ফেরাউনের পরাজয়ের পর – পর্ব ১
জাদু প্রদর্শনের প্রতিযোগিতায় পরাজয় বরণের পর ফেরাউন শহরে প্রত্যাবর্তন করল। আজ তার চিন্তার অবদি নেই। সে এতদিন নিজেকে বড় খোদা বলে দাবী করলেও সে কি , সে সম্পর্কে সে ভাল করেই জানে।
সে যে এতদিন মিসরবাসীকে প্রতারণা করে আসছিল তা তার অনবহিত নয়। হযরত মূসা (আ)- এর কাছে পরাজয়ের ফলে তার পরিকল্পিত মিশন এখন দারুন হুমকির সম্মুখীন। বিবেকবান লোকেরা তার এতদিনের প্রতারণা আঁচ করতে পেরে তাদের বাকী আছে তারাই ফিরাউনের শেষ সম্বল।
কিন্তু জাদু প্রদর্শনের প্রতিযোগিতায় তার পরাজয় এবং তার প্রাণ প্রিয় স্ত্রী আছিয়ার ঈমান গ্রহন প্রভৃতি তাকে চরম লজ্জায় ফেলে দিয়েছে। মানুষের সামনে এখন তার মুখ দেখানো মুশকিল হয়ে পড়েছে। এখন সে খুব একটা বাইরে বের হচ্ছে না এদিকে তার সভাসদরা দেখল যে, প্রতিযোগিতার ক্ষেত্রে পরাজয় তাদের প্রভুর মুখে ছাই ফেলেছে।
এ লজ্জার কারণে সে এখন বাইরে বের হচ্ছে না। তারা পরামর্শ করে সিদ্ধান্ত নিল যে, ফেরাউনকে ব্যাপারটি এমনভাবে বুঝাতে হবে যাতে তার বর্তমান মানসীকতার পরিবর্তন হয় এবং হযরত মূসা (আ)কে দোষী সাব্যস্ত করে তার অতীত পরাজয়ের প্রতিশোধ গ্রহনের জন্য উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহন করে।
তাই তারা সকলে সম্মিলিত ভাবে দরবারে উপস্থিত হয়ে তাদের পরাজয় সম্পর্কে আলোচনা করল। এবং হযরত মূসা (আ) -এর বিরুদ্ধে প্রতিশোধ গ্রহণের জন্য এবং তাঁর দ্বারা ফেরাউনের প্রভুত্বের বিরোধিতা করার গতিকে স্তব্ধ করে দেয়ার জন্য ফেরাউনকে উদ্দেশ্য করে বলল কোরআনের ভাষায়-
তবে কি আপনি মূসা এবং তার গোত্রের লোকদেরকে এমনি এমনি ছেড়ে দিবেন যে, তারা আপনাকে ও আপনার প্রভুদেরকে পরিত্যাগ করে আমাদের দেশে ফিতনা ফাসাদ করবে? (সূরা-আরাফ)
ফেরাউনের সামনে তার পরিষদ কর্তৃক অনেক কঠিন প্রশ্ন উপস্থাপিত হয়েছে। তাদের দাবী হল যে, এও অবস্থায় হযরত মূসা (আ)-কে কিছুতেই ছেড়ে দেয়া যায় না। বরং যে কোন মূল্যের বিনীময়ে তার গতিরোধ করতে হবে। আর এজন্য ফেরাউনের উচিত এখনই মূসা (আ) সম্পর্কে উপযুক্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করা। ফেরাউন নিজেও তা অনুভব করেছে। কিন্তু তার অন্তরে হযরত মূসা ও হযরত হারুন (আ)-এর ভয় এত বেশি প্রভাব বিস্তার করছিল যে, সে তাদের সম্পর্কে একটি কথাও মুখে আনতে রাযি নয়।