বনি ইসরাইলদের বাছুর পূজা- ১ম পর্ব

ছামেরী নামক হযরত মুছা (আঃ) এর ভাগ্নে সম্পর্কের যে আত্নীয়কে ফেরাউনের রাজত্বকালে এক কিবতীর সাথে ঝগড়ার সময় কিবতীকে হত্যা করে তাকে পালিয়ে যেতে বলেছিল। সে ছামেরী বড় হয়ে স্বর্ণকারের কাজ শিখে। হযরত মুছা (আঃ) এর নীল নদ পার হওয়ার সময় ছামেরী তার সঙ্গে ছিল না। সে মিশরে আত্নগোপন করে ছিল।

হযরত মুছা (আঃ) যখন তার ভাই হযরত হারুন (আঃ) এর উপর উম্মতের দেখাশুনার দায়িত্ব অর্পণ করে সত্তর জন সঙ্গী নিয়ে তুর পাহাড়ে চলে যান। তখন ছামেরী গোপনে স্বর্ন গলিয়ে একটি বাছুরের মুর্তি তৈরি করে। বাছুর তৈরির ক্ষেত্রে সে যথেষ্ঠ পরিশ্রম করেছে। যাতে অতি সুন্দর ও নিখুত একটি বাছুরের প্রকৃতি তৈরি করতে সক্ষম হয়। ছামেরীর  বয়স অল্প হলেও সে যথেষ্ঠ বিচক্ষণ ও সাহসী ছিল। যখন ফেরাউন কয়েক লক্ষ সৈন্য নিয়ে হযরত মুছা (আঃ) এর পিছনে ধাওয়া করে তখন ছামেরী অন্য লোকের সাথে পিছনে পিছনে অবস্থা দেখার জন্য অগ্রসর হয়।

আল্লাহ তায়ালার  কুদরত মানুষের জ্ঞানের লাগালের বহির্ভুত বস্তু। বাছুর মূর্তির মুখের ভিতর  মাটি রেখে দেওয়ার পর সে হাম্বা হাম্বা করে ডেকে উঠল। তখন ছামেরী আনন্দে আত্নহারা হয়ে মহল্লায় ছুটল এবং বনি ইসরাইদের ডেকে বলল, আমার ঘরে আল্লাহ তায়ালা অবস্থান নিয়েছেন। তিনি স্বর্ণের বাছুরের আকৃতিতে অবতরণ করেছেন। তোমরা একে একে সেজদা কর এবং জীবনের সর্বত্র ক্ষেতে মঙ্গল করে নাও। ছামেরী আরও বলল, আল্লাহ তায়ালা আমাকে আরও জানিয়েছে, মুছা সে সমস্ত সঙ্গীদের নিয়ে তুর পাহাড়ে গিয়েছে সে সমস্ত সঙ্গীরা কেউ বেঁচে নেই।

 ফেরাউন নীল নদে যাত্রা মুহুর্তে ছামেরী দেখল একজন সাদা পোশাক পরিহিত ব্যক্তি একটি অশ্বপৃষ্টে ব্যস্তভাবে চতুর্দিকে ছুটাছুটি করছে। এ ব্যক্তির অশ্বের খুর যেখানে মাটি স্পর্শ করেছে, সেখানে সঙ্গে সঙ্গে মাটিতে তাজা ঘাস গজিয়েছে। তখন ছামেরী মনে করল এ ব্যক্তিটি মানুষ নয়। সে নিশ্চয় আল্লাহর ফেরেস্তা। তখন সে ঘাসের নিচ থেকে কিছু মাটি সংগ্রহ করে রেখে দিল। ছামেরী বাছুরের স্বর্ণ মূর্তি তৈরি করার পর তার মুখের মধ্যে অশ্বক্ষুরের মাটি রেখে দিল।

হযরত মুছা (আঃ) নির্বিঘ্নে বাড়ি ফিরতে পারে কি না সন্দেহ। অতত্রব তার প্রতি যে তৌরাত কিতাব নাজিলের যে কথা ছিল, তা হযরত মুছা (আঃ) এর একটি ধোঁকাবাজি কথা ছিল। তোমরা সে আশার বানির দিকে তাকিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ও না। তাড়াতাড়ি এই স্বর্ণ মণ্ডিত খোদার নিকট এসে আশীষ গ্রহন কর এবং তার প্রতি ঈমান এনে নাজাতের পথ পরিষ্কার কর।

 ছামেরীর কথা শুনে বনি ইসরাইলদের কিছু লোক সেখানে এসে দেখল অতি সুন্দর আকৃতির একটু  বাছুর সজোরে ডাকছে। বাছুরের নিকট মানুষ যা কামনা করে তা পুরণ হয়। যে ব্যক্তি বাছুর এর নিকট দোয়া চায় বাছুর দুটো ডাক দিলেই তা কবুল হয়েছে বলে ধরে নেওয়া হয়।

সূত্রঃ কুরআনের শ্রেষ্ঠ কাহিনী

বনি ইসরাইলদের বাছুর পূজা- ২য় পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক করুন  

You may also like...

দুঃখিত, কপি করবেন না।