বুদ্ধিমত্তার গল্প

রফিক মাদ্রাসায় পড়ে। সে নিতান্তই গরীব, ঘর ভাড়া নেওয়ার মত তার সামর্থ নেই। তাই মসজিদে থেকে লেখাপড়া করে। কপালে যা জুটে তা দু’বেলা খেয়ে দিনাতিপাত করতে লাগল। এভাবেই কেটে গেল দুটি বছর।

একদা তাঁর বন্ধু বেড়াতে এসে তার অবস্থা জিজ্ঞাসা করল। তখন সে বলল ভাত দু’বেলা জুটলেও তরকারির তেমন ব্যবস্থা হয় না। এদিকে মসজিদের পাশে ছিল একটা হোটেল, তাই সকাল সন্ধ্যা হোটেলে যা রান্না হত তার ঘ্রানে ছাত্রটির খাওয়া হয়ে যেত।

হোটেলের মালিক ঘটনা জানতে পেরে ছাত্রটির কাছে দু’বছরের বিল পরিষোধ করার দাবি করে বসল। গরিব বেচারা হোটেলের মালিককে অনেক বুঝানোর পর নিরুপায় হয়ে কাজি সাহেবের কাছে গেলো। কাজি সাহেব সবকিছু শুনে ছাত্রটিকে মূল্য পরিষোধ করতে বললেন। তখন সে অনেক অনুনয় বিনয় করে কাজি সাহেবকে বুঝতে লাগল কিন্তু কাজি সাহেব নাছোড় বান্দা। অবশেষে ছাত্রটির কোন কথায় শুনল না।

তখন ছাত্রটি নিরুপায় হয়ে অনেক কষ্ট করে টাকা যোগাড় করে কাজির দরবারে উপস্থিত করল। সে সময় সিকি, পয়সা ইত্যাদির প্রচলন ছিল। কাজি সাহেব পয়সাগুলো পাকাতে ফেলে দিলে ঝন ঝন করে আওয়াজ হলো। তখন কাজি সাহেব হোটেলের মালিককে বললেন, “ভাই! পয়সাগুলির আওয়াজ শুনেছেন?”

তখন লোকটি বলল, “হ্যাঁ, শুনেছি।” এরপর কাজি সাহেব বললেন, “ঠিক আছে, এই আওয়াজ থেকেই আপনার মূল্য নিয়ে নিন।” লোকটি তখন তার ভুল বুঝতে পারল এবং নিরুত্তর হয়ে গেল। আর কাজি সাহেব ছাত্রটিকে পয়সাগুলো ফেরত দিয়ে দিলেন।

বর্তমানে আমাদের সমাজে এমন অনেকেই আছে যারা মানুষের সম্পদ অন্যায়ভাবে আত্মসাত্ করতে সামান্য কুণ্ঠাবোধও করেনা। আপনরা উক্ত ঘটনা থেকে শিক্ষা গ্রহণ করুন। আর এই কাজ ছেড়ে দিন।

বুদ্ধিমত্তার গল্প

গোপাল ভাঁড় এর বাংলাদেশ জয়

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *