
এক রাতে এক আগন্তুক এসে আমাকে জানালো, “পাহাড়ের ওপাশে একটি পরিবার রয়েছে, যারা গত চার দিন ধরে অভুক্ত।”
আমি তাদের জন্য কিছু খাবার নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলাম। সেখানে পৌঁছে দেখি, তিনটি ক্ষুধার্ত শিশুর মুখ, যাদের চোখেমুখে ক্লান্তি বা অবসাদ নেই, কিন্তু ছিল ক্ষুধার এক নিদারুণ কষ্টের প্রতিচ্ছবি।
আমি তাদের মাকে খাবারগুলো দিয়ে বললাম, “শিশুদের নিয়ে খাবার খেয়ে নিন।”
কিন্তু তিনি খাবারগুলো দুই ভাগে ভাগ করলেন। এরপর একভাগ নিজের আচলে করে নিয়ে বাইরে চলে গেলেন। আমি অবাক হয়ে ভাবতে লাগলাম, তিনি কী করতে যাচ্ছেন?
কিছুক্ষণ পর ফিরে এলে আমি জিজ্ঞেস করলাম, “খাবারগুলো আপনি কী করলেন?”
তিনি খুব সহজভাবে উত্তর দিলেন—
“পাশের বাড়ির পরিবারটিও গত চার দিন ধরে অভুক্ত ছিল, তাই তাদের দিয়ে এলাম।”
আমি অবাক হলাম না, কারণ আমি জানি, গরিব মানুষগুলো সচ্ছল মানুষের তুলনায় বেশি দুঃখকষ্ট অনুভব করতে জানে।
কিন্তু যা আমাকে অবাক করল, তা হলো— এই মানুষটি কীভাবে তার প্রতিবেশীর খবরও জানতেন!
কারণ, যখন কেউ অভাব-অনটনে থাকে, তখন সাধারণত নিজের দুঃখের ভারেই ক্লান্ত হয়ে পড়ে, পাশের মানুষটির দিকে তাকানোর সময় বা ইচ্ছা থাকে না।
কিন্তু এই মানুষটি তার প্রতিবেশীর দুঃখ ভুলে যাননি, এড়িয়ে যাননি। বরং প্রতিবেশীর হক আদায়ে সবার আগে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ ছিলেন।