বাইতুল মুকাদ্দাস নির্মাণের আশ্চর্য ঘটনা
বর্ণনায় হযরত ওয়াহাব বিন মুনাব্বিহ (রহঃ) হযরত সুলাইমান (আঃ) যখন বাইতুল মুকাদ্দাস নির্মাণের মনস্থ করেন, তখন শয়তানদের বলেন, আল্লাহ আমাকে এমন একটি ইমারত নির্মাণের নির্দেশ দিয়েছেন, যার পাথর লোহা দিয়ে কাটা হয়নি।
শয়তানরা বলে, এ কাজের ক্ষমতা কেবলমাত্র একজন শয়তানের আছে, অন্য কারোর নেই। সমুদ্রের এক বিশেষ জায়গায় সে পানি পান করতে আসে।
হযরত সুলাইমান (আঃ) বলেন, তোমরা তাকে গ্রেফতার করার জন্য তার সেই পান করার জায়গায় যাও, এবং সেখানকার পানি বের করে সেখানে মদ ভরে দাও। (সুতরাং তাঁর নির্দেশ পালিত হল।)
এরপর সেই শয়তান পানি খেতে এসে মদের গন্ধ পেল। ফলে নিজের মনে কিছু বলল। কিন্তু খেল না। তারপর তার যখন খুব বেশী পিপাসা লাগল, তখন সে সেই মদ গেল। এবং এভাবে নেশাগ্রস্ত হবার পর তাকে গ্রেফতার করা হল।
ওই শক্তিশালী শয়তান সাধারণ শয়তানের হাতে বন্দী হয়ে আসার সময় রাস্তায় একটি লোককে পেঁয়াজের বদলে রসুন বিক্রি করতে দেখে হেসে ফেলল। তারপর ভবিষ্যদ্বাণী করতে থাকা- এক মহিলার পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় তাকে দেখেও সে হাসল।
ওই শয়তানকে হযরত সুলাইমান (আঃ)-এর পেশ করার সময় রাস্তায় তার দু’বার হাসার কথা বলা হল। হযরত সুলাইমান (আঃ)-এর কারণ জিজ্ঞাসা করলেন। শয়তানটা বলল, আমি প্রথমে যে মানুষের কাছ দিয়ে আসি, সে অসুখ (পেঁয়াজ)-এর বদলে ওষুধ (রসুন) বিক্রি করছিল, তাই আমি হাসছি। তারপর এক মহিলাকে দেখে হেসেছি এজন্য যে, সে নিজে গায়েবের খবর বলছিল, অথচ তার নিচ ধনভাণ্ডার রয়েছে, এ খবর সে জানে না।
হযরত সুলাইমান (আঃ) সেই শয়তানকে বাইতুল মুকাদ্দাস নির্মাণের বিষয়ে বিনা লোহায় কাটা-পাথরের কথা বললেন। সে তখন সাধারণ শয়তানদের বলল- বহু লোকেও তুলতে পারবে না এমন একটি বিশালাকার হাড়ি তোমরা নিয়ে এসো। তারপর হাঁড়িটা শকুনের বাচ্চার উপর রাখো। সুতরাং শয়তানরা অমন বিশালাকায় হাঁড়ি নিয়ে এল বটে, কিন্তু শকুনের বাচ্চার কাছে পৌঁছাবার আগেই সে আকাশের মহাশুন্যে উড়ে গেল।
এরপর ফের সে এল। সেই সময় তার চঞ্চুতে একটা কাঠ ধরা ছিল। কাঠটা হাঁড়ির উপর রাখল। ফলে হাঁড়িটা দু’টুকরো হয়ে গেল। অমনি সেই শকুন শাবক কাঠটার দিকে ছাপিয়ে পড়ল। কিন্তু তার আগেই সেই শয়তান কাঠটা হাতিয়ে নিল। এবং সেই কাঠ দিয়ে বাইতুল মুকাদ্দাস নির্মাণকারীরা পাথর কেটেছিল।