বুচি

সগ্গলি আমারে বুচি কইয়েই ডাকত। সৎ মায়ের ঘরে আপনা ভাই, ভাইবৌ, আর ভাস্তে ভাস্তিতে ভরা সংসারডা,আর আমি ছিলাম প্যাটে -ভাতে। আমার গায়ের রঙ ছিলো সইস্যের ত্যালের মতো। নাক বুচা ছিল দেইহে কিডা যে নাম বুচি থুইছিল কবার পারিনে!
আমার বুদ্ধি ভালো ছিলোনা। কোহানে কি কতি অবি করতি অবি ভালো বুজতাম না। বয়স আমার আঠারো উনিশ অবি নাকি কোম বেশি অবি তাও কবার পারবো না। তয়, সৎ মার গাইলের মধ্যি যুবতি টুবতি এট্টা ব্যাপার ছিল মনে অয়! যদি কতাম ‘এ মা এট্টু পান দি, খাই।’ মা পিছের পাছা দিয়ে বাইরোতো আর গাইল দিয়ে কত ‘দামান ধইরে তারে কবার পারিসনে?’
আমার খালি হাস আসতো, আমি হাসতাম! মনে অয় লজ্জাও পাতাম!
জীবনে কান্দিনেই আমি কোনোদিন। আপনা ভাই ছিল আমার ব্রিটিশ আমলের বি এ! ভাইয়ের বৌ একখান লক্ষ্মী সুসংসারি বৌ! অনেক যুক্তা ছিল তার! আমি খালি দেহি আর হাসি, কত সুন্দর দেকতি আমার ভাবি! একবার ভাবির সাইজে ছাওয়ালডা হওয়ার পর জিগেস করছিলাম ‘ভাবি, আমার ভাই তুমারে ম্যালা আদর করে, না?’ জবাবে ভাইর হাতে তার গঞ্জে যাওয়ার চামড়ার জুতার মাইর খালাম, আর হাসলাম!
আমি খালি হাসি, দুনিয়ার সব কিছু দেহেই আমার হাস আসে। ভাইস্তে খাটেততে গড়াইয়ে পইড়ে গেছে তাতেও আমার হাস আসে, কও তো কেমন লাগে? সবাই ত্যাক্ত বিরক্ত হইয়ে আমারে শেষমেষ এক কিস্সেন বিটার সাথে বিয়ে দিয়ে দেলো! আমি শ্বশুরবাড়ি চাইলে গেলাম!
স্বামীর কতায়, শ্বশুর শাশুড়ির কতায় নতুন কইরে হাসতি লাগলাম! স্বামী মারতি লাগল, শাশুড়ি ভাত দিয়া বন্ধ কইরে দিল! আর খিদের জ্বালায় আমি গলায় বস্তর নিলাম! এহনও আমি হাসি, ম্যালা ম্যালা হাসি, কিন্তু উরা কান্দে ক্যা কেউ কতি পারো?

দুঃখিত!