প্রাচীন ভারতের কথা। বশিষ্ঠ নামে একজন ঋষি ছিলেন। তিনি ছিলেন ব্রহ্মর্ষি। অনেক সুখ্যাতি তাঁর। সবাই তাঁকে শ্রদ্ধা করে। ভক্তি করে। তাঁর কথা সবাই সম্মানের সঙ্গে মান্য করে। তখন বিশ্বামিত্র নামে একজন ক্ষত্রিয় রাজা ছিলেন। সাধনা করে তিনি রাজর্ষি হয়েছিলেন। কিন্তু তিনি এতে সন্তুষ্ট নন। তিনি ব্রহ্মর্ষি হতে চান। বশিষ্ঠের মতো ব্রহ্মর্ষি। কিন্তু ব্রহ্মর্ষি হওয়া এত সহজ ব্যাপার নয়। তিনি মনে মনে বশিষ্ঠকে হিংসা করতেন।
একদিন অনেক লোকজন নিয়ে বিশ্বামিত্র বশিষ্ঠের আশ্রমে গেলেন। গিয়ে বললেন, তাঁরা খুব ক্ষুধার্ত ও তৃষ্ণার্ত। হঠাৎ এত লোকের ক্ষুধা তৃষ্ণা মেটানো কঠিন কাজ। কিন্তু বশিষ্ঠের জন্য কঠিন হলো না। তাঁর আশ্রমে ছিল একটি কামধেনু। তার কাছে চাইতেই পর্যাপ্ত পরিমান খাবার ও পানীয় পাওয়া গেল। বশিষ্ঠ তা দিয়ে বিশ্বামিত্র ও তাঁর লোকদের ক্ষুধা তৃষ্ণা মেটালেন।
এসব দেখে বিশ্বামিত্রের হিংসা আরও বেড়ে গেল। তিনি বশিষ্ঠের কাছে কামধেনুটি দাবি করলেন। কিন্তু কামধেনুটি বশিষ্ঠের অত্যন্ত প্রিয়। তাই তিনি বিশ্বামিত্রের প্রস্তাবে সসম্মত হলেন না। বিশ্বামিত্র এতে ক্ষেপে গলেন। তিনি জোর করে ধেনুটি নিতে চাইলেন। তখন কামধেনু থেকে অনেক যোদ্ধার সৃষ্টি হলো। তিনি বশিষ্ঠের কাছে ক্ষমা চাইলেন। বশিষ্ঠ তাঁকে ক্ষমা করে দিলেন এবং আশীর্বাদ করলেন ব্রহ্মর্ষি হওয়ার। বশিষ্ঠের আশীর্বাদে বিশ্বামিত্র ব্রহ্মর্ষি হয়েছিলেন। এ ঘটনায় বশিষ্ঠের অহিংসা ধর্ম সুন্দরভাবে প্রকাশ পেল।