ফেরেশতাদের সাথে আলোচনা
কোন এক বুজুর্গ শায়েখ বলেন, একবার আমি দরবেশদের একটি কাফেলার সাথে মক্কা শরীফে বসা ছিলাম। আমাদের মধ্যে একজন হাশেমীও ছিল। হঠাৎ তার অবস্থা এমন হল যে, সে অজ্ঞান হয়ে পড়ে গেল। কিছু সময় পর আবার জ্ঞান এলে সে বলল, এতক্ষণ আমি যা কিছু দেখেছি তোমরাও কি তা দেখেছ? আমরা বললাম, আমরা তো কিছুই দেখতে পাইনি। সে বলল, আমি দেখতে পেলাম ফেরেশতারা এহরাম বেঁধে বাইতুল্লাহ শরীফ তাওয়াফ করছেন।
আমি তাদের নিকট গিয়ে জিজ্ঞেস করলাম, তোমাদের পরিচয় কি? তারা বলল, আমরা ফেরেশতা। আমি জিজ্ঞেস করলাম, আল্লাহ পাককে তোমরা কীভাবে ভালবাস? ফেরেশতারা উত্তর দিল, আল্লাহর প্রতি আমাদের ভালোবাসা গোপন। আর তোমাদের ভালবাসা প্রকাশ্য। উক্ত বুজুর্গ অন্য এক ঘটনার বর্ণনা করে বলেন, একবার আমি গভীর রাতে বাইতুল মোকাদ্দাসের গম্বুজের নীচে দাঁড়িয়ে নামায আদায় করছিলাম। এমন সময় মসজিদের গম্বুজ ফাঁক হয়ে দুদিকে স্বরে গেল।
আমি নামায শেষে উপরের দিকে তাকিয়ে দেখলাম, আকাশ হতে একদল মাখলুক মসজিদে প্রবেশ করে জিকির করতে লাগল। তাদের সংখ্যা একমাত্র আল্লাহ তায়ালা ব্যতিত অন্য কারো পক্ষে বলা সম্ভব নয়। আমার ডান পাশে যিনি বসা ছিলেন রাতের শেষ অংশে তিনি আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, তুমি এখানে কি জন্য এসেছ? আমি বললাম, আমার ইচ্ছা সারা রাত এখানে ইবাদত করে কাটিয়ে দেব।
কিন্তু আপনাদের পরিচয় কি? তিনি বললেন, আমরা ফেরেশতা। ইতোপূর্বে আমরা বাইতুল মামুরে প্রবেশ করেছিলাম। কিয়ামতের পূর্বে আমরা আর সেখানে প্রবেশ করব না। প্রতিদিন সেখানে সত্তর হাজার ফেরেশতা প্রবেশ করে পুনরায় বের হয়ে আসে। আর একবার যারা সেখানে পরবেশ করে বের হয়ে আসে দ্বিতীয়বার আর সেখানে প্রবেশ করে না।
বাইতুল মামুর হতে বের হয়ে ফেরশতারা বাইতুল মোকাদ্দাসে গমন করেন। অতঃপর তথা হতে মক্কায় গমন করে সাতবার বাইতুল্লাহর তাওয়াফ করার পর মদিনা শরীফ গিয়ে রাসূলুল্লাহর (সাঃ) রওজায় সালাম করেন। বর্ণনাকারী বলেন, কিছুক্ষণ পর তারা আবার সেই গম্বুজের পথে বের হয়ে গেলে পুনরায় তা এমনভাবে মিশে গেল যে, তাতে ফাটলের কোন চিহ্ন ও রইল না।
অন্য এক বুজুর্গ বলেন, একবার নূর পাহাড়ে আমার পায়ের পাতায় একটি হাড় ঢুকে গেল। বহু চেষ্টা করেও তা বের করা গেল না। কয়েকদিন পর আমার পা ফুলে প্রচণ্ড ব্যথা হতে লাগল। এক সময় অসহ্য ব্যথায় অস্থির হয়ে আমি একটি গাছের নীচে বসে পড়লাম। কিছুক্ষণ পর আমার চোখে ঘুম নেমে এল। অতঃপর আমি ঘুমের মধ্যে কিসের যেন গন্ধ পেয়ে জেগে উঠে দেখলাম, একটি কালা সাপ আমার পায়ের ক্ষতস্থান থকে পুঁজ ও দূষিত রক্ত টেনে বের করছে।
ঐ দৃশ্য দেখে আমি আমার চোখ বন্ধ করে পড়ে থাকলাম। কিছুক্ষণ পর আমি অনুভব করলাম, আমার ক্ষত স্থানের রক্ত পূজ বের হওয়াতে ব্যথা কমে গেছে এবং সাপ এখন ক্ষত স্থান থেকে হাড় বের করছে। কিছুক্ষণ পর সাপ চলে গেল। অতঃপর আমি উঠে বসলাম। তখন আমার পায়ের ব্যথা সম্পুর্ণ উপশম হয়ে আমি সুস্থবোধ করছিলাম।