পুনরায় ফেরআউন প্রাসাদে মূসা (আঃ) – পর্ব ১
মূসার মাতা নিজস্ব প্রয়োজনে একদিন রাজপ্রাসাদে এলে বিবি আছিয়া শিশু মূসাকে তার নিকট নিয়ে আসতে বলেন, যাতে স্বীয় মানসিক অস্থিরতা লাঘব করতে পারেন। সিদ্ধান্ত হল- মূসার মাতা মূসা (আঃ) কে রাজপ্রাসাদে নিয়ে আসবেন।
এজন্য দিনও ধার্য্য হয়। আছিয়া এ উপলক্ষ্যে রাজ কর্মচারীদের প্রতি নির্দেশ জারী করলেন যেন সবাই তাঁর পুত্রের প্রাসাদে প্রত্যাবর্তন উপলক্ষে উপহার উপঢৌকন প্রদানে কার্পণ্য না করে।
তিনি এও জানিয়ে দিলেন, কে তাঁর পুত্রকে কি পরিমাণ সম্মান প্রদর্শন করে এবং উপহার উপঢৌকন দেয়, তিনি নিজে তা তদারকি করবেন। মূসা (আঃ) কে রাজপ্রাসাদে নিয়ে আসার নির্দিষ্ট দিনে রাজধানীময় সাজসাজ রব পড়ে যায়।
সকল কর্মচারীই সম্রাজ্ঞী আছিয়ার নেকদৃষ্টি লাভের আশায় যার যার সাধ্যমত উপহার উপঢৌকন ক্রয়ে নেমে পড়ে। সকলেই ভবিষ্যত যুবরাজের দীর্ঘ জীবন কামনা করে উচ্চ রবে আকাশ বাতাস মুখোরিত করে তোলে।
এটা মিসরবাসীর জন্য এক বিশেষ স্মরণীয় দিন। এ শুভ দিনে তাদের ভাবী সম্রাট রাজপ্রাসাদে আগমন করছেন। নির্দিষ্ট সময়ে মূসার মাতা পুত্রকে নিয়ে রাজপ্রাসাদের প্রবেশ পথ অতিক্রম করছিলেন আর চতুর্দিক থেকে শিশু মূসাকে লক্ষ্য করে উপহার উপঢৌকন পড়তে থাকে।
আছিয়া নিজে ও স্নেহের নিধিকে বিশেষ মূল্যবান উপঢৌকনরাজি প্রদান করেন। এ উপলক্ষ্যে প্রদত্ত সব উপহারই একত্র করে মূসার মাতাকে দেয়া হয়।
আছিয়ার আনন্দের সীমা পরিসীমা নেই। তিনি স্নেহের ধন মূসাকে কোলে করে স্বামী ফেরআউনকে দেখাতে নিয়ে যায়। আছিয়া ভাবলেন, যদিও তার পীড়াপীড়িতে বা অন্য কোন অজ্ঞাত কারণে ফেরআউন এ শিশু সম্পর্কে কোন উচ্চবাচ্য করছে না কিন্তু মনের দিক থেকে সে এ শিশুর প্রতি প্রসন্ন নয়।
তবে কেউ যদি কারও সংস্পর্শ আসে, বেশি বেশি দেখা সাক্ষাত হয়, মেলামেশা হয়, তবে সাধারণত মনের কালিমা ইতস্ততা অপ্রসন্নতা দূরীভূত হয়ে যাওয়াটাই মানব ধর্ম, মানব প্রকৃতি।
এ চিন্তা করে তিনি শিশুকে ফেরআউনের সম্মুখে উপস্থিত করলেন যে, সেও মানুষ কখনও কখনও তার থেকে মানবিক দুর্বলতার বহিঃপ্রকাশও ঘটছে। তাই সম্মুখে নিলে শিশুর উজ্বল মায়াবী মুখশ্রী দেখে ফেরআউনের মানসিক অপ্রসন্নতা ধীরে ধীরে অপসারিত হবে।
পুনরায় ফেরআউন প্রাসাদে মূসা (আঃ)- দ্বিতীয় পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক করুন