত্ত্বের কথামত ইঁদুরটা তুলে নিয়ে হাঁটা শুরু করল। কিছুদূর যেতেই এক দোকানদার তাকে ডাকল। দোকানদারের একটা পোষা বিড়াল আছে। এক পয়সা দিয়ে সে বেড়ালের জন্য ইঁদুরটা কিনে নিল। যুবকটি ঐ এক পয়সা দিয়ে খানিকটা গুড় কিনল। তারপর এক জালা জল নিয়ে, থালার উপর গুড় রেখে, এক বনের ধারে গিয়ে বসল।
মালিরা ঐ বনে রোজ ফুল তুলতে যায়। তারা ফুল তুলে ক্লান্ত হয়ে বন থেকে বেরিয়ে আসতেই যুবককে দেখতে পেল। তেষ্টায় তখন তাদের ছাতি ফেটে যাচ্ছে। সবাই লাইন ধরে তার কাছে জল ও গুড় খেল। কলজে জুড়িয়ে গেল। তখন তারা সবাই যুবককে এক মুঠো করে ফুল দিয়ে গেল।