ফেরারি প্রেতাত্না

সিঙ্গাপুরের বাসিন্দা ক্লার্কের ঘটনা এটি । ঘটনাটা তার ভাষায় তুলে ধরলাম ।
“ভূত প্রেতের ব্যাপারে আমার বড় ভাইয়ের কখনোই খুব একটা আগ্রহ ছিল না । এসবে ওরবিশ্বাস ছিল বলেও মনে হয়না । তারপরই তার জীবনে ঘটল অস্বাভাবিক একটা ঘটনা ।
বছর দুয়েক আগের কথা । একদিনবাসায় ফিরল সে হতবিহ্বল চেহারা নিয়ে । কপালে চিন্তাররেখা…
রাতে খাবার সময় এমনকি তারপরেও তাকে বেশ বিষন্ন দেখালো । ঘুমানোর আগে আমি আর বোন জানতে চাইলাম, এমন চিন্তিত দেখাচ্ছে কেন তাকে… শুরুতে কিছু বলতে চাইল না। তবে পরের দিন বলল,কেন যেন মনে হচ্ছে দুটো চোখতার মাথার পিছনে সেঁটে আছে । তারসবকিছুর ওপরই নজ র রাখছে ওই দুটো চোখ ।
আমি আর আমার বোন হেসে উড়িয়েদিলাম কথাটা । বিষয়টা নিয়ে বেশ কিছুটা সময় ঠাট্টামস্করাও করলাম ।
তবে অল্প সময়ের মধ্যেই বুঝেগেলাম এটা মোটেই হেলাফেলা করার মত ব্যাপার নয় ।
আমার ভাই সবসময়ই বেশ ঠান্ডামাথার মানুষ । তবে এই সপ্তাহে সে কেমন উদ্ভট আচরনকরতেলাগল। ঘুমের মধ্যে বিড়বিড় করে কী যেন বলে, আর সারারাত এপাশ-ওপাশ করে । কখনোকখনো তার ঘুমের মধ্যে কথাবলার শব্দে আমাদেরও ঘুম ভেঙ্গে যায় । ধীরে ধীরেওজন হারাতেলাগল সে । এমন কি, কেউ তার সঙ্গে কথা বললেও সেদিকে নজর থাকেনা ।
খুব চিন্তায় পড়ে গেলাম আমরা।
তার এক বন্ধুকে বিষয়টা জানালাম । বাসায় এসে একবার ওর দিকে তাকিয়েই বলল এটা মোটেই সাধারন কোন ব্যাপার মনে হচ্ছেনা । ভাইয়ের বন্ধুতাকে দুজন লোকের কাছে নিয়ে গেল ।
তাদের পরিবার যেকোন অস্বাভাবিক সমস্যার মুখোমুখি হলেই এই দুজনের সাথে যোগাযোগ করাহয় । তাদেরই একজন ধরতে পারলেন ভাইয়ার সমস্যাটা ।
যেদিন ভাইয়ার প্রথম মনে হয়েছে দুটো চোখ তার পিছনে সেঁটে আছে সেদিনই ঘটনাটি ঘটে ।
কাজ থেকে ফিরবার সময় একটা অন্ত্যেষ্টিক্রি ­য়া অনুষ্ঠানের পাশ দিয়ে আসছিল সে ।
এসময় সে এমন একটা পথে পা দিয়ে বসে যে পথটা একটা আত্মা অন্য আরেকটা জগতে যাবারজন্য ব্যবহার করে । দুর্ভাগ্যক্রমে ­ ওই একই সময়ই অন্য পৃথিবীতে যাবার পথে ছিল ওটা । ভাইয়াতার যাওয়ার পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। পুরোপুরি বিভ্রান্ত হয়ে আত্মাটা তার শরীরে ঢুকে পড়ে।
এখন সে পথ হারিয়েছে । আত্মাটা তার যাত্রাটা শেষ করতে চায় আর ভাইয়াও চায় মুক্তি । এরএকটাই সমাধান…
ভাইয়াকে আবার সেই অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া অনুষ্ঠানের জায়গাটার কাছে গিয়ে পথটার ঠিক যেখানে পাদিয়েছে সেটা খুঁজে বের করে সেখানে দাঁড়াতে হবে । আর আত্মাটাও সেক্ষেত্রে খুশি মনে তাকেছেড়ে যাবে ।
ভাইয়া লোকটির পরামর্শটা মেনে নিল । তারপর যেখানে ঘটনাটি ঘটেছে সেখানে ফিরে গেল ।সৌভা গ্য ক্রমে যে জায়গায় আত্মাটা তার ওপর সওয়ার হয়েছিল বলে মনে হয়েছেসেই জায়গাখুঁজেও পেল ।
পরে সে আমাদের বলেছে, ঠিক সেই মুহুর্তে তার দারুন শান্তি লাগে । আর মনে হয় কী একটা বোঝা শরীর থেকে সরে গেছে ।

"আলোর পথ"-এ প্রকাশিত গল্পসমূহ ও লেখনী মূলত পাঠক, শুভানুধ্যায়ী এবং সম্মানিত অবদানকারীদের কাছ থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। এই কনটেন্টগুলোর উপর আমরা কোনো মেধাসত্ত্ব (copyright) দাবি করি না। যদি কোনো গল্প, ছবি বা তথ্যের কপিরাইট সংক্রান্ত বিষয়ে আপনার প্রশ্ন, সংশয় বা আপত্তি থাকে, তাহলে অনুগ্রহ করে আমাদের যোগাযোগ পৃষ্ঠায় যোগাযোগ করুন। আমরা যথাযথ আইনানুগ পদ্ধতিতে বিষয়টি পর্যালোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

সম্পর্কিত পোস্ট

দুঃখিত!